‘যুদ্ধের মতো অবস্থা শুরু হয়ে যায়’
‘হলি আর্টিজানের গোলাগুলির খবর শুনে আমি সেখানে যায়। এ সময় বিকট শব্দে একটা বোমা বিস্ফোরিত হয়। আমি সেখানে থাকাবস্থায় দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। বোমার শব্দে বিল্ডিংগুলো কেঁপে উঠে। তখন কে কী করবো ঠিক পাচ্ছিলাম না। যুদ্ধের মতো অবস্থা শুরু হয়ে যায়।’
বুধবার (২৩ জানুয়ারি) গুলশানের হলি আর্টিজান মামলায় আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে রেস্তোঁরার মালিক সাদাত মেহেদী তার জবানবন্দিতে এ কথাগুলো বলেন।
ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালত সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
এদিন সাদাত মেহেদী ছাড়া আরও তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তারা হলেন সাদাত হোসেনের স্ত্রী গৃহকর্মী সামিরা আহম্মেদ, লেকভিউ ক্লিনিকের ক্যান্টিনের ম্যানেজার আব্দুল হাকিম ও হলি আর্টিজানের বাবুর্চি আকাশ খান।
সাদাত মেহেদী তার জবানবন্দিতে বলেন, ‘২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার সেজাদের ফোন পেয়ে সাথে সাথে আমি হলি আর্টিজানে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে পুলিশের গাড়ি দেখতে পাই।’
তিনি বলেন, ‘আমি সেখানে যাওয়ার পর বিকট শব্দে একটা বোমা বিস্ফোরিত হয়। বোমায় আহত দুইজন পুলিশ অফিসারকে হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর গোলাগুলি শুরু হয়।’
২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে (স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ) হামলা চালানো হয়। এতে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা।
এর আগে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। গ্রেনেড হামলায় ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ নিহত হন।
পরদিন সকালে যৌথ বাহিনী কমান্ডো অভিযান চালায়। এতে ছয় হামলাকারী নিহত হয়।
২০১৬ সালের ৪ জুলাই নিহত পাঁচ জঙ্গিসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে গুলশান থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
ঘটনায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে জীবিত আটজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলায় করাগারে থাকা ছয় আসামি হলেন রাজীব গান্ধী, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাতকাটা সোহেল মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাশেদ ইসলাম ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ ও মামুনুর রশীদ ।
আসামি শরিফুল ইসলাম বর্তমানে পলাতক আছেন।