রনি নেশাগ্রস্ত থাকায় মৃত্যুদণ্ডের বদলে যাবজ্জীবন
জোড়া খুনের অপরাধে আসামি বখতিয়ার আলম রনির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হয়। কিন্তু ঘটনার সময় রনির শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হলো। রনির রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালতে এ মন্তব্য করেন।
আদালত রনির রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন, রনির পিস্তলের লাইসেন্স ছিলো না। পিস্তল দিয়ে গুলি করলে লোক মারা যাবার বিষয়টি তিনি জানতেন। কিন্তু রনি মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন না। ওই সময় তার মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় তিনি বিষন্নতায় ভুগছিলেন। আর গুলি করার সময় তিনি মদ্যপানে নেশাগ্রস্ত ছিলেন। এ ঘটনায় রনির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হয়। কিন্তু ঘটনার সময় রনির শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হলো।
বুধবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল ঈমামের আদালত এ রায় প্রদান করেন। মামলায় রায়ে রনিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
রনি দশম সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিনু খানের ছেলে।
রায় শোনানের জন্য রনিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে তাকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার আগে চার্জশিটের ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
মামলাটি ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন ছিল। ওই আদালত ২০১৮ সালের ৮ মে মামলাটি রায়ে জন্য দিন ধার্য করেছিলেন। কিন্তু ওই দিন রায় ঘোষণা না করে বিচারক পুনরায় যুক্তিতর্ক শোনার জন্য দিন ধার্য করেন। পরবর্তীতের আসামি পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটি দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলী করা হয়।
ওই আদালত যুক্তিতর্ক গ্রহণ করে গত ১৫ জানুয়ারি রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছিলেন। কিন্তু ওইদিনও বিচারক রায় ঘোষণার তারিখ পিছিয়ে ৩০ জানুয়ারি ধার্য করেছিলেন।
২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল দিনগত রাতে তিন বন্ধুসহ রনি মদ্যপ অবস্থায় বাসায় ফেরার পথে নিউইস্কাটন রোডে জ্যামে পড়লে তার পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। গুলির শব্দে মুহূর্তে রাস্তা ফাঁকা হয়ে গেলে তারা গাড়ি চালিয়ে চলে যান।
এ সময় রনির ছোড়া গুলিতে দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক ইয়াকুব আলী ও জনৈক রিকশাচালক আ. হাকিম মারা যান।