থানা হাজতে হত্যা: তিন পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা চলবে
ইশতিয়াক হোসেন জনি নামের এক ব্যক্তিকে থানায় এনে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে পল্লবী থানার তৎকালীন তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে করা মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে ওই মামলার কার্যক্রমে ইতোপূর্বে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা চলতে আর কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
মামলার দুই আসামি জামিন বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান। আর বাদীপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম ও বদিউজ্জামান তপাদার।
হাইকোর্টে মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করেন পল্লবী থানার তৎকালীন এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান।
২০১৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে ইশতিয়াকের ভাই ইমতিয়াজ পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় আসামিরা হলেন, পল্লবী থানার তৎকালীন এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ, আবদুল বাতেন, রাশেদ, শোভন কুমার সাহা ও কনস্টেবল নজরুল, সোর্স সুমন ও রাসেল।
আদালত মামলাটির বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দেন। বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম মারুফ হোসেন তদন্ত প্রতিবেদন দেন। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে পাঁচজনকে অভিযুক্ত এবং পাঁচজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। তদন্তকালে পুলিশের এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামানকে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন পল্লবী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান (জাহিদ), এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান (মিন্টু) এবং পুলিশের সোর্স সুমন ও রাশেদ। আসামিরা এখন জামিনে আছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী বদিউজ্জামান তপাদার।
অভিযোগ গঠনের পর মামলাটি বাতিল চেয়ে পল্লবী থানার তৎকালীন এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর শুনানি নিয়ে গত বছরের মার্চে হাইকোর্ট রুল দিয়ে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেন।
বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্ট রুল খারিজ করে মামলার কার্যক্রমে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছেন। ফলে পুলিশের ওই কর্মকর্তাসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রম চলতে আইনগত কোনো বাধা নেই। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।