রিফাতকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যায় মর্মাহত হাইকোর্ট
বরগুনায় স্ত্রীর সামনে শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মর্মাহত হয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছেন। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশারকে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুর ২ টার মধ্যে হাইকোর্টকে আবগত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সকালে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ঘটনাটি হাইকোর্টর নজরে আনেন। আদালতে তিনি বলেন, ‘যতটুকু জেনেছি, এখনো মামলা হয়নি। এমন অপরাধের ঘটনার বিচার যদি না হয়, তাহলে আরও এমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। তবে বিচার হবে আশা করছি।’
এ সময় অপর এক আইনজীবী আদালতকে জানান, রিফাত শরীফকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ১২ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন নিহত যুবকের বাবা দুলাল শরীফ। মামলার পরপরই চন্দন নামে একজনকে আটকও করেছে পুলিশ।
আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রকাশ্যে রাস্তায় এভাবে কুপিয়ে হত্যা করল, অথচ স্ত্রী ছাড়া তাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসল না। সবাই পাশে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখল আর ভিডিও করল। এটা আমাদের জনগণের ব্যর্থতা। দেশের মানুষ তো এমন ছিল না। সামাজিকতা এখন কোথায় দাঁড়িয়েছে?’
আদালত আরও বলেন, ‘এ হত্যার ঘটনায় তার আত্মীয়-স্বজন ও দেশবাসীর সঙ্গে আমরাও মর্মাহত।’
এরপর আদালত রিফাত শরীফকে তার স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: আপ্রাণ চেষ্টা করেও স্বামীকে বাঁচাতে পারলেন না স্ত্রী
ঘাতক নয়নকে আটকাতে বরগুনার মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট
উল্লেখ্য, বুধবার (২৬ জুন) সকালে রিফাত তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে নিয়ে বরগুনা সরকারি কলেজে যান। কলেজ থেকে ফেরার পথে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ চার যুবক রিফাতের ওপর হামলা চালান। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এতে বাধা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেন স্ত্রী আয়েশা। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামাতে পারছিলেন না তিনি। এরপর দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: যে কারণে খুন করা হয় রিফাতকে
গুরুতর আহতাবস্থায় রিফাতকে প্রথমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ভর্তির এক ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।