রাজস্ব ফাঁকির ৭ হাজার মামলা উচ্চ আদালতে

আবুল খায়ের গ্রুপের ২০০ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি



নাজমুল আহসান রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
আবুল খায়ের গ্রুপের লোগো

আবুল খায়ের গ্রুপের লোগো

  • Font increase
  • Font Decrease

নামীদামি প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকির ৭ হাজার ১৫২ মামলা বিচারাধীন রয়েছে উচ্চ আদালতে। এরমধ্যে রয়েছে শুল্ক (কাস্টমস) ফাঁকির ২৫২৮ টি আপিল এবং মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ফাঁকির ৭৬০টি আপিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট রয়েছে ৩ হাজার ৮৬৪টি।

উচ্চ আদালতে এসব মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে ধীরগতিতে। গত জুন মাসে নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ১৩টি মামলা। চলতি বছরের মে মাসে ৮টি কাস্টমস ও একটি ভ্যাট মামলা এবং জুন মাসে তিনটি কাস্টমস এবং একটি ভ্যাট মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে।

তবে মামলাগুলোর বিপরীতে সঠিক আর্থিক পরিমাণের তথ্য পাওয়া না গেলেও আনুমানিক ৪ হাজার কোটি টাকা আর্থিক বিষয় জড়িত বলে জানা গেছে।

এক আবুল খায়ের গ্রুপের ৫৪ আপিলের বিপরীতেই ২০০ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকির বিরুদ্ধে আপিল করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৫৪ টি আপিলের বিপরীতে ২০০ কোটি শুল্ক ফাঁকির আপিল করেছে চট্টগ্রামের কাস্টমস কমিশনার।

জানা গেছে, আবুল খায়ের গ্রুপ, হোলসিম সিমেন্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেড, বাটারফ্লাই মাকেটিং লিমিটেড, মংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরি লিমিটেড, এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেড, হোটেল কস্তুরি প্রাইভেট লিমিটেডসহ দেশের নামী কোম্পানিগুলোর আপিল ও রিট বিচারাধীন রয়েছে।

বিচারাধীন মামলার মধ্যে ২০১১ থেকে ২০১৫ ও ২০১৬ সালের আপিলের সংখ্যা বেশি। মাঝে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের প্রায় মামলা হয়েছে। চলতি বছর দায়ের করা মামলা এখনো শুনানির জন্য কার্য তালিকায় আসেনি।

রাষ্ট্রপক্ষে শুল্ক ও ভ্যাট আপিল এবং রিট মামলাকে আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রের আর্থিক সম্পক জড়িত থাকায় অ্যাটর্নি  জেনারেল অফিস সব সময় শুল্ক ও ভ্যাটের মামলায় গুরুত্ব দিচ্ছে। একারণে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের আপিল ও রিট শুনানির অপেক্ষায় নেই বললেই চলে। এরআগের মামলাগুলোর পর্যায়ক্রমে শুনানির জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তিনি জানান, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বা আপিলকারী পক্ষ যোগাযোগ করলে আমরা তড়িৎ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

বর্তমানে হাইকোর্টের দুটি দ্বৈত বেঞ্চে এবং দুটি একক বেঞ্চে কাস্টমস আপিল ও রিটে আবেদনের শুনানি হচ্ছে। চলতি বছরে মে মাসে ২৫২৫ টি কাস্টমস আপিল এবং ৭৫৩টি ভ্যাট আপিল বিচারাধীন ছিল। মে ও জুনের এক মাসের তুলনামূলক পরিসংখ্যানে দেখা যায় ৩টি কাস্টমস আপিল এবং ৭টি ভ্যাট আপিল যোগ হয়েছে পরবর্তী মাসে।

আপিল আবেদন থেকে দেখা যায়, চীন থেকে ‘কেলন’ ব্যান্ডের রেফ্রিজারেটর আমদানির বিষয়ে ২০১৫ সালে আপিল করেন বাটারফ্লাই মার্কেটিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তার আগে ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল রাজধানীর কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল বাটার ফ্লাই মার্কেটিংয়ের করা আপিল খারিজ করে দেয়।

বাটারফ্লাই মার্কেটিং ‘কেলন’ ব্র্যান্ডের ৩১২ ইউনিট রেফ্রিজারেটর আমদানি করে ২০১০ সালে। সঙ্গে খুচরা যন্ত্রাংশও ছিল। মূল্য ১৫ হাজার ৬০০ ডলার। প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিক সম্পন্ন করে এগুলো আমদানি পর কমলাপুর আইসিডি থেকে এসব পণ্য খালাস করতে ২০১১ সালের ২১ মাচ বিল জমা দেয় কোম্পানিটি। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পণ্য সরেজমিন পরিদর্শন করে মান, পরিমাণ ও পণ্যের কোড যাচাই করে।

আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৫ লাখ ৯৩ হাজার ১০৮ টাকার শুল্ক আরোপ করে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে বেসিক ব্যাংকের গ্যারান্টি দেখিয়ে পণ্য খালাস করে বাটারফ্লাই। পণ্য খালাসের পর তারা কাস্টমস (আপিল) কমিশনারের কাছে আবেদন করে। আবেদনে কোম্পানিটি দাবি করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বেআইনিভাবে পণ্যেও মূল্য নির্ধারণ করেছে। কোন যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি ছাড়া এবং আইন বর্হিভূতভাবে এ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। চালানের ভিত্তিতে মূল্য পুননির্ধারণের জন্য বাটারফ্লাই আবেদন করে। ২০১১ সালের ১১ অক্টোবর কাস্টমস কমিশনার তাদের আবেদন খারিজ করে দেয়। এর বিরুদ্ধে আপিল করা হলে ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালেও তা বহাল থাকে।

হোলসিম সিমেন্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেড তাদের ৫০ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে। ঢাকার কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি দেওয়া রায়ে ওই জরিমানা বহাল থাকলে তারা এ চ্যালেঞ্জ করে।

সিমেন্ট উৎপাদন আরো বাড়াতে আরেকটি কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক মতিঝিল শাখার মাধ্যমে ভারত থেকে যন্ত্রপাতি আমদানি করে হোলসিম। আমদানিকৃত যন্ত্রপাতির মূল্য এক কোটি ৫৩ লাখ ৫ হাজার ৬৭৯ ডলার।

এলসি খোলার পর ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি হোলসিম আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি আমদানিতে রেয়াত পেতে আবেদন করে এনবিআরে। ১৭ জানুয়ারি রেয়াতের আবেদনে সাড়া দিয়ে একটি চিঠি ইস্যু করে এনবিআর। যন্ত্রপাতি আসার পর নারায়নগঞ্জ বন্দরে তা খালাসের জন্য বিল জমা দেওয়া হলে এইচএস কোডের ভিত্তিতে পণ্য খালাসের অনুমতি দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

খালাসের পর ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ১ কোটি ৯৬ লাখ ৫২ হাজার ১৩৩ টাকা শুল্ক দাবি করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় হোলসিমকে। কেন আপিলকারীর বিরুদ্ধে শাস্তি আরোপ করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয় নোটিশে। পরে আইন লঙ্ঘনের দায়ে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আপিল করলে সেখানেও তা বহাল থাকে।

আবুল খায়ের স্টিল প্রোডাক্টস লিমিটেড জাপান থেকে প্রাইম কোয়ালিটির ইলেকট্রোলাইট টিন প্লেট আমদানি করে ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। পণ্য খালাসের জন্য বিল জমা দেওয়ার পর প্রতি টন ২৭০ ডলার মূল্যের পরিবর্তে ৩০০ ডলার মূল্য নির্ধারণ করে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরপর পণ্য খালাস করে কাস্টমসের রিভিউ কমিটির কাছে আবেদন করে আবুল খায়ের স্টিল। ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট রিভিউ কমিটি অতিরিক্ত নেওয়া অর্থ আবুল খায়ের স্টিলকে ফেরত দিতে কাস্টমসকে নির্দেশ দেয়। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালেও তা বহাল থাকে ট্রাইব্যুনালের এ রায়ের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আপিল করেন কাস্টমস কমিশনার (আমদানি)।

রাজধানীর পুরানা পল্টনের হোটেল কস্তুরি প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আহমেদের ভ্যাট ফাঁকির একটি আপিল বিচারাধীন রয়েছে হাইকোর্টে। ৯ লাখ ২৬ হাজার ৫৩৭ টাকার ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে শুল্ক গোয়েন্দা ইউনিটের কর ধার্যের বিরুদ্ধে তিনি আবেদন করলে ২০১৮ সালের ৪ জুন কাস্টমস কমিশনার তা খারিজ করে দেন। এর বিরুদ্ধে তিনি আপিল করলে চলতি বছর ২৫ মে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে কাস্টমস কমিশনারের আদেশ বহাল থাকে। ট্রাইব্যুনালের এ রায়ের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৪ জুলাই হোটেল কস্তুরির মালিক কাওসার আহমেদ এ আপিল দায়ের করেন।

সেনা কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠান মংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরি লিমিটেডের ক্লিংকার আমদানির বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল করা হয়েছে হাইকোর্টে। ক্লিংকার আমদানিতে ১ শতাংশের পরিবর্তে কাস্টমস ২ শতাংশ শুল্ক মূল্য নির্ধারণ করলে তাতে অসন্তুষ্ট মংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরি আইনি লড়াইয়ে নামে।

   

সিলেটে যুক্তরাজ্য ফেরত বৃদ্ধা হত্যা: ১ জনের মৃত্যুদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
সিলেটে যুক্তরাজ্য ফেরত বৃদ্ধা হত্যা: ১ জনের মৃত্যুদণ্ড

সিলেটে যুক্তরাজ্য ফেরত বৃদ্ধা হত্যা: ১ জনের মৃত্যুদণ্ড

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটের ওসমানীনগরে যুক্তরাজ্য ফেরত বৃদ্ধা রহিমা বেগম ওরফে আমিনা বেগম (৬০) হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা প্রথম আদালতের বিচারক জজ মো.ইব্রাহিম মিয়া এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল জলিল ওরফে কালু একই উপজেলার নগরীকাপন গ্রামের মৃত আব্দুল কাছিমের ছেলে। পাশাপাশি রায়ে আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন- সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন ।

মামলার সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনার এক বছর আগে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেন রহিমা বেগম ওরফে আমিনা বেগম। সন্তানরা যুক্তরাজ্যে বসবাস করায় তিনি ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার নিজ বাসায় একা থাকতেন। তার ভাই মামলার বাদী আব্দুল কাদির ও আব্দুল খালিক বোনের দেখাশোনা করতেন। ২০২০ সালের ২৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে রহিমা বেগম ওরফে আমিনা বেগমের সঙ্গে সর্বশেষ ফোনে কথা বলেন তার ভাই আব্দুল কাদির। এরপর ফোন বন্ধ পেয়ে ৩০ জুলাই বাদীর ছোট ভাই আব্দুল খালিক তার ছেলে আব্দুস সামাদকে পাঠালে ঘরের কলাপসিবল গেট তালাবদ্ধ দেখে বাড়িতে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে না পেয়ে ফের রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসায় গিয়ে কলিং বেল দিলেও কোনো সাড়া শব্দ মেলেনি। ঘটনাটি যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ছেলেমেয়েদের জানানোর হয়। এরপর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে বাসার ভেতরে ডাইনিং রুমের বাথরুমে গলাকাটা ও মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় রহিমা বেগম ওরফে আমিনা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশের ধারণা, ওই বছরের ২৮ জুলাই থেকে বিকেল ৩টা থেকে ৩০ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যে যেকোনো সময় তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই ওসমানীনগরের ছোট বিরাই গ্রামের মৃত মন্তাজ উল্লাহর ছেলে আব্দুল কাদির বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে এক আগস্ট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তদন্তকালে পুলিশ নিহতের পার্শ্ববর্তী বাসার জলিল ওরফে কালু মিয়াকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী নারীর লুণ্ঠিত মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে গ্রেফতার করে। পরে স্বেচ্ছায় তিনি আদালতে হত্যায় নিজেকে জড়িয়ে জবানবন্দি দেয়। তার দেখানো মতে, বসতঘর থেকে হত্যার আলামত সংগ্রহ করে পুলিশ।

এ ঘটনায় জলিল ওরফে কালুকে অভিযুক্ত করে ২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমানীনগর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম।

মামলাটি এই আদালতে বিচারের জন্য ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করে আসামির নামে বিচারক কার্য শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানিতে ২১ সাক্ষীর ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।

;

যৌন নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে মালিককে খুন, যুবকের ৬ বছর কারাদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁওয়ে যৌন নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে মালিককে খুনের ঘটনায় কর্মচারীকে ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞা এ রায় দেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ।

দণ্ডিত মো. ইউনুছ (৩৫) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মধ্যম সরফভাটা গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১২ জুন নগরীর চান্দগাঁও বহদ্দারহাট এলাকায় হক মার্কেটে নিজের সেলাই মেশিন ওয়ার্কশপে খুন হন কামাল উদ্দিন। পরদিন সকালে কামালের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কামাল উদ্দিনের ছেলে মো. সাদেক চান্দগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে কর্মচারী ইউনুছকে গ্রেফতার করে। ইউনুছ খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে ইউনুছ জানান, মালিক কামাল তাকে নিয়মিত যৌন নির্যাতন করতেন। ১২ জুন রাতে কামাল তাকে ওয়ার্কশপে নিয়ে তিনবার যৌন নির্যাতন করেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ইউনুছ কামালকে ধাক্কা দেন। কামাল আবার তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে তার গায়ে সেলাই মেশিন ছুড়ে মারেন। কিন্তু সেটা ইউনুছের শরীরে লাগেনি। এরপর তিনি ইউনুছকে গলাটিপে খুন করতে চান। পরে ইউনুছ কামালের গালে কামড় দেন এবং গলা চেপে ধরলে শ্বাসরোধ হয়ে কামাল মারা যান।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ জানান, মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে ২০১০ সালের ৩ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি ইউনুছের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত দণ্ডবিধির ৩০২ থেকে ৩০৪ ধারায় রূপান্তর করে এ রায় দেন। আসামি ইউনুছ জামিনে গিয়ে পলাতক আছেন। তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

;

ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাদকসেবীর কারাদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের তারাগঞ্জে মাদক সেবনের অভিযোগে নুর হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫শ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল রানা এ কারাদণ্ড প্রদান করেন।

মাদকসেবী নুর হোসেন উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের জিগাতলা এলাকার কপার উদ্দীনের ছেলে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের জিগাতলা এলাকার অভিযান চালায় জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সদস্যরা। এসময় নিজ বাড়িতে মাদক সেবনের সময় হাতেনাতে নুর হোসেনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কাছে সোপর্দ করে তারা। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে নুর হোসেনকে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫শ টাকা জরিমানা করা হয়।

এলাকাবাসী অভিযোগ নুর হোসেন প্রতিনিয়ত মাদক সেবন করে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট করছে এবং যুবসমাজকে নষ্ট করছে। এর আগেও মাদক কারবারির দায়ে সে কারাগারে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও রুবেল রানা বলেন, আটক ব্যক্তিকে মাদক সেবনের দায়ে কারাদণ্ড এবং জরিমানা করা হয়েছে। মাদক প্রতিরোধে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।

;

বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশিত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করেছেন।’

মো. আশফাকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৩ সালে জেলা আদালত ও ১৯৮৫ সালে হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। পরে ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর পর ২০০৫ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।

আশফাকুল ইসলাম ১৯৫৯ সালের ১৫ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা এ কে এম নুরুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আর মাতা জাহানারা আরজু একুশে পদক প্রাপ্ত কবি ও সাহিত্যিক।

;