নিরপরাধ জামসু জেলে, অপরাধী জামসু জর্ডানে!
পুলিশের ভুলে আসামি না হয়েও শুধু নামের মিল থাকায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার উদিয়ারপাড়ার সিরাজুল হকের ছেলে মো. জামসু মিয়া (৩৭)। গত বছরের ৮ আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন তিনি।
২০১৫ সালের ১১ জুন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জনৈকা মানহুরা খাতুন (২৬) তার স্বামী কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার সিরাজ মিয়ার ছেলে মো. জামসু মিয়া সাগরের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দায়ের করেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি আসামির অনুপস্থিতিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মাদ মিল্লাত হোসেন জামসুকে ১ বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন।
রায়ের সময় আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেন আদালত। সাজা পরোয়ানা আসামির স্থায়ী ঠিকানা কিশোরগঞ্জের ইটনা থানায় পাঠানো হয়।
ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গত ২৫ জুলাই ওই থানার এসআই শামছুল হাবিবকে পরোয়ানা তামিলের দায়িত্ব দেন। গত ৭ আগস্ট নামের মিল থাকায় ওই এসআই কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার সিরাজুল হকের ছেলে মো. জামসু মিয়াকে গ্রেফতার করে পর দিন ৮ আগস্ট তাকে কিশোরগঞ্জের কোর্টে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।
গত ২২ আগস্ট ভুক্তভোগী মো. জামসু মিয়ার আইনজীবী তানজির সিদ্দিকী রিয়াদ ভুল আসামি গ্রেফতারের বিষয়টি উল্লেখ করে রায় প্রদানকারী আদালতে জামিনের আবেদন করেন।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মাদ মিল্লাত হোসেন ভুক্তভোগী আসামির উপস্থিতিতে ওই দরখাস্ত শুনানির জন্য ২৫ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
রোববার (২৫ আগস্ট) আসামির উপস্থিতিতে জামিন শুনানি হয়।
ভুক্তভোগী জামসুর আইনজীবী তানজির সিদ্দিকী রিয়াদ শুনানিতে ভুল আসামি গ্রেফতারের বিষয়টি আদালতে উল্লেখ করে জামিন চান। সাজাপ্রাপ্ত পলাতক জামসু মিয়া সাগরের আইনজীবী এসএম গোলাম ছোবহানও বিষয়টি সত্য বলে আদালতকে জানান।
কিন্তু বিচারক মোহাম্মাদ মিল্লাত হোসেন নিরপরাধ জামসুকে জামিন না দিয়ে মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি আর গেপ্তারকৃত আসামি আলাদা ব্যক্তি কিনা সে বিষয়ে তদন্ত করে আগামি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
নিরপরাধ জামসুর আইনজীবী তানজির সিদ্দিকী রিয়াদ বলেন, পুলিশকে ভুল আগামি গ্রেফতারের বিষয়টি জানানো হলেও তারা বিষয়টি তদন্ত করেনি, আসামিও ছাড়েনি। শুধু তাদের ভুলের কারণেই একজন নিরাপরাধ মানুষ গত ৮ আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন। অথচ প্রকৃত আসামি জামসু মিয়া বর্তমানে জর্ডানে আছেন বলে শুনেছি।
সাজাপ্রাপ্ত পলাতক জামসুর আইনজীবী এসএম গোলাম ছোবহান বলেন, আমি আমার মামলার আসামিকে চিনি। যে আসামিকে পুলিশ ধরে এনেছে তিনি আমার মামলার আসামি নন।