রিফাত হত্যা: হাইকোর্টে মিন্নির জামিন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। জামিনে থাকা অবস্থায় মিন্নি তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের জিম্মায় থাকবে। তবে এ সময়ে মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবে না। গণমাধ্যমের সামনে কথা বললে তার জামিন বাতিল হবে।

মামলার তদন্ত পর্যায়ে গণমাধ্যমে কতটুকু প্রচার বা প্রকাশ করা যাবে সে বিষয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ স্থায়ী জামিনের এ রায় দেন। রায়ের সময় মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালতে মিন্নির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন। বিশেষজ্ঞ হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী মিন্নির শুনানিতে অংশ নেন। মিন্নির আইনজীবীকে সহায়তা করেন আইনজীবী জেসমিন সুলতানা ও জামিউল হক ফয়সাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসাইন বাপ্পী।

রায়ে আদালত জামিন অংশে বলেছেন, এজাহারে আসামির নাম উল্লেখ না থাকা, গ্রেফতার পূর্ব অব্দি দীর্ঘ সময়ে স্থানীয় পুলিশ লাইনসে আটক এবং গ্রেফতারের প্রক্রিয়া, আদালতে হাজির করে রিমান্ড শুনানির সময়ে আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ না পাওয়া, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামির দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক লিপিবদ্ধ করার পূর্বেই আসামির দোষ স্বীকার সম্পর্কিত জেলা পুলিশ সুপারের বক্তব্য, তদন্তকারী কর্মকর্তার মতে মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। সুতরাং আসামিকে কর্তৃক তদন্ত প্রভাবিত করার কোনো সুযোগ না থাকায় সর্বোপরি ফৌজদারী কার্যবিধির ৪৯৭ ধারার ব্যতিক্রম অর্থাৎ আসামি একজন মহিলা। এ বিষয়গুলো বিবেচনা করে আমরা তাকে জামিন দেওয়া ন্যায়সঙ্গত মনে করছি।  জারি করা রুলটি আমরা যথাযথ ঘোষণা করলাম রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন,  আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি রিমান্ডে থাকা অবস্থায় বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার  মারুফ হোসেন গণমাধ্যমের মুখোমুখী হন। মিন্নি দোষ স্বীকার করেছেন মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা শুধু অযাচিত অনাকাঙ্খিত নয় বরং ন্যায় নীতি সুষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের পরিপন্থী।

আদালত বলেন, পরিস্থিতি ও বাস্তবতা যাই হোক না কেন কোন পুলিশ সুপারের মত দায়িত্বশীল পদে থেকে এ ধরনের বক্তব্য জনমনে নানান প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে। একদিকে যেমন জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেন তেমনি তিনি তার দায়ীত্বশালতা ও পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন, তা দুঃখজনক এবং হতাশাজনক। উচ্চ পর্যায়ের একজন পুলিশ কর্মকর্তার নিকট হতে এ ধরনের কাজ প্রত্যাশিত এবং কাম্য নয়। ভবিষ্যতে দায়িত্ব পালনে আরও সতর্কতা ও পেশাদারিত্বের পরিচায় দেবেন আদালতের এটাই কাম্য।

মামলাটি তদন্ত কাজ যেহেতু এখনও চলমান সে কারণে এই মুহূর্তে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আদালত বিরত থাকছে। তবে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক সময়মত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

প্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখ করা সঙ্গত হবে যে, ইদানিং প্রায়শ লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সংগঠিত আলোচিত ঘটনার তদন্তকালীন সময়ে পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তদের বিষয়ে এবং তদন্ত সম্পর্কে প্রেস ব্রিফিং করা হয়ে থাকে। গ্রেফারকৃত সন্দেহভাজন বা অভিযুক্তদের কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই গণমাধ্যমে সামনে হাজির করা হয়, যা অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করে। যদিও বা এ বিষয়ে অত্র আদালত একটি রায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

পর্যবেক্ষণে আরো বলা হয়, অনেক পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্ত বিষয়ে অতি উৎসাহ নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য দিতে দেখা যায়। একথা আমাদের সকলেকেই মনে রাখতে হবে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণিত না হচ্ছে, ততক্ষণ বলা যাবে না সে অপরাধী বা অপরাধ করেছে। তদন্ত বা বিচার পর্যায়ে এমনভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করা উচিত নয় যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধী। সে কারণে মামলার তদন্ত পর্যায়ে তদন্তের অগ্রগতি বা গ্রেফতারকৃতদের বিষয়ে গণমাধ্যমে কতটুকু বিষয় প্রচার বা প্রকাশ করা যাবে সে বিষয়ে একটি নীতিমালা করা বাঞ্ছনীয়। এই নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রচারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ প্রদান করা হলো।

বুধবার (২৮ আগস্ট) মিন্নিকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলের ওপর শুনানি হয় হাইকোর্টে। শুনানিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর মামলার নথি নিয়ে হাজির হন। শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছিল।

এর আগে ২০ আগস্ট মিন্নিকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ২৮ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে সিডি (কেস ডকেট) নিয়ে হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়। এছাড়া মিন্নির দোষ স্বীকার নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে পুলিশ সুপারকে (এসপি) লিখিত ব্যাখ্যা দিতেও বলা হয়।

গত ৮ আগস্ট বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন দ্বৈত বেঞ্চ মিন্নির জামিন না দিয়ে রুল জারি করতে চাইলে আইনজীবীরা আবেদন ফেরত নেন। এরপর গত ১৮ আগস্ট হাইকোর্টের রায় প্রদানকারী বেঞ্চে এটি দাখিল করা হয়।

২৬ জুন প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে কোপাতে থাকে সন্ত্রাসীরা। স্ত্রী মিন্নি রিফাতকে রক্ষার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ২ জুলাই ভোরে প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।

১৬ জুলাই সকালে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনার পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রিফাত হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ওই দিন রাত ৯টার দিকে মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।

   

বাবুলকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় খুন হন মিতু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্ত্রী মাহমুদা খানম ওরফে মিতুকে নিয়ে কক্সবাজারের একটি হোটেলে ওঠেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। পাশেই আরেকটি রুমে ওঠেন ভারতীয় এক নারী। সেই নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় পরপর দুবার বাবুলকে দেখে ফেলেন মিতু। আর এজন্যই মানসিক অত্যাচার এবং পরবর্তীতে পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করা হয়।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে এসব তথ্য দেন মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ।

শাহেদা মোশাররফ বলেন, ২০০২ সালের ২৬ এপ্রিল বাবুল আক্তারের সঙ্গে আমার বড় মেয়ে মাহমুদা খানম মিতুর বিয়ে হয়। তখন বাবুল আক্তার বেকার ছিল। বিবাহের পর একেবারে শুরু থেকে তাদের সম্পর্ক তেমন ভালো ছিল না, মোটামুটি ছিল। পরে পুলিশে যোগদান করেন। এরপর কক্সবাজারে এসপি (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) হিসেবে বদলি হয়। সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন বাবুল।

তিনি আরও বলেন, একদিন বাবুল আক্তার মিতুকে নিয়ে কক্সবাজারের একটি হোটেলে ওঠে। পাশের রুমে ওই নারীও ওঠে। ওই নারীর রুমে বাবুল আক্তারকে আপত্তিকর অবস্থায় মিতু দেখে ফেলে। তখন মিতু তাকে জিজ্ঞেস করে, সে এখানে কি করছে? বাবুল মিতুকে বলে বিদেশে যাবার জন্য ল্যাপটপে কাজ করছে। তাদের দুজনকে এ অবস্থায় দেখে মিতুর খুব খারাপ লাগলো। সে কিছুক্ষণ ওখানে ছিল। বাচ্চারা একা থাকায় মিতু তাদের রুমে চলে আসে। বাচ্চারা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর সেও ঘুমিয়ে পড়ে।

গভীর রাতে আবারও আপত্তিকর অবস্থায় দেখার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, রাত ৩টার দিকে মিতুর ঘুম ভেঙে যায়। তখনও বাবুল আক্তার মিতুর রুমে ছিলেন না। মিতু আবার ওই নারীর রুমে গেলে তাদের দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। মিতু রুমে এসে কেঁদে কেঁদে আমাকে ফোন দেয়। তখন আমি তাকে বলি, তুই চলে আয়। মিতু তখন বলে, আমার ছেলে-মেয়েরা আমাকে খারাপ মনে করবে। তাই আমি আল্লাহর ওপর ভরসা রাখি।

সাক্ষ্য দেওয়ার সময় শাহেদা মোশাররফ বলেন, বাবুল আক্তার বিদেশে (মিশনে) থাকার সময় তিন-চারবার বাংলাদেশে আসেন। তবে দেশে ফিরলেও তিনি বাসায় অর্থাৎ মিতু কিংবা ছেলেমেয়েদের কাছে যাননি। মিশন শেষ করে তিনি চীনে চলে যান। সেখানে বসেই বাবুল মিতুকে মারার পরিকল্পনা করেন।

মিতুর একটি ব্যবসা ছিল। ব্যবসার তিন লাখ টাকা দিয়ে মিতুকে খুন করে। মিতু মারা যাওয়ার পর বাবুল আক্তার আমাদের বাসায় ওঠে। ছয়মাস আমাদের বাসায় ছিল সে। সেখানে বসে সে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ২৪ জুন (২০১৬) বাবুল আক্তারকে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর বাবুল সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে আসে। আমি তখন তাকে জিজ্ঞেস করি, চাকরি ছাড়লে কেন? তখন সে বলে, মিতু খুন হওয়ার কারণে আমাকে চাকরি ছাড়তে হয়েছে। আমি তাকে বলি, তোমার চাকরি ছাড়ার বিষয় কি মিতুর খুনের বিচারের জন্য?, বলেন তিনি।

শাহেদা মোশাররফ বলেন, বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করার জন্য মুসাকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে অস্ত্র কিনে দেয়। একথা বলেছে মুসার স্ত্রী। মুসার স্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, তুমি মিতুকে খুন করেছ? তখন মুসা তার স্ত্রীকে বলে, আমি খুন না করলে বাবুল আক্তার আমাকে ক্রসফায়ার দেবে। বাবুল আক্তার আমাদের বলেছিল, মিতুর খুনের আসামিরা গ্রেফতার হয়েছে। আমি ক্রসফায়ার দিতে বলেছি।

শাহেদা আরও বলেন, আসামি ওয়াসিম, আনোয়ার গ্রেফতার হয়েছিল। এর কিছুদিন পরেই ভোলা ধরা পড়ে। গ্রেফতার হওয়ার পর সে আদালতে জবানবন্দি দেয়- বাবুল আক্তারের নির্দেশেই মিতুকে খুন করেছে মুসা। মিতু মারা যাওয়ার দেড় মাস পর সে যে বাসায় ছিল ওখানে মিলাদ পড়ানোর জন্য আমরা চট্টগ্রাম আসি। এর কিছুদিন পর আসামি কালু ও শাহজাহান গ্রেফতার হয়। আমরা চট্টগ্রাম আসার পরে অবস্থা দেখে মনে হয়েছে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করেছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও নিজেই মিতু হত্যার মামলা করল। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমার স্বামীকে বলে, আপনারা বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০২১ সালের ১২ মে মিতুর বাবা বাবুল আক্তারকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করলেন।’

মারা যাওয়ার ১৫ দিন আগে (২০১৭ সালে) মিতুর মা শাহেদাকে ফোন করেন বাবুল আক্তারের মা। ফোন করে তিনি বলেন, বেয়াইন, মিতুকে আমার ছেলে (বাবুল) খুন করেছে। তাকে আপনি মাফ করে দেন। তখন আমি তাকে (বাবুলের মা) বলি, বাবুল মরলে কি এ কথা আপনি বলতেন? এসব আমি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে বলেছি।

এদিন দুপুর ১২টায় চাঞ্চল্যকর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পর প্রথমে সাক্ষ্য দেন অবসরে যাওয়া পুলিশ পরিদর্শক মহিউদ্দিন মাহমুদ। যিনি ঘটনার সময় নগরের পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে ছিলেন। এরপর সাক্ষ্য দিতে কাঠগড়ায় দাঁড়ান শাহেদা মোশাররফ।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসপি বাবুল ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই চট্টগ্রাম থেকে বদলি হন। তিনি ঢাকায় কর্মস্থলে যোগ দিতে যাওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

সাড়ে তিন বছর তদন্ত করেও ডিবি পুলিশ কোন কূলকিনারা করতে না পারায় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর ২০২১ সালের মে মাসে পিবিআই জানায়, স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল বাবুল আক্তারের ‘পরিকল্পনায়’। এজন্য খুনিদের ‘লোক মারফত তিন লাখ টাকাও দিয়েছিলেন’ বাবুল।

পরে বাবুলের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর মিতুর বাবা আরেকটি মামলা করেন। তবে সেই মামলা আদালতে না টেকার পর বাবুলের মামলাটিই পুনরুজ্জীবিত হয়। ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। তাতে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। ওই বছরের ১০ অক্টোবর সেই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ওই বছরের ৯ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম সাক্ষী হিসেবে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন সাক্ষ্য দেন।

;

কেএনএফ'র সাথে সম্পৃক্ততা, রুমা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ৭ জন কারাগারে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবানে রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদে হামলা, টাকা-অস্ত্র লুটের ঘটনায় কেএনএফ'র সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে রুমা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ভান মুন নুয়ান বমসহ ৭ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বান্দরবান চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। বান্দরবানের কোর্ট ইন্সপেক্টর একে ফজলুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আসামিরা হলেন, ভান মুন নুয়ান বম (৩৩), লাল নুন নোয়াম (৬৮), লাল দাভিদ বম (৪২), চমলিয়ান বম (৫৬), লাল পেক লিয়ান (৩২), লাল মিন বম (৫৬), ভান বিয়াক লিয়ান বম (২৩)। তারা সবাই রুমার মুনলাই পাড়ার বাসিন্দা।

এরআগে সোমবার (২২ এপ্রিল) রুমার মুনলাই পাড়া থেকে তাদের গ্রেফতার করে যৌথ বাহিনী।

এ পর্যন্ত কেএনএফ সদস্য সন্দেহে মোট ৭৮ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৩ জন নারী রয়েছেন।

এদিকে, বান্দরবানের রুমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ভান মুন নোয়াম বমকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হ‌য়ে‌ছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অং ছাইং উ পুলু ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হো‌সেন মানিকের যৌথ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি পুলু মারমা বলেন, কেএনএফের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে, এজন্য তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

;

পদে থেকেই উপজেলায় প্রার্থী হতে পারবেন ইউপি চেয়ারম্যানরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পদত্যাগ না করেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. শাহদীন মালিক।

কুষ্টিয়া ও সিলেটের দুটি উপজেলা নির্বাচনের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আদেশ দিয়েছেন আদালত।

;

কুমিল্লায় পারভেজ হত্যা: ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যা মামলায় একই উপজেলার কালিবাজার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সেকান্দার আলীসহ ১৪ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে কুমিল্লার আদালত।

সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক নাসরিন জাহান এ রায় দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন- বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শরিফুল ইসলাম। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ১১ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন ও ৩ পলাতক রয়েছেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার ধনুয়াখালী এলাকার মৃত হাজী মো. আব্দুর রহমানের ছেলে মো. সেকান্দর আলী (৬৪), একই এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে মো. শাহীন (৩৯), সৈয়দপুর এলাকার আব্দুস সাত্তার এর ছেলে মো. সাদ্দাম হোসেন (৩২), কমলাপুর এলাকার মো. মোজাম্মেল হকের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (২১), যশপুর এলাকার মৃত আহমেদ আলীর ছেলে মফিজ ভান্ডারী, কমলাপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার মো. জয়নাল মাস্টারের ছেলে মো. কায়সার (৩২), কমলাপুর এলাকার মৃত মনিরের ছেলে মো. রিয়াজ (৩৩), মনশাসন এলাকার শফিক মেম্বার এর ছেলে বিল্লাল, কমলাপুর এলাকার মৃত আব্দুর রহমান এর ছেলে কামাল হোসেন, কালির বাজার ইউনিয়নের আবদুল ওহেদ এর ছেলে মো. ইব্রাহীম খলিল (৪৫), রায়চোঁ এলাকার ইমদাদুল হকের ছেলে মেহেদী হাসান, সৈয়দপুর এলাকার মৃত হাজী সিরাজুল ইসলামের ছেলে জয়নাল আবেদীন, বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের মৃত হারুন অর রশিদের ছেলে আব্দুল কাদের, নারায়নসার এলাকার মৃত আশ্রাব আলীর ছেলে আনোয়ার।

মামলার তথ্যমতে, ২০২০ সালের ১০ জুন কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার কালির বাজার ইউনিয়নের কমলাপুর বাজারের দক্ষিণ পাশে কবরস্থান সংলগ্ন বাগানে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা পারভেজকে নির্মমভাবে হত্যা করে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান সেকান্দর আলী এবং তার বাহিনীর ক্যাডারেরা।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. শরিফুল ইসলাম জানান, এই চাঞ্চল্যকর পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে এজাহারে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করে। এই ঘটনায় চারজন আসামির ১৬৪ ধারা জবানবন্দি ও ৩১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর আদালত ১৪ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। রায়ের সময় ১৪ জন আসামির মধ্যে ১১ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন বাকী ৩ জন আসামি পলাতক রয়েছেন।

;