বুশরা বিবিকে টয়লেট ক্লিনার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরান খানের
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান দাবি করেছেন, তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে টয়লেট ক্লিনার মিশ্রিত খাবার খাওয়ানো হয়েছিল।
শনিবার (২০ এপ্রিল) পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে ১৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের দুর্নীতির রেফারেন্সের শুনানির সময় ইমরান খান বিচারক নাসির জাভেদ রানাকে জানান, আদালত কক্ষে অতিরিক্ত দেওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে, যা একটি বন্ধ আদালতের পরিবেশ তৈরি করেছে।
শওকত খানুম হাসপাতালের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. আসিম ইউসুফ শিফা ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে বুশরা বিবির পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে জেল প্রশাসন পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (পিআইএমএস) হাসপাতালে পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে অনড় বলেও জানান ইমরান খান।
তিনি আদালতকে জানান, বুশরা বিবির খাবারে টয়লেট ক্লিনার মেশানো হয়েছে। ফলে প্রতিদিনের পেট জ্বালার সঙ্গে সঙ্গে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে।
আদালত শুনানি চলাকালীন ইমরানকে সংবাদ সম্মেলন করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিলে তার জবাবে খান বলেছিলেন যে তার বক্তব্যগুলো ভুলভাবে উদ্ধৃত হয়েছে এবং তিনি সেগুলো স্পষ্ট করার জন্য সাংবাদিকদের সাথে জড়িত ছিলেন।
শুনানির পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়ে আদালত শালীনতার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
গাজার রাফাহ শহরে ইসরায়েলের বিমান হামলা, নিহত ১০
গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফাহ শহরের একটি আবাসিক বাড়িতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
শনিবার (২০ এপ্রিল) এমন হামলার খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।
এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনী দ্বিতীয় দিনের জন্য অধিকৃত পশ্চিম তীরের তুলকারেমের নুর শামস শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালিয়েছে। এতে একজন কিশোর সহ কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।
ইসরায়েলি বাহিনী রাফাহ সংলগ্ন এলাকায় আরও সৈন্য মোতায়েন করেছে এবং জেলার পূর্বাঞ্চলে কৃষি জমি ধ্বংস করেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩৪ হাজার ০৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৬ হাজার ৯০১ জন। অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলের এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়েছেন।
মিয়ানমার-থাই সীমান্তে ভয়াবহ লড়াই চলছে
থাইল্যান্ডের সীমান্তের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র মায়াওয়াদ্দির কাছে মিয়ানমারের সেনা এবং সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ আবার শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
নগদ সংকটে পড়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জন্য এই মায়াওয়াদ্দি একটি বড় বাণিজ্য পয়েন্ট বলে জানা গেছে।
মিয়ানমারের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মুখপাত্র এবং থাই সেনাবাহিনী এই খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেছে, এক সপ্তাহ আপেক্ষিক শান্ত থাকার পরে শনিবার (২০ এপ্রিল) উভয় পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের একটি সামরিক অভ্যুত্থানে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকে সংঘাতে জর্জরিত হয়েছে মিয়ানমার।
একটি আঞ্চলিক ব্লক মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
জান্তা বিরোধী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) অনুসারে, চলতি মাসের গোড়ার দিকে মিয়ানমারের বাণিজ্য কেন্দ্র মায়াওয়াদ্দির চারপাশে ভয়ঙ্কর লড়াই শুরু হয় এবং দেশটির সেনাবাহিনী শহরে তাদের অবস্থান থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়।
তখন কিছু সেনা মায়াওয়াদ্দির সঙ্গে থাই শহর মায়ে সোটের সঙ্গে সংযোগকারী একটি সেতুর নীচে আশ্রয় নিয়েছিল।
কেএনইউ মুখপাত্র পাদোহ সো টাও নী এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন যে, গ্রুপটি মায়াওয়াদ্দিতে জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
শনিবার সকালে সীমান্তে অবস্থানরত একটি থাই সেনা ইউনিট বলেছে, সেতুর নীচে জান্তা সেনাদের লক্ষ্য করে একটি সশস্ত্র বাহিনী হামলা জোরদার করেছে।
রাজমনু স্পেশাল টাস্ক ফোর্স ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, ‘তারা বর্তমানে লড়াইয়ের মধ্যে আছেন। তবে, ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান জানা যায়নি।’
গ্রুপটি বলেছে, তারা সেতুর নীচে আটকা পড়া জান্তা সেনাদের বিরুদ্ধে ড্রোন মোতায়েন করেছে।
থাই টাস্ক ফোর্সও নিশ্চিত করেছে যে, সেতুটি বন্ধ রয়েছে এবং তাদের সেনারা সেতুটির নিজ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।
মায়ে সোট পুলিশ প্রধান পিটায়াকর্ন পেচারাত এএফপিকে বলেছেন, ‘লড়াই তীব্রতর হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় ২০০০ মানুষ থাই সীমান্ত অতিক্রম করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদের খাবার দিয়েছি এবং নিরাপদ স্থানে নিয়েছি।’
ইসরায়েলের ৪ ব্যক্তি ও ২ সংস্থার ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা
ইসরায়েলের চার ব্যক্তি ও দুটি সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গ্লোবাল হিউম্যান রাইটসের আওতায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এসব ব্যক্তি ও সংস্থা ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন ও অমানবিক আচরণের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলো হলো-উগ্র ডানপন্থি ইহুদি আধিপত্যবাদী গোষ্ঠী লেহাভা এবং পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংস কর্মকাণ্ডের জন্য গঠিত উগ্র যুব দল হিলটপ ইয়ুথ। হিলটপ ইয়ুথের দুই নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব মেইর এটিংগার এবং এলিশা ইয়ারেডও ইইউর নিষেধাজ্ঞায় আওতায় রয়েছেন।
এ ছাড়া পশ্চিমতীরের ওয়াদি সিক এবং দেইর জারিরে ২০২১ সাল থেকে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা করার অভিযোগে অভিযুক্ত নেরিয়া বেন পাজি এবং ফিলিস্তিনি গ্রামের বিরুদ্ধে একাধিক সহিংস কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী ইয়িনন লেভির ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইইউ।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা এসব ব্যক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো সদস্য রাষ্ট্র ভ্রমণ বা এসব অঞ্চলে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না।
এমনকি ইউরোপে থাকা তাদের সম্পদও জব্দ করা হতে পারে। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ইউরোপীয় কাউন্সিল ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরে ইসরায়েলিদের দ্বারা জবরদখলের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।