গান্ধীনগরে কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি অমিত শাহ



খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
গুজরাটে বিজেপির লাগানো সাইনবোর্ড/ ছবি: বার্তা২৪

গুজরাটে বিজেপির লাগানো সাইনবোর্ড/ ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

গুজরাটের গান্ধীনগর থেকে: ভারতের চলতি লোকসভা নির্বাচনে গুজরাটের গান্ধীনগরের আসনটি নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য বিভিন্ন অনুষঙ্গ যোগ হওয়ায় আপাত দৃষ্টিতে সহজ আসনটিতে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে পড়তে হতে পারে বলেই মনে হচ্ছে।

প্রবীণ নেতা এলকে আদভানিকে যেভাবে এ আসন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তা আহত করেছে সাধারণ মানুষকে। তাইতো আদভানির কথা শুনে গান্ধীনগরের অনেকের মতো কান্তি লালেরও হৃদয় হাহাকার করে ওঠে। তিনি বলেন, আদভানিজিকে এভাবে সরিয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। তারপরও গান্ধীনগর থেকে অমিত শাহই জিতবেন।

পাশে থাকা বিমল, রাধাকৃষ্ণ, অনিলের মুখেও একই কথা। ভোট কমবে। তবে অমিত শাহই জিতবেন। তাদের মতে, 'বোড়া নেতা সব ইলেকশন জিতেগা' (বড় নেতা সব নির্বাচন জিতবেন)।

এখানে কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী সিজে চ্যাড্ডা ও অমিত শাহের মধ্যে কঠিন লড়াই হবে বলেও মনে করছেন অনেকে।

সিজে চ্যাড্ডা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এখানে ব্যক্তির কোনো লড়াই হচ্ছে না। আপনারা দেখেছেন যে আমাদের সমাবেশে কত মানুষ হচ্ছে। এখানে লড়াই হবে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে।

গান্ধীনগর আসনটি ১৯৯০ সাল থেকেই বিজেপির দখলে। বিজেপি নেতা এল কে আদভানি এখান থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এবার প্রায় জোর করে তাকে বসিয়ে দিয়ে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এ আসনে লড়াই করছেন।

১৯৯০ সালের পর তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার টিএন সেসনের দৃঢ় পদক্ষেপের জন্য কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতার বিরুদ্ধে লড়ে আদভানি এ আসনটিতে জয়ী হতে পেরেছিলেন। সেসন তৎকালীন কংগ্রেস নেতাদের নির্বাচন বিধি ভাঙ্গার জন্য বহিষ্কার করেছিলেন। কংগ্রেস নেতা জনপ্রিয় অভিনেতা রাজেশ খান্নাকেও ছেড়ে কথা বলেননি সেসন।

১৯৯০ সালে লালকৃষ্ণ আদভানি গান্ধীনগর আসনে লড়লেও ১৯৯৬ সালে অটল বিহারি বাজপেয়ি এখানে লড়ে জয়ী হন। বাজপেয়ি অবশ্য গান্ধীনগর ছাড়াও অন্য আসনে লড়েও জয়ী হন।

আদভানির ওপর একটি মামলা থাকায় তিনি সেবার নির্বাচনে নামেননি। এরপর ২০১৪ পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে জয়ী হন আদভানি। গুজরাটের ২৬টি আসনের মধ্যে চলতি নির্বাচনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৯.২১ লাখ ভোটার রয়েছেন গান্ধীনগরে। এতে সাতটি বিধানসভা এলাকা রয়েছে-গান্ধীনগর উত্তর, কালোল, সানন্দ, ঘাতোডিয়া, ভেজালপুর, নারানপুরা এবং সাবরমতী।

২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচটি শহুরে আসন- ঘাতোডিয়া, ভেজালপুর, নারানপুরা, সাবরমতী ও সানন্দ- বিজেপির কাছে গিয়েছিল।

তখন গান্ধীনগর উত্তর ও কালোলের দু’টি আধা-গ্রামীণ আসন কংগ্রেস জিতেছিল। গান্ধীনগর উত্তর আসনের বিধায়ক বর্তমান কংগ্রেস প্রার্থী সিজে চ্যাড্ডা এলাকার ঠাকুর সম্প্রদায়ের অন্তর্গত, যাদের বেশ প্রভাব রয়েছে।

রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি একজন ভেটেরিনারি চিকিৎসক ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন, এ ভোট যুদ্ধ কংগ্রেস-বিজেপির মধ্যে। অমিত শাহ ও তার মধ্যে নয়।


চ্যাড্ডা প্রশ্ন তোলেন, যদি অমিত শাহ বিজেপির জাতীয় সভাপতি হন, তবে কেন তিনি গুজরাটের তথাকথিত নিরাপদ আসনটি বেছে নিলেন? চ্যালেঞ্জিং আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারতেন। আমাদের জাতীয় নেতারা সম্প্রতি গান্ধীনগরে এসেছিলেন এবং গান্ধীনগরে একটি বিশাল সমাবেশ করেছেন। সেখানে লাখ লাখ লোক উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ দেখেই বোঝা গেছে, গুজরাটে বিজেপির পক্ষে সবকিছু ঠিকমত চলছে না। আমরা কঠোর লড়াই করবো।

অন্যদিকে, অমিত শাহ সম্প্রতি বলেছেন, যে গান্ধীনগর আসন থেকে নির্বাচনী লড়াই আমি লড়ছি সেখানে বাজপেয়িজি ও আদভানিজি লড়েছেন এবং জিতেছেন। এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। আমিও এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। এর আগে অমিত শাহ, সারাক্ষেজ আসন থেকে চারবার গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/14/1555239132461.gif
গান্ধীনগরের একটি সড়ক/ছবি: বার্তা২৪.কম

 

২০০৯ সালে দেশের অন্যান্য অংশে বিজেপির পক্ষে প্রচারণা চালাতে জাতীয় দলের নেতা আদভানি ব্যস্ত থাকায় অমিত শাহ তার পক্ষে প্রচারে গান্ধীনগর লোকসভা আসনের দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন।

এ আসনে আপনি কি জয়ী হতে পারবেন এমন প্রশ্নে অমিত শাহ বলেন, বিজেপির জনসমুদ্রের সমাবেশের দিকে তাকান। তারাই বলে দিচ্ছে ফলাফল কি হবে।

এদিকে, গান্ধীনগরে অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, কংগ্রেসের সমর্থকদের একটি অংশ বিশ্বাস করে, দলটি একটি শক্তিশালী প্রার্থীকে টিকিট দিয়েছে। অমিত শাহের নাম ঘোষণার পর কংগ্রেস এখানে শক্তিশালী প্রার্থীর খোঁজার চেষ্টা করে।

কংগ্রেস কর্মী রশিদ খান বলেন, অমিত শাহের বিপক্ষে আমাদের স্থানীয় এমএলএ চ্যাড্ডা একজন শক্তিশালী প্রার্থী। যদিও ১৯৯০ সাল থেকে বিজেপি নেতারা এই আসনে জয়ী হয়ে আসছেন। তবু এখানে প্রাথমিক সমস্যাগুলো হলো বিশুদ্ধ খাবার পানি, সাশ্রয়ী শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং চাকরি। যা প্রভাবিত করবে এবারের নির্বাচনকে।

বিজেপি নেতা ভারত পান্ডে বলেন, এখানে বিজেপির হারার কোনো কারণ নেই। এটি বিজেপির দুর্গ। আমরা জনগণের জন্য উন্নয়নমূলক কাজ করেই যাচ্ছি। জনগণ জানে, পার্টি উন্নয়ন ও নিরাপত্তা দিতে পারে।

   

গাজায় ইসরায়েলি হামলা: মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৩৪ হাজার



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৩৪ হাজারে। গত ২৪ ঘণ্টায় আহত হয়েছেন আরও ৬৩ জন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার এক লাইভ আপডেটে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে ইসরাইলে হামলা চালায় ইরান। এর প্রতিত্তোরে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পের জন্য আলোচিত শহর ইসফাহানে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি।

এমন পরিস্থিতিতে গাজায় মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৩৪ হাজারে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৪ হাজার ১২ জন নিহত হয়েছেন। এসময়ে আরও ৭৬ হাজার ৮৩৩ জন আহত হয়েছেন। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৩৯ জনে। এছাড়াও গাজায় কয়েক ডজন ইসরায়েলি নাগরিক বন্দী রয়েছে।

;

অন্ধ জ্যোতিষী বাবা ভঙ্গ'র কথা কী ফলতে যাচ্ছে!



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
অন্ধ জ্যোতিষী বাবা ভঙ্গ'র কথা কী ফলতে যাচ্ছে!

অন্ধ জ্যোতিষী বাবা ভঙ্গ'র কথা কী ফলতে যাচ্ছে!

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজা ইস্যুতে যখন ইরান ও ইসরায়েল মুখোমুখি, তখন যে কারো মনেই জেগেছে শঙ্কা! সবারই প্রশ্ন- কি হতে যাচ্ছে? কোন পথে বিশ্ব? বিশ্ব কি সেই পথেই যে পথের শঙ্কা প্রকাশ করে গিয়েছিলেন সেই অন্ধ জ্যোতিষী বাবা ভঙ্গ। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ! কিংবা এক ভয়াল ২০২৪!

জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী সে নারী পৃথিবীর মায়া ছেড়েছেন ২৭ বছর হলো। কিন্তু এখন থেকে আরো তিন হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বে কোন বছর কি ঘটবে তা নিয়ে নিজের গণনালব্দ ভবিষ্যদ্বাণী তিনি করে গেছেন। তার সে সব কথা যে একেবারে ফ্যালনা নয়, তা এরই মধ্যে বিশ্ববাসী টের পেয়ে গেছে। সবশেষ তাজা তাজা যা ঘটলো তা হচ্ছে কোভিড-১৯ অতিমারি। যে অতিমারির কথাও ছিল বাবা ভঙ্গের ভবিষ্যদ্বাণীতে।

আর ২০২৪ নিয়ে তার বক্তব্যই ছিল ভয়াল কালোয় আচ্ছন্ন একটি বছর হবে এটি। সে আশঙ্কার তালিকায় রয়েছে ইউরোপ জুড়ে সন্ত্রাসী হামলা, বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট আর জীবাণু অস্ত্রের ব্যবহার। এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর একটি হত্যাচেষ্টা চালানো হবে এমন সুনির্দিষ্ট তথ্যও তার গণনায় এসেছিল।

১৯৯৬ সালে মৃত্যু হয় এই বুলগেরীয় জ্যোতিষীর। বলকানদের নস্ট্রাডামাস বলেই ডাকা হতো তাকে। জ্যোতির্গণনার সেই দিনগুলোতে বাবা ভঙ্গ বছর বছর ধরে ৫০৭৯ সাল পর্যন্ত ভূমণ্ডলে কখন কি ঘটবে তার একটি তালিকা দিয়ে গিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর বিগত বছরগুলোতে কিছু ঘটনা তার সেই গণনার সঙ্গে মিলে যাওয়ায় অনেকেই সেসব সত্যিই বলেই মানতে শুরু করেছেন। তার গণনায় ২০২৪ কে একটি কালো বছর হিসেবেই দেখানো হয়েছে। এ অবস্থায় অনেকেই সামনে এনে মিলিয়ে দেখছেন বাবা ভঙ্গের কোন কোন ভবিষ্যদ্বাণী ফলে যাচ্ছে নাতো। প্রকাশিত হচ্ছে এ পর্যন্ত সেসব বাণী ফলে গেছে সেসবের কথাও।

কোভিড-১৯ অতিমারির কথা আগেই বলেছি। কিন্তু এই তালিকায় আরেকটি দগদগে স্মৃতি হয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ এর ভয়াল হামলা। ১৯৮৯ সালে এই সম্ভাব্য হামলার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বাবা ভঙ্গ। বলেছিলেন ইষ্পাতে তৈরি পাখি এসে আমেরিকার গর্ব চূর্ণ করবে। সেই কথা সত্যি হলো। চারটি উড়োজাহাজ এসে ভেঙ্গে দিলো আকাশচুম্বির গর্ব। আর কেড়ে নিলো ৩০০০ তাজা প্রাণ। ইস্পাতের পাখি বলতে উড়োজাহাজকেই বুঝিয়েছিলেন বাবা ভঙ্গ।

১৯৬৬ সালে বাবা ভঙ্গের ভবিষ্যৎদ্বাণী ছিল কোভিড-১৯ অতিমারির। তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, আমাদের সকলের মাঝে করোনা ছেয়ে যাবে। নেশকা স্টেফানোভা রোবেভা নামে ৭৩ বছরের এক নারীকে উদ্ধৃত করে এই খবর দিয়েছিলো দ্য ডেইলি স্টার। তিনি বলেছিলেন মৃত্যুর আগে বাবা ভঙ্গ তাকে কথাগুলো বলেছিলেন। তখন তিনি বুঝতেও পারেননি এই কথার মানে কি?

কথিত রয়েছে বাবা ভঙ্গ তার মৃত্যুর বছরটিও নাকি ঠিক ঠিক বলে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন ১৯৯৬ সালের ১১ আগস্ট ৮৫ বছর বয়সে তার মৃত্যু হবে। তার এই কথা সত্যি হয়েছে বলেও দাবি করা হয়। সে বছর স্তন ক্যান্সারে তার মৃত্যু হয়।

২০০৪ সালের সুনামির কথা বিশ্ববাসী ভুলতে পারেনি আজও। যে সুনামি ভাসিয়ে দিয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভারত, থাইল্যান্ড ও অন্যান্য দেশকে। সেই সুনামির দিনের আগে কেউ কি জানতো এমন কিছু হতে যাচ্ছে! না। কিন্তু বাবা ভঙ্গ বলেছিলেন এক বিপুলা ঢেউ এসে সমুদ্র উপকূল ছাড়িয়ে লোকালয়, শহর বন্দর ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। পানির নিচে তলিয়ে যাবে সব কিছু। হয়েছিলও তাই। তিনি বলেছিলেন, সবকিছু আইসক্রিমের মতো গলে গলে পড়বে।

২০০০ সালের কার্স্ক সাবমেরিন ডিজ্যাস্টারের কথাও নাকি ছিল বাবা ভঙ্গের ভবিষ্যৎ বাণীতে। তিনি বলেছিলেন কার্স্ক পানিতে নিমজ্জিত হবে। আর বিশ্বকে কাঁদাবে। কার্স্ক দুর্ঘটনায় ১১৮ জনের মৃত্যু হয়। ডাইভাররা আটদিন পর কার্স্কের কাছে পৌঁছতে পারে আর জানা যায় সেটি তলিয়ে ছিল ৩৫০ ফুট পানির গভীরে।

বুলগেরীয় এই জ্যোতির্বিদের ভবিষ্যৎ বাণির তালিকায় ছিল ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হত্যাকাণ্ডের কথাও। ১৯৮৪ সালে ঘটে এই হত্যাকাণ্ড। যা ১৯৬৯ সালেই বাবা ভঙ্গ বলে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তার পোশাকই তাকে ধ্বংস করবে। ধোঁয়াশা ও আগুনের মাঝে আমি দেখতে পাচ্ছি কমলা-হলুদ পোশাক। ১৯৯৪ সালের ৩১ অক্টোবর ইন্দিরা গান্ধীকে যেদিন হত্যা করা হলো সেদিন তার পরনে ছিল জাফরান রঙের শাড়ি।

যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থানের খবরও জানা ছিল এই নারী জ্যোতিষীর। তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন এক কৃষ্ণাঙ্গ। তবে তার আরেকটি কথা সত্যি হয়নি। বাবা ভঙ্গ বলেছিলেন সেটাই হবে শেষ কোনো কৃষ্ণাঙ্গের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়া। কারণ ৪৫তম মেয়াদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বারাক ওবামাই দ্বিতীয় দফা নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৪৫তমের ব্যাপারে তার ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, তার সময়ে যুক্তরাষ্ট্র সঙ্কটের মুখে পড়বে। তবে সেটা মিলে গেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। ২০২০ সালের ক্যাপিটল হিলের ঘটনার সাথে বিষয়টি মিলিয়ে দেখতে পছন্দ করেন অনেকেই।

৫০ বছরের জ্যোতিষবিদ্যা চর্চার সময়ে আরও কিছু ভবিষ্যৎ বাণী ছিল বাবা ভঙ্গের যা মিলে গেছে। যার মধ্যে ছিল ১৯৮৬ সালে ইউক্রেনে চেরনোবিল ডিজ্যাস্টার, ১৯৯৭ সালে প্রিন্সেস ডায়ানা হত্যাকাণ্ড।

তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী ছিল যা মোটেই মেলেনি। যেমন ২০২৩ সালের প্রাকৃতিক জন্মলাভের ইতি ঘটবে, পৃথিবী তার ঘূর্ণয়ণ পথ পরিবর্তন করবে, সৌরঝড় হবে এগুলোর কোনোটাই ঘটেনি। ২০১৭ সালের মধ্যে ইউরোপ তার অস্তিত্ব হারাবে এমন কথাও তিনি বলেছিলেন যা ফলেনি। তবে জ্যোতির্বিদ্যায় যারা বিশ্বাসী তারা ২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার সাথে এই কথার মিল খোঁজার চেষ্টা করেন।

;

উৎসব-সহিংসতায় কাটলো ভারতের নির্বাচনের প্রথম দিন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের ১৮তম লোকসভার নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের প্রথম পর্বে ২১ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ১০২ আসনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয়েছে সন্ধ্যা ৬টায়।

উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট শুরু হলেও বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি, সহিংসতা ছাড়া ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট গ্রহণ মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তেজনা হয়। সাধারণ ভোটারকে ভয় দেখানো এবং বাড়ি ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল।

কোচবিহার জেলায় চান্দামারী এলাকায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের ছোড়া পাথরের আঘাতে বিজেপি বুথ সভাপতি লব সরকার আহত হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। হাসপাতালে ভর্তি ওই বিজেপি নেতা। এছাড়াও নাটাবাড়ি এলাকায় তাদের আরও বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।


আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের বুথ এজেন্ট এর ওপর হামলা, তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের হরিরহাট এলাকায় দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, তৃণমূল নেতা এবং তৃণমূলের বেতাগুড়ি ব্লক প্রেসিডেন্ট অনন্ত বর্মনের ওপরও হামলার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। নির্বাচনী সহিংসতাসহ বিভিন্ন ঘটনায় দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটেছে উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্য মণিপুরেও। রাজ্যটির রাজধানী ইমফলে বেশ কিছু ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বুথ দখল, ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট মেশিন নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও আরও বিভিন্ন যায়গায় বিক্ষিতপ সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, বিকেল ৫টা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ভোট পড়েছে ৬৬ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মেঘালয়ে পড়েছে ৬২ শতাংশ। কিছু যায়গায় ইভিএম ব্যাবহারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যার খবর পাওয়া গেলেও তা দ্রুত সমাধান করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

ছত্তিশগড়ে নকশালবাদীদের প্রভাব থাকলেও ভোটগ্রহণ হয়েছে ৪২ শতাংশের বেশি। রাজ্যের বিজাপুর জেলায় আইইডি বিস্ফোরণে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের এক সহকারী কমান্ড্যান্ট আহত হন। তামিলনাড়ুতে জয়ের জন্য বিজেপি মরিয়া। এ রাজ্যে ৩৯ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। অরুণাচলে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সকালে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও, শেষ পর্যন্ত ৩৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। বিহারের চারটি আসনে ৭৫ লাখ ভোটারের মধ্যে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় ৩২ শতাংশ ভোট পড়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে অবিরাম বৃষ্টির মধ্যেও ৪৩ দশমিক ১১ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এদিকে পূর্ব নাগাল্যান্ডের ছয় জেলায় তেমন ভোটার উপস্থিতি দেখা যায়নি। আলাদা রাজ্যের দাবিতে ওইসব এলাকার উপজাতিদের সংগঠনগুলোর ডাকে সেখানকার ভোটাররা বাড়ি থেকে বের হননিএছাড়া জাতিগত দ্বন্দ্ব থাকা স্বত্বেও মণিপুরে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রায় ৪৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

উল্লেখ্য, মোট সাত দফায় লোকসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেক্ষেত্রে আর ছয়টি দফার ভোটগ্রহণ বাকি রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল, তৃতীয় দফায় ৭ মে, চতুর্থ দফায় ১৩ মে, পঞ্চম দফায় ২০ মে, ষষ্ঠ দফায় ২৬ মে এবং সপ্তম শেষ দফার ভোট ১ জুন। ভোট গণনা আগামী ৪ জুন।

;

ইরানের ইস্পাহানকেই কেন টার্গেট করে হামলা চালালো ইসরায়েল



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসরাইলি ভূখণ্ডে তেহরানের নজিরবিহীন হামলার ছয় দিনের মাথায় একটি ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত করেছে বলে দাবি করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। মার্কিন কর্মকর্তারা বিবিসি’র যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে, একটি ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত হেনছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ইরানের কেন্দ্রীয় শহর ইস্ফাহানের চারপাশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে ইরানের গণমাধ্যমে এসেছে।

ইরানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করার মাধ্যমে তিনটি ড্রোনকে ধ্বংস করা হয়েছে।

ইরানি গণমাধ্যম এবং দেশটির কর্মকর্তারা ইস্ফাহান এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাবরিজ শহরে হামলার খবরটিকে হালকাভাবেই উপস্থাপন করছেন।

ইরানিয়ান স্পেস অ্যাজেন্সি একজন কর্মকর্তা হোসেইন দালিরিয়ানের দাবি, সীমান্তের বাইরে থেকে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি।

এদিকে মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, একটি ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত হেনেছে।


বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে শুক্রবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে দেশটির মধ্যাঞ্চলের নগরী ইস্পাহানের বিমানঘাঁটির কাছে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করার কথা জানানো হয়েছে।

তবে ইরানের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ইরানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি। ইরানের আকাশ সুরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হওয়ার কারণে ইস্পাহান বিমানঘাঁটির কাছে বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে।

ইরানের বার্তা সংস্থা ফারস বলেছে, মধ্যাঞ্চলের শহর ইস্পাহানের একটি সেনাঘাঁটির কাছাকাছি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইরানের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছে, এটা কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নয়। ইরানের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় হওয়ার কারণেই এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছে, মধ্যরাতের একটু পরেই ‘ইস্পাহানের আকাশে তিনটি ড্রোন দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে আকাশ নিরাপত্তাব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়। আর এর ফলে ড্রোনগুলো আকাশেই ধ্বংস করে ফেলা হয়।


যে কারণে ইস্পাহানই ইসরায়েলের লক্ষবস্তু-


বিবিসিকে একজন পারমাণবিক এবং রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, সম্ভাব্য লক্ষ্য হিসেবে ইরানের দ্বিতীয় শহর ইস্ফাহানকে বেছে নেয়া ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’।

যুক্তরাজ্য ও ন্যাটোর পারমাণবিক বাহিনীর সাবেক কমান্ডার হামিশ ডি ব্রেটন গর্ডন উল্লেখ করেছেন, শহরটির আশপাশে অনেকগুলো সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। সেগুলোরই একটি ছিল লক্ষ্যবস্তু। যেখানে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে বলে ধারণা করা হয় সেই স্থানটির খুব কাছেই আলোচিত আক্রমণটি করা হয়েছে। সুতরাং এটা তাদের জন্য একটা ঝাঁকুনি,’ বিবিসিকে বলেন তিনি।


এছাড়াও, ইস্পাহান ইরানের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ও প্রধান পর্যটন নগরী। সমৃদ্ধ মুসলিম ঐতিহ্য ও নান্দনিক স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত এটি। একসময় শহরটিকে ‘ইস্পাহান নিসফে জানান’ বলা হতো, যার অর্থ ইস্পাহান পৃথিবীর অর্ধেক। ছন্দোবদ্ধ এই প্রবাদ আসলেই সত্য। এটি পৃথিবীর অন্যতম বড় শহর ছিল এবং দুবার ইরানের রাজধানী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল। মুসলিম ঐতিহ্যের শহর ইস্পাহানকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে। ব্রিটিশ পর্যটক রবার্ট বায়রন এথেন্স বা রোমের মতো বিরল স্থানগুলোর সঙ্গে ইস্পাহানকে তুলনা করেছেন। ইস্পাহানের ইতিহাস ও চিত্তাকর্ষক স্থাপত্যের কারণে শহরটিকে ‘ইরানের লুকানো রত্ন’ও বলা হয়।

;