তুরস্ক কি রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে



কাওসার আহমেদ, তুরস্কের ইজমির থেকে
তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, পুরনো ছবি

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, পুরনো ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

তুরস্কের ভৌগলিক অবস্থান ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশে হওয়ায় দেশটি বিশ্ব রাজনীতিতে জিওপলিটিক্যালি বা স্ট্যাটিজিক্যালি খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের সময় থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সাথে দেশটির ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ মিত্রতা গড়ে ওঠে। কিন্তু কুর্দিদের সমর্থনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এই বিশ্বাস ভঙ্গের কারণে তুরস্কের বর্তমান ইসলামপন্থী একে (আকেপে) পার্টির সরকার হয়তো স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার প্রতিপক্ষ রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করে ভারসাম্য রক্ষা করতে চাইছে।

গত প্রায় এক দশক ধরে তুরস্কের আশা ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগ দেওয়ার। কিন্তু ২০১৬ সালের জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানেরর বিরুদ্ধে ব্যর্থ এক অভ্যুত্থানের পর ওই আলোচনা স্থবির হয়ে পড়েছে।

ইউরোপের নেতারা বলছেন, ওই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার পর এরদোয়ানের সরকার যে গ্রেফতার ও শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে, তা ইইউর সদস্য হওয়া এবং ভিসামুক্ত চলাচলের আলোচনার আবশ্যিক যেসব পূর্বশর্ত রয়েছে, তার লংঘন বলে বিবেচিত হতে পারে।

অন্যদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ইইউ -এ যোগ দেওয়ার চিন্তার মধ্যে আটকে থাকা তুরস্কের উচিৎ নয়। তারা বরং রাশিয়া ও চীনকে নিয়ে একটি 'ইউরেশিয়ান' গ্রুপে যোগ দিতে পারেন।

তুরস্ক কি রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে?

এরদোয়ান বলেছেন, তিনি ইতোমধ্যেই তার এই ভাবনা নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে আলোচনা করেছেন। তিনি রাশিয়া ছাড়াও কাজাকিস্তানের নীতিনির্ধারকদের সাথেও এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

এদিকে এ দু’টি দেশই সাংহাই প্যাক্ট নামে একটি গ্রুপের সদস্য, যা একটি শিথিল নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক জোট। এর অন্য সদস্যরা হচ্ছে- চীন, কিরগিজস্তান এবং তাজিকিস্তান।

এখন আসি মূল প্রশ্নে, তুরস্ক কি আসলে ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে পারছে? নাকি ক্রমাগতভাবে রাশিয়ামুখী হচ্ছে? যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক বাহিনীর দেশ তুরস্ক সিরিয়ায় মার্কিন স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে রাশিয়ার সাথে সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত করছে।

তাছাড়া সম্প্রতি যে বিষয়টি নিয়ে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কের বেশ টানাপোড়ন চলছে তা হলো রাশিয়া থেকে অত্যাধুনিক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনা।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, রাশিয়ার কাছ থেকে বিমান বিধ্বংসী মিসাইল এস-৪০০ প্রযুক্তি কেনায় তুরস্ককে সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই প্রযুক্তিকে মার্কিন জেট বিমানের জন্য হুমকি হিসাবে দেখছে দেশটি।

মি. পেন্স বলেন, তুরস্ককে বেছে নিতে হবে, তারা কি গুরুত্বপূর্ণ ন্যাটো সদস্য হিসাবে থাকবে, না-কি এরকম দায়িত্বহীন সিদ্ধান্ত নিয়ে যৌথ নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলবে?

তুরস্ক কি রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে?

এর জবাবে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসগলু বারবার বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে ওই চুক্তিটি বাতিল করা সম্ভব নয়। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে চুক্তি হয়ে গেছে।

অন্যদিকে, তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতে টুইট করেছেন, ''যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই বেছে নিতে হবে- তারা কি তুরস্কের বন্ধু হিসেবে থাকতে চায়? না-কি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে আমাদের বন্ধুত্বকে ঝুঁকিতে ফেলতে চায়। যারা শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ন্যাটো সহযোগীদের প্রতিরক্ষাকে দুর্বল করে তুলতে চায়?''। (সূত্র: বিবিসি, ৪ এপ্রিল ২০১৯)

কিন্তু কী আছে এই এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থায়, যার কারণে এটি এতটা গুরুত্ব পাচ্ছে সবার কাছে? জেনে নেই বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে, স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক সাইমন ওয়াজেমান বলেন, ‘এস-৪০০ হচ্ছে এখন পর্যন্ত সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, পশ্চিমারা এখন পর্যন্ত যা তৈরি করেছে তার চেয়ে অনেক অগ্রসর এটি। এর রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র কিংবা অন্যান্য সেন্সরের ক্ষমতা অনেক বেশি। এর রাডার ৬০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকার ওপর নজরদারি করতে পারে। এটির ক্ষেপণাস্ত্রের সীমা ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এটি লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণেও অনেক নির্ভুল।’

তুরস্ক কি রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে?

‘আরেকটি বিষয় হচ্ছে, মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই এই অস্ত্রটি স্থাপন করা, প্রস্তুত করা ও ফায়ার করা যায়। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়া যায় সহজেই।’

কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের সামরিক বিশ্লেষক কেভিন ব্রান্ড বলেন, ‘এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাটি হলো একের মধ্যে অনেক গুণাগুণ সমৃদ্ধ। এটি দিয়ে দূর পাল্লা, মাঝারি পাল্লার এমনকি স্বল্প পাল্লার রকেট ছোড়া যায়। এটি নির্ভর করবে ব্যবহারকারীর ইচ্ছের ওপর।’ (সূত্র: আল জাজিরা)।

পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হওয়ার পর রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে আঙ্কারা।

মস্কোর সাথে আঙ্কারার সম্পর্ক বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ- যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পাওয়া তুর্কি নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারীদের দ্বারা অভ্যুত্থানের চেষ্টা। তবে এই সম্পর্ক উন্নয়নের শিকড় আরো গভীরে, যেখানে আছে সিরিয়া নীতি নিয়ে তুরস্কের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতমুখী অবস্থান।

   

ইসরায়েলের কারাগারে ১৩ ফিলিস্তিনির মৃত্যু



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্দি করে রাখা হয়েছে অসংখ্য ফিলিস্তিনি বন্দিদের। তাদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানোয় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি বন্দির মৃত্যু হয়েছে। তাদের অনেকের বুকের পাঁজরসহ হাড়গোড় ভাঙ্গা এবং আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। 

স্বজন, সাবেক কারাবন্দি ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি নির্যাতনের এই বর্ণনা দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েলি কারাগারগুলোতে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে। নির্মম নির্যাতনে অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি বন্দির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বন্দী বিষয়ক কমিশন। মৃত বন্দিদের পরিবারের সদস্য ও তাদের সাথে একই কারাগারে  আটক সাবেক বন্দিরা ইসরায়েলি কারাগারের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছে বিবিসিকে। 

এক বন্দীর মা বলেন, ছেলে মৃত্যুর আগে শেষবার যখন তাকে ফোন করেছিল তখনই জানিয়েছিল দিন দিন কারাগারে তার ওপর নির্যাতন বাড়ছে। কারা কর্তৃপক্ষ তাকে পরিবারের সাথে কথা বলতে দিতে চায় না। ফিলিস্তিনের রামাল্লাহ থেকে সুর্নিদিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই তাকে আটক করে ইসরায়েলি সেনারা। পরে কারাগারে তার মৃত্যু হয়।

মৃত বন্দিদের সাথে একই কারাগারে আটক সাবেক বন্দিরা জানান, কারাগারে কোনো কারণ ছাড়াই তাদেরকে গালাগালি, পরিবার নিয়ে বাজে মন্তব্য, মারধর, তল্লাশি এবং অমানুষিক নির্যাতন চালানো হতো। এমনকি কারো দিকে তাকালেও মারধরের শিকার হতে হতো। রোগে দেওয়া হতো না কোন ওষুধ। মৃত্যুর আগে ওই বন্দিদের অন্য কারাকক্ষে আটকে রেখে নির্যাতনের সময় ব্যথায় তাদের চিৎকার শুনতে পেয়েছিল তারা।

এদিকে, বন্দিদের মৃত্যুর বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ইসরায়েলি কারাগার কর্তৃপক্ষ। নির্যাতনের অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি তাদের। তবে মৃত বন্দিদের অনেকের বুকের পাঁজরসহ অনেক হাড়গোড় ভাঙ্গা থাকা এবং শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানান মানবাধিকার গ্রুপগুলোর চিকিৎসকরা।



;

দোনেৎস্কের আরেকটি গ্রাম দখলের দাবি রাশিয়ার



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্কের আরও একটি গ্রাম দখলের দাবি করেছে রাশিয়া। তাদের দাবি, পূর্ব ইউক্রেনের গ্রাম নোভোমিমিকাইলিভকা তারা দখল করে নিয়েছে এবং তা তাদের নিয়ন্ত্রিত দোনেৎস্কের মধ্যে নিয়ে এসেছে।

সোমবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সামাজিকমাধ্যমে দাবি করেছে, তারা একটি গ্রামকে মুক্ত করেছে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান আরও ভালো করেছে। তবে ইউক্রেনের দাবি, তারা রুশ বাহিনীর অগ্রগতি থামিয়েছে।

জার্মানভিত্তিক বার্তাসংস্থা ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের সেনা কর্তারা দাবি করেছেন, রাশিয়া দোনেৎস্কে ২৩ বার তাদের প্রতিরক্ষা বলয় ভেঙে এগোবার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারেনি।

ইউক্রেনের হাতে এখন অস্ত্র এবং গোলাবারুদ কমে এসেছে। তাই তারা রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করছে মাত্র।

গত সপ্তাহ শেষে মার্কিন পার্লামেন্টে ইউক্রেনকে ছয় হাজার এক শ’ কোটি ডলার সামরিক ও আর্থিক সাহায্য দেয়ার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই সাহায্য ইউক্রেনের হাতে পৌঁছাতে বেশ কয়েক সপ্তাহ লেগে যাবে।

মার্কিন থিংক ট্যাংক দ্য স্টাডি অৎ ওয়ার জানিয়েছে, রাশিয়ার সেনা এখন তাদের আক্রমণ আরও তীব্র করবে। তারা মিসাইল ও ড্রোন ব্যবহার করবে। ইউক্রেনের হাতে যথেষ্ট পরিমাণ অস্ত্র না থাকার সুবিধা তারা নেওয়ার চেষ্টা করবে।

;

ইরানে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে: মানবাধিকার প্রতিবেদন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০২৩ সালের পরিস্থিতি হিসেবে ইরানের মানবাধিকারের রেকর্ড ক্রমাগত খারাপের দিকে যাচ্ছে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী, মানবাধিকার আইনজীবী, সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করে ক্রমবর্ধমানভাবে দেশটি শাসন হতে থাকায় নারীদের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে।

ইরানী নারীরা বাধ্যতামূলক পোষাক কোড লঙ্ঘনকারী লোকদের বিরুদ্ধে শাস্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বৈষম্য করা হয়েছে বলে জানান তিনি। প্রতিবাদ এবং নাগরিক অবাধ্যতা সরকারকে ব্যাপক কর্মকাণ্ডের দিকে পরিচালিত করে।

ব্যুরো অফ ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস এবং শ্রমের সিনিয়র ব্যুরো অফিসার রবার্ট গিলক্রিস্ট মানবাধিকার অনুশীলনের ৪৮তম বার্ষিক কান্ট্রি রিপোর্ট প্রকাশ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন এবং মুখপাত্র ম্যাট মিলার। ভয়েস অফ আমেরিকার গিটা আরিয়ান ইরান নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি এসব কথা বলেন।

রবার্ট গিলক্রিস্ট বলেন, মানবাধিকার রিপোর্ট নামে পরিচিত এই কংগ্রেসের নির্দেশিত প্রতিবেদনটি ১৯৯৭ সাল থেকে ডিআরএল ব্যুরোর একটি প্রধান প্রচেষ্টা। মানবাধিকার প্রত্যেকের জন্য; এই প্রতিবেদনটি এই সর্বজনীন অধিকারের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করার একটি উপায়।

ভয়েস অব আমেরিকা থেকে গিটা আরিয়ান ইরান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরান মার্চের শেষের দিক থেকে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাবের উপর ক্র্যাকডাউন করেছে এবং যেদিন ইসরায়েলে আক্রমণ করেছে, সেদিন থেকে এটি সেই ক্র্যাকডাউনকে আরও তীব্র করেছে। একই সময়ে, ক্যাপিটল হিলে আইন রয়েছে যে প্রশাসন উচ্চ নেতৃত্বের কর্মকর্তাদের - সর্বোচ্চ নেতা, রাষ্ট্রপতিকে অনুমোদন দেয়।

গিলক্রিস্ট বলেন,  যেকোন আইনের ব্যাপারে অবশ্যই বিভাগটি কংগ্রেসে পাস হওয়া প্রতিটি আইন সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর তাই আইন বাস্তবায়নে দপ্তরের প্রতিশ্রুতি অবশ্যই আছে।

অনেক নারী ও মানবাধিকার কর্মী তাদের সক্রিয়তার জন্য কারাদণ্ড পেয়েছেন এবং কারাগারে রয়েছেন। নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন মাহসা জিনা আমিনির ২২ সেপ্টেম্বর মৃত্যুর পর শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমন করার প্রচেষ্টায় কর্তৃপক্ষ লোকেদের আটক, সাজা এবং মৃত্যুদণ্ড অব্যাহত রেখেছিল ইরান প্রশাসন। তাই যুক্তরাষ্ট্রও বহুজাতিক অঙ্গনে কাজ করে যাচ্ছে।

নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে রবার্ট গিলক্রিস্ট বলেন, বিভাগটি ইতিমধ্যেই সক্রিয়ভাবে ভিসা বিধিনিষেধ এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো ব্যবহার করেছে। ইরানের কর্তৃপক্ষের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা বাড়াতে ২০২২ সালের দাঙ্গার পর থেকে সাম্প্রতিকতম ক্র্যাকডাউনের বিষয়গুলো বিবেচনায় আনা হচ্ছে।

;

সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগে ভারতের সমালোচনা 



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুরে রাজ্য ২০২৩ সালে সংঘটিত দাঙ্গায় হয়রানির শিকার হয়েছে সাংবাদিক ও সংখ্যালঘুরা। এছাড়া ভারতজুড়ে সাংবাদিক ও ভিন্নমতাবলম্বীরা মোদি সরকার ও তার সমর্থকদের চাপ প্রয়োগ ও হয়রানির শিকার হয়েছে। 

সোমবার (২২ এপ্রিল) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর প্রকাশিত বার্ষিক মানবাধিকার মূল্যায়ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। তবে প্রতিবেদনের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি ওয়াশিংটনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মণিপুরে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ ও সাংবাদিক-ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পেয়েছে। 

দেশটির একটি আদালতের আদেশকে কেন্দ্র করে গত বছরের মাঝামাঝি মণিপুরে দুই উপজাতি কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাতের শুরু হয়। সেই সংঘাত সহিংসতায় অন্তত ২০০ জনের মৃত্যু হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সংঘটিত দাঙ্গায় অন্তত ৬০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারতের অন্যান্য অংশেও সরকার ও এর সমর্থকরা গণমাধ্যম ও সরকারের সমালোচকদের ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি ও হয়রানি করেছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, ২০২৩ সালে ভারতের বিবিসি কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়েছে আয়কর বিভাগ। হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনামূলক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশের পর এই তল্লাশি চালানো হয়।

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস ২০২৩ সালে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতকে ১৬১তম স্থানে রেখেছিল, যা দেশটির ইতিহাসে সর্বনিম্ন অবস্থান।

মার্কিন মূল্যায়ন প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা তাদের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়িয়ে সহিংসতার আহ্বান জানানোসহ নানা অভিযোগ করেছেন। তবে মোদি সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, তার নীতিমালা সব ভারতীয়র উপকারের লক্ষ্যেই প্রণীত। 

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর অভিযোগ, মোদির শাসনামলে জলবায়ু পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এছাড়া তার আমলে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন প্রয়োগ এবং অবৈধ স্থাপনা অপসারণের নামে মুসলিম স্থাপনা ভেঙে ফেলার মতো কাজ করা হয়েছে।

তারপরও চলতি বছরের নির্বাচনে রেকর্ড আসন নিয়ে মোদির দলের তৃতীয়বারের মতো জয় পাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে নির্বাচনী জরিপ সংস্থাগুলো।

;