যা আছে রাহুলের পদত্যাগ পত্রে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
রাহুল গান্ধী, ছবি: সংগৃহীত

রাহুল গান্ধী, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের দায় কাঁধে নিয়ে ৩ জুলাই কংগ্রেস পার্টির সভাপতির পদ ছেড়েছেন রাহুল গান্ধী। এখানে তার পদত্যাগ পত্রের সম্পূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরা হলো।

‘কংগ্রেস পার্টির জন্য কাজ করাটা আমার জন্য সম্মানের, যে পার্টির মূল্যবোধ ও আদর্শ আমাদের এই সুন্দর জাতির প্রাণশক্তি।

আমি আমার দেশের কাছে ঋণী এবং দলের অসাধারণ কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসায় আমি ঋণী।

কংগ্রেস পার্টির সভাপতি হিসেবে ২০১৯ সালের পরাজয়ের জন্য আমি দায়ী। আমাদের দলের ভবিষ্যৎ উন্নতির জন্য জবাবদিহিতা অত্যন্ত জরুরি। এটাই আমার কংগ্রেস পার্টির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করার কারণ।

পার্টি পুনর্গঠনের জন্য কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং ২০১৯ সালের পরাজয়ের জন্য অনেককে জবাবদিহি করতে হবে। দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব এড়িয়ে অন্যদের দায়ী করাটা অন্যায় হবে।

আমার অনেক সহকর্মী প্রস্তাব করেছিলেন যেন আমি পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতি মনোনীত করি।

নতুন কারো নেতৃত্ব দেওয়াটা আমাদের দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেই ব্যক্তি কে হবেন, তা নির্বাচন করা আমার ঠিক হবে না। আমাদের দলের অসামান্য ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও মর্যাদাকে আমি গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি। ভারত বুননে এটি গাঁথা রয়েছে এবং আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দল সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে যে কে সাহস, ভালোবাসা ও সততা দিয়ে দলের নেতৃত্ব দিতে পারবেন।

পদত্যাগের পরপরই আমি কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির (সিডিব্লিউসি) সহকর্মীদের বলেছি, যেন কয়েকজনকে দলের নতুন সভাপতি খোঁজা শুরু করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি তাদের এই ক্ষমতা দিয়েছি এবং এই প্রক্রিয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিতে ও সুন্দরভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য আমার লড়াই মোটেই সহজ ছিল না। বিজেপির প্রতি আমার কোনো ঘৃণা বা রাগ না থাকলেও আমার দেহের প্রতিটি জীবন্ত কণা দিয়ে আমি তাদের ভারত সম্পর্কিত সিদ্ধান্তগুলোর বিরোধিতা করি। এই বিরোধিতার কারণ, আমি যে ভারতীয় মূল্যবোধ লালন করি, তার সঙ্গে তাদের ধ্যান-ধারণা সব সময় সরাসরি সাংঘর্ষিক। এ যুদ্ধ নতুন নয়, হাজার হাজার বছর আগে থেকেই আমাদের মাটিতে এটা চলছে। তারা যেখানে পার্থক্য দেখেন, আমি সেখানে দেখি সাদৃশ্য। তারা যেখানে ঘৃণা দেখেন, আমি দেখি ভালোবাসা। তারা যা ভয় করেন, আমি তা আলিঙ্গন করি।

এমন সহনুভূতিশীল ধ্যান-ধারণা আমার কোটি কোটি প্রিয় নাগরিকের হৃদয়ে রয়েছে। ভারতের এই মূল্যবোধ আমরা কঠোরভাবে রক্ষা করব।

আমাদের দেশ ও লালিত সংবিধানের ওপর আক্রমণ আমাদের জাতি সত্ত্বা ধ্বংসের জন্য তৈরি করা হয়েছে। আমি কোনোভাবেই এই লড়াই থেকে পিছপা হচ্ছি না। আমি কংগ্রেস পার্টির একজন বিশ্বস্ত সৈনিক এবং ভারতের অনুগত সন্তান। আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত দেশকে সেবা দেব এবং রক্ষা করব।

আমরা একটি শক্তিশালী এবং মর্যাদাপূর্ণ নির্বাচন করেছি। আমাদের প্রচারণা ছিল ভারতের সব জনগণ, ধর্ম ও গোষ্ঠীর ভ্রাতৃত্ব, পরমতসহিষ্ণুতা ও সম্মানের জন্য। আমি আমার সমস্ত সত্ত্বা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী, আরএসএস এবং তাদের দখলে থাকা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। আমি ভারতকে ভালোবাসি বলেই এ লড়াই করেছি এবং ভারত যে আদর্শ নিয়ে গঠিত, সে আদর্শ রক্ষার্থে আমি লড়াই করেছি। এ লড়াইয়ে আমি সম্পূর্ণ একা ছিলাম এবং এজন্য আমি অত্যন্ত গর্বিত। আমি আমাদের কর্মী এবং দলের নারী ও পুরুষ সদস্যদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি, যারা আমাকে ভালোবাসা ও সৌজন্যবোধ শিখিয়েছেন।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষ থাকা প্রয়োজন; দেশের বিচারক তুল্য সংবাদ মাধ্যমের নিরপেক্ষতা, একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং স্বচ্ছ, বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন না থাকলে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না । যদি একটি দলের কাছে দেশের সব আর্থিক সম্পদ কুক্ষিগত থাকে, তাহলেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

২০১৯ সালের নির্বাচনে আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লড়াই করিনি। বরং আমরা বিরোধী দলের বিরুদ্ধে পরিচালিত ভারতের পুরো মেশিনারিজ ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এটা এখন স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ যে ভারতে এখন আর আমাদের লালিত প্রাতিষ্ঠানিক নিরপেক্ষতা নেই।

আরএসএস’র আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো দখলে নেওয়ার উদ্দেশ্য এখন পূরণ হয়েছে। আমাদের গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। আসল বিপদটা হলো এখন থেকে নির্বাচন ভারতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের পরিবর্তে নিছক আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হবে।

এই ক্ষমতা দখলের ফলে ভারতের সহিংসতা ও কষ্ট অকল্পনীয় পর্যায়ে পৌঁছাবে। কৃষক, বেকার যুব সমাজ, নারী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, দলিত ও সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে যাচ্ছেন। এটি হবে আমাদের অর্থনীতি এবং দেশের খ্যাতির জন্য ধ্বংসাত্মক। প্রধানমন্ত্রীর বিজয় তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের বহর বাতিল করতে পারবে না; কোনো টাকা এবং প্রোপাগান্ডাই সত্যের আলো লুকিয়ে রাখতে পারে না। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরুদ্ধার ও পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ভারতীয় জাতিকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কংগ্রেস পার্টি হবে এই পুনর্গঠনের যন্ত্র।

htt
রাহুল গান্ধী, ছবি: সংগৃহীত



এই গুরু দায়িত্ব অর্জন করতে হলে কংগ্রেস পার্টির আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন। আজ বিজেপি রীতিমত ভারতীয় জনগণের কণ্ঠস্বর নিষ্পেষণ করছে। তাদের কণ্ঠস্বর রক্ষা করা কংগ্রেস পার্টির দায়িত্ব। ভারত কখনো এক কন্ঠস্বরের ছিল না, ভবিষ্যতেও হবে না। এখানে সম্মিলিত কণ্ঠস্বর আছে এবং থাকবে। এটিই ভারত মাতার সত্য সার কথা।

দেশ বিদেশের হাজারো ভারতীয় জনতাকে ধন্যবাদ, যারা আমাকে মেসেজ এবং চিঠির মাধ্যমে সমর্থন দিয়েছেন। আমি অবশ্যই আমার সর্বশক্তি দিয়ে কংগ্রেস পার্টির আদর্শের জন্য লড়াই করে যাব। পার্টির যখনই আমার কোনো সেবা বা পরামর্শের দরকার হবে, আমি সঙ্গে আছি। 

যারা কংগ্রেস আদর্শে বিশ্বাস করেন, বিশেষ করে আমাদের নিবেদিত ও প্রিয় কর্মী, আমাদের ভবিষ্যতের ওপর আমার অগাধ বিশ্বাস এবং আপনাদের প্রতি পরম ভালোবাসা রয়েছে।

ভারতে এই অভ্যাসটা রয়েছে যে শক্তিধররা ক্ষমতা আকড়ে রাখতে চান, কেউ ক্ষমতা ছাড়তে চান না। কিন্তু আমরা ক্ষমতার বাসনা ত্যাগ না করে আমাদের বিরোধীদের পরাজিত করব না। আমরা গভীর আদর্শগত যুদ্ধ করছি। আমি কংগ্রেসম্যান হিসেবে জন্ম নিয়েছি, এই দল সব সময় আমার সঙ্গে আছে এবং এটি আমার জীবনের প্রাণশক্তি, যা সারা জীবন এভাবেই থাকবে।

জয় হিন্দ
রাহুল গান্ধী’

আরও পড়ুন: পদত্যাগ করলেন রাহুল গান্ধী

   

ইরান সফরে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধি দল



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উত্তর কোরিয়ার একটি অর্থনৈতিক প্রতিনিধি দল ইরান সফরের উদ্দেশ্যে পিয়ংইয়ং ত্যাগ করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। পরমাণু শক্তিধর দেশটির সরকারি সংবাদ মাধ্যম বুধবার (২৪ এপ্রিল) এ খবর নিশ্চিত করেছে।

এদিকে উত্তর কোরিযার প্রতিনিধি দলের এই ব্যতিক্রমী সফরকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।

উত্তর কোরিয়ার বৈদেশিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী উন জং হু দেশটির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) খবরে বলা হয়েছে, প্রতিনিধি দলটি সোমবার (২২ এপ্রিল) ইরানের উদ্দেশ্যে পিয়ংইয়ং ত্যাগ করেছে। তবে সংস্থার খবরে বিস্তারিত আর কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে মস্কোর সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা জোরদার করছে পিয়ংইয়ং। আর এই প্রেক্ষাপটেই ইরানে তাদের এই সফর অনুষ্ঠিত হলো।

অন্যদিকে সিউলের দাবি, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্যে রাশিয়াকে সাত হাজার কন্টেইনার গোলাবারুদ সরবরাহ করেছে উত্তর কোরিয়া।

উত্তর কোরিয়ার শুরু করা গোয়েন্দা স্যাটেলাইট কর্মসূচিতে মস্কোর কারিগরী সহায়তার বিনিময়ে এই কন্টেইনার সরবরাহ করা হয়েছে বলে ধারণা করছে সিউল।

ইরান ও রাশিয়াও ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক ও সামরিক মিত্র। রাশিয়া প্রায়শই ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানের ড্রোন ব্যবহার করছে।

কোরিয়া ইন্সষ্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের সিনিয়র বিশ্লেষক হং মিন বলেছেন, সফরটি এই আভাস দিচ্ছে যে, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক আরো সম্প্রসারণে আগ্রহী উত্তর কোরিয়া। সম্ভবত অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে দেশটি সম্পর্ক আরো গভীর করতে চায়। ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ঘের প্রেক্ষিতে ইরানের আরো অস্ত্র প্রয়োজন হতে পারে।

;

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনের পক্ষে ব্যাপক বিক্ষোভ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত সপ্তাহে ১০৮ জন শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার এবং তিনজনকে বহিঃস্কার করা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের দল দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পগুলোকে সরিয়ে দিয়ে যা অর্জন করার আশা করেছিল, তার বিপরীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও বেগবান হয়েছে।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব ক্যাম্প স্থাপন, ভবন দখল এবং সমাবেশ করেছে।

ইসরায়েল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির ক্রমবর্ধমান দাবির মধ্যে ইয়েল, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) এবং নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির (এনওয়াইইউ) মতো নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ দমন করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন।

ইউসি বার্কলে এবং ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের মতো বিশ্ববিদ্যালয়েও ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ চলছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। কারণ, শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্প খালি করার দাবি মানতে অস্বীকার করেছে। প্রশাসনও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে।

ফলস্বরূপ কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে, আগামী সপ্তাহে শেষ হওয়া স্প্রিং সেমিস্টারের শেষ পর্যন্ত ক্লাসগুলো হাইব্রিড লার্নিং মোডে স্যুইচ করা হবে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা সেখানে সড়ক অবরোধের পরিকল্পনা করছেন। ওই এলাকায় মার্কিন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা চাক শুমারের বাড়ি।

গত শুক্রবার থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীসহ কয়েক শ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে কলম্বিয়া, ইয়েল, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির মতো বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন।

তবে বিক্ষোভের নামে ইহুদি বিদ্বেষ ছড়ানো ও হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন সমালোচকদের অনেকেই। তাদের মধ্যে রিপাবলিকান দলের প্রভাবশালী কয়েকজন আইনপ্রণেতাও রয়েছেন।

অন্যদিকে ব্যাপক ধড়পাকড়ের সমালোচনা করেছেন অধিকারকর্মীরা। তাদের মতে, এর মধ্য দিয়ে বাকস্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে।

গত শতকের ষাটের দশক থেকে নানা অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সরব হতে দেখা যায় ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলের শিক্ষার্থীদের। এখানকার শিক্ষার্থীরাও গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে বিক্ষোভ করছেন তারা।

ক্যাম্পাসে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের কারণে ক্যালফোর্নিয়া পলিটেকনিক হামবোল্ডট বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের অনুরোধের পর ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার সেন্ট পল ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

নিউইয়র্ক পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছে, গত সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ নিউইয়র্কের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো থেকে ১২০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুরোধের পরই বিক্ষোভকারীদের আটক করেছে পুলিশ।

গত সপ্তাহে কলম্বিয়ায় বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে শতাধিক শিক্ষার্থী আটক করা হয়েছিল। বিক্ষোভের মুখে গত সোমবার সরাসরি ক্লাস বন্ধ করে দেয় কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি। ইহুদি শিক্ষার্থীরা হয়রানির শিকার হতে পারেন, এমন আশঙ্কা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়।

নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই এমন কিছু মানুষ সমস্যা বাধানোর চেষ্টা করছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছে। আমরা তাঁদের সেই সুযোগ দিতে পারি না।’

;

মার্কিন সিনেটে টিকটক নিষিদ্ধকরণ বিল অনুমোদন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে টিকটক নিষিদ্ধের বিল অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিলটি সিনেটে অনুমোদন দেওয়া হয়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ বিলটি স্বাক্ষরের জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে যাবে। তার স্বাক্ষরের পর বিলটি চূড়ান্ত আইনে পরিণত হবে। বিলটি অনুমোদনের পক্ষে ৭৯ জন ভোট দিয়েছেন, অন্যদিকে বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ১৮ জন।

অনুমোদিত বিলের শর্তে বলা হয়েছে, টিকটকের চীনা মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে আগামী নয় মাসের মধ্যে তাদের শেয়ার বিক্রি করতে হবে। নয়তো এই অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে ব্লক করে দেওয়া হবে।

এটি হলে বাধ্যতামূলকভাবে টিকটক বিক্রির বিষয়ে চীনা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন চাইতে হবে বাইটড্যান্সকে। তবে বেইজিং এরই মধ্যে শক্তভাবে এর বিরোধিতা করেছে।

শর্ট-ভিডিও শেয়ারের জনপ্রিয় অ্যাপ টিকটেকের বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ব্যবহারকারী আছে। তবে টিকটকের সঙ্গে চীনা সরকারের যোগসূত্র এবং এর ব্যবহারকারীদের তথ্য উপাত্তের নিরাপত্তা নিয়ে ক্রমশ প্রশ্ন উঠছে।

যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে চীন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের এক কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য-উপাত্ত হস্তান্তরের জন্য টিকটককে বাধ্য করতে পারে। টিকটক অবশ্য বলছে, বিদেশি ব্যবহারকারীদের তথ্য তারা চীন সরকারকে দেবে না।

টিকটকের প্রধান নির্বাহী শোউ জি চিউ গত মাসে বলেছেন, প্ল্যাটফর্মটিকে রক্ষায় তার প্রতিষ্ঠান নিজ ‘আইনি অধিকারসহ’ সম্ভব যা কিছু করার, করে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন নাগরিকরা এই অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারছেন না- এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। কারণ বাইটড্যান্স অ্যাপটির জোরপূর্বক বিক্রয় ঠেকাতে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে।

;

সলোমন দ্বীপপুঞ্জে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল চীনপন্থী প্রধানমন্ত্রী মানসেহ সোগাভারে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: আল-জাজিরা

ছবি: আল-জাজিরা

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র সলোমন দ্বীপপুঞ্জের নির্বাচনে নিজেদেগর সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে পারেনি চীনপন্থী প্রধানমন্ত্রী মানসেহ সোগাভারে। প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী রাজনীতিবিদদের সাথে জোট গঠন ছাড়া নতুন করে সরকার গঠন করতে পারবেন না তিনি।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) নির্বাচনী ফলাফলে দেখা গেছে সোগাভারের ‘আওয়ার পার্টি’ জাতীয় সংসদে ৫০টি আসনের মধ্যে ১৫টি আসন জিতেছে, যেখানে প্রধান বিরোধী দলগুলো ২০টি এবং স্বতন্ত্র ও ক্ষুদ্র দলগুলি ১৫টি আসন পেয়েছে।

সলোমন দ্বীপবাসীরা এক সপ্তাহ আগে হওয়া নির্বাচনী লড়াইয়ে ভোট দেন। সোগাভারে ২০১৯ সালে তাইপেই থেকে বেইজিং-এ কূটনৈতিক সম্পর্ক পরিবর্তন করে চীনের সাথে একটি বিতর্কিত নিরাপত্তা চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল।

ইউনাইটেড পার্টির নেতা পিটার কেনিলোরিয়া জুনিয়র তাইওয়ানের সাথে সম্পর্ক ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স পার্টির নেতা রিক হাউ রয়টার্স নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন, সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ২৬টি আসন নিশ্চিত করার জন্য রাজনীতিবিদরা স্বতন্ত্রদের লবিং করছেন।

বিশ্লেষকরা আল জাজিরাকে বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চীন সম্পর্কের দিকে মনোনিবেশ করতে পারে, সলোমন দ্বীপবাসীরা জীবনযাত্রার ব্যয়, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার মতো সমস্যা নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন ছিল।

সোগাভারে তার আসনে অল্প ভোটে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার পর জানান, তিনি দেশের নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।

তাভুলি নিউজের এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যখন এই দেশের নিরাপত্তার কথা আসে তখন আমি পূর্ণ নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করি। আমি দেশ পরিচালনা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি সম্ভাব্য দাঙ্গা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন বলেও জানিয়েছেন।

হোনিয়ারা ২০২১ সালে দাঙ্গায় কেঁপে উঠেছিল যখন বিক্ষোভকারীরা রাজধানীর চায়নাটাউনে ব্যবসাগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল এবং সোগাভারের বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেছিল। সে সময় সরকারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের সহায়তায় শান্তি পুনরুদ্ধার হয়।

সোগাভারে বলেন, তার দলের প্রতি দুটি ছোট দলের সমর্থন রয়েছে। তিনি দাবি করেন, বিরোধী দলগুলি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাকে সমর্থন করবে তা নিয়ে স্বতন্ত্রদের প্ররোচিত করবে।

ম্যাথু ওয়েলের সলোমন আইল্যান্ডস ডেমোক্রেটিক পার্টি (U4C) এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী রিক হাউ-এর ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স পার্টির (CARE) জোট ১৩টি আসনে রয়েছে।

কেনিলোরিয়া জুনিয়র বলেছেন যে তার দল, সাতটি আসন জিতেছে তারা সমমনা গ্রুপের সাথে একত্রিত হবে।

সলোমন দ্বীপপুঞ্জের শত শত দ্বীপ জুড়ে ৭ লাখ ৬০ হাজার জনসংখ্যা রয়েছে। নির্বাচন পরবর্তী সময়টি উত্তেজনাপূর্ণ হতে পারে কারণ রাজনীতিবিদরা একটি শাসক জোটকে একত্রিত করার চেষ্টা করছেন।

সোগাভারের সরকারের আমন্ত্রণে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, পাপুয়া নিউগিনি এবং ফিজির পুলিশ ও প্রতিরক্ষা বাহিনী নির্বাচনী নিরাপত্তায় সহায়তা করছে।

ইতিমধ্যে নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে মালাইতা দ্বীপে দুটি গ্রামের মধ্যে সহিংসতা দমন করেছে পুলিশ।

;