নির্যাতনের প্রতিবাদে কাঁচের মসজিদ
সৌদি আরবে প্রথমবারের মতো নির্মিত হয়েছে, ট্রান্সপারেন্ট বা স্বচ্ছ মসজিদ। ‘প্যারাডাইজ হ্যাজ ম্যানি গেটস’নামক আর্ট প্রকল্পের আওতায় মসজিদটি বানানো হয়েছে। এটা দেখতে অনেক চমৎকার।
‘প্যারাডাইজ হ্যাজ ম্যানি গেটস’ অর্থাৎ ‘জান্নাতে অনেক দরজা’ প্রকল্পটি সৌদি বংশোদ্ভুত শিল্পী আজলান ঘরেম পরিচালনা করেন। তার শৈল্পিক চিন্তায় তৈরি এ মসজিদটির পেছনে রয়েছে সুন্দর একটি ধারণা।
মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে, স্টিল, প্লেক্সিগ্লাস, অ্যালুমিনিয়ামের সঙ্গে বৈদ্যুতিক আলোর সংমিশ্রণে।
এ মসজিদ নির্মাণে তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করা হয়েছে, যারা একই মেটরিয়ালস স্টিল, প্লেক্সিগ্লাস, অ্যালুমিনিয়ামের সঙ্গে বৈদ্যুতিক সংযোগে সীমান্ত বেড়া তৈরি করে অসহায় অভিবাসীদের আগমন ঠেকিয়েছে। মানুষকে বন্দী করে নির্যাতন করে কারাগারের প্রকোষ্ঠে।
বস্তুত ইউরোপের সীমান্ত দেয়াল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কারাগার গুয়ান্তানামো বে’র দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
মজার বিষয় হলো, মসজিদটি সৌদি আরবে নির্মাণ করা হলেও এটি এখন আর সৌদি আরবে নেই। মসজিদটিকে কানাডার ভ্যানকুজারের ভ্যানিয়ার পার্কে দুই বছরের জন্য নেওয়া হয়েছে। যাতে মানুষ এই মসজিদের সৌন্দর্য দেখতে পারে।
দু’বছর পর মসজিদটি আবারও সৌদি আরব নিয়ে আসা হবে কিংবা অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হবে। যাতে আরও বেশি মানুষ সুন্দর ধারণায় নির্মিত মসজিদটি দেখতে পারে। মসজিদ নির্মাণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে পারে।
মসজিদ পরিদর্শনে আসা মানুষদের বক্তব্য হলো, এই মসজিদ নির্মাণ আজলান ঘরেম অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী বার্তা দিয়েছেন। কেননা মসজিদটি দেখতে যেমন সুন্দর এবং স্বচ্ছ। আর এর মাধ্যমে যে প্রতিবাদ করা হয়েছে, তা বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। সীমান্তে তারের বেড়া দিয়ে মানুষকে অনিশ্চিত মৃত্যু মুখে ঠেলে দেওয়া যেমন কাম্য নয়, তেমনি তারের বাংকারে মানুষকে বন্দী রেখে অত্যাচার নির্যাতন চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন।
অথচ এসব উপাদান ব্যবহার করে শিল্পী আজলান মসজিদ তৈরি করে তাতে শান্তির ইবাদত নামাজের মাধ্যমে নিরাপদ ও নিরাপত্তার বার্তা সমাজে পৌঁছে দিতে চেয়েছেন। কেননা ইবাদত-বন্দেগি সবসময় শান্তির সঙ্গে সংযুক্ত।