রাজু ভাস্কর্যে ফের ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের অবস্থান



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়েছে ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিতরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়েছে ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিতরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফের ঢাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়েছে ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতা-কর্মীরা। এ সময় ‘বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন না করা পর্যন্ত রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান করবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।

অবস্থানকারীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতারা শুনছেন না প্রধানমন্ত্রীর কথা। প্রধানমন্ত্রী বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে যোগ্যদের সমন্বয়ে কমিটি পুনর্গঠনের তাগিদ দিলেও ছাত্রলীগ নেতারা প্রধানমন্ত্রীর কথার তোয়াক্কা করেননি। বরং তারা জাতির পিতার প্রতিকৃতিকে অবমাননা করার জন্য বিতর্কিতদের নিয়ে ফুল দেবেন বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন।

রোববার (২৬ মে) মধ্যরাত থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত অংশের নেতা-কর্মীরা।

এর আগে রোববার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের নবগঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির সবাইকে নিয়ে সোমবার সকালে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হবে বলে জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তির প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া অংশটি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/27/1558915565430.jpg

সোমবার সকালে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পদবঞ্চিতরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে নিজেদের দাবির পক্ষে অনড় রয়েছেন।

এ সময় ডাকসুর সদস্য ও পদবঞ্চিত অংশের নেতা তানভীর হাসান সৈকত বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'এর আগে আমরা যখন আন্দোলন করেছিলাম তখন আওয়ামী লীগের চারনেতা আমাদের প্রতিনিধিদলকে আশ্বাস দিয়েছেন যে তারা আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন। তারা অল্প কয়েকদিনের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করবেন।

এর প্রেক্ষিতে আমরা অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছিলাম। এরপর থেকে আমরা তাদের সাথে বিভিন্নভাবে দেখা সাক্ষাৎ করেছি কিন্তু কোনো সমাধান পাইনি। আমাদের ওপর হামলাকারীদের বহিষ্কার না করে হামলার শিকার হওয়া জারিন দিয়া এবং লিপিকে শোকজ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা থাকলেও সেটারও ব্যবস্থা করা হয়নি।

আজকে (২৭ মে) তারা সকালে রাজাকারের সন্তান, বিবাহিত, মাদকসেবী এবং বিতর্কিতদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের ঘোষণা দেন। এটা আসলে খুবই লজ্জাজনক এবং আমাদের সঙ্গে যে উপহাস করেছে তার স্পষ্ট প্রমাণ। তাই আমরা আর কারো কথা শুনতে চাই না। আমরা এখন একমাত্র আপার (প্রধানমন্ত্রীর) আশায় বসে আছি। আর এই বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে যারা যোগ্য তাদের পদ দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/27/1558915380258.jpg

প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি প্রকাশের প্রায় ১০ মাস পর গত ১৩মে ঘোষণা করা হয় সংগঠনের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ওই দিন সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে সংগঠনের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে কয়েকজন নারী নেত্রীসহ ১০-১২ জন আহত হন। এ ঘটনা নিয়ে আন্দোলনে নামেন পদবঞ্চিতরা। পরে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আশ্বাসে তাঁরা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ান।

   

সিন্ডিকেট থেকে পদত্যাগ করলেন কুবি শিক্ষক



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
সিন্ডিকেট থেকে পদত্যাগ করলেন কুবি শিক্ষক

সিন্ডিকেট থেকে পদত্যাগ করলেন কুবি শিক্ষক

  • Font increase
  • Font Decrease

অ্যাজেন্ডা বহির্ভূত ও বেআইনিভাবে ডিন নিয়োগ দেওয়াকে কারণ দেখিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শেখ মকছেদুর রহমান।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর এ পদত্যাগপত্রটি পাঠান তিনি।

পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘আমার জানামতে গত ১৪ মার্চ অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় অ্যাজেন্ডা বহির্ভূত ও বেআইনিভাবে ডিন নিয়োগ দেয়া হয়েছে। একাধিক সিন্ডিকেট সদস্যের আপত্তি সত্ত্বেও কোনো বিশেষ ব্যক্তিকে সুবিধা প্রদানের জন্য পরিকল্পিতভাবে ডিন মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, যা শুধু দুঃখজনকই নয় বিধি-বহির্ভূতও বটে।’

পদত্যাগপত্রে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘সিন্ডিকেট সভায় মতামত প্রদানের সুযোগ খুবই সীমিত, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মতামত প্রদানের কোনো সুযোগ নেই, এখানে সদস্য হিসেবে থাকা বা না-থাকা একই অর্থ বহন করে। মূলত, আমাদেরকে সভার কোরাম পূর্ণ করার জন্য রাখা হয়েছে। সচেতন নাগরিক হিসেবে যেটা অস্বস্তিকর।'

এ ব্যাপারে অধ্যাপক ড. শেখ মকছেদুর রহমান জানান, ‘আমার দায়িত্ব চলমান অবস্থায় আমি পদত্যাগ করেছি। সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে আমাদের কথা বলার সুযোগ খুব কম দেওয়া হয়। আমাদের মতামত গ্রহণ করা হয় না। এতোদিন পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, এর প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই পদত্যাগ করেছি।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন এ অভিযোগের ব্যাপারে বলেন, ‘সিন্ডিকেট সভায় প্রায় ২০ জনের মতো সিন্ডিকেট সদস্য থাকে। সবাইকে কথা বলার জন্য সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সিন্ডিকেট সভায় সবাই স্বাধীন, সবাইকে মত প্রকাশের সুযোগ দেওয়া হয়। উনারও এটাই লাস্ট সিন্ডিকেট সভা ছিল।’

উল্লেখ্য, গত ০৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক তোফায়েল হোসেন মজুমদার, ০৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মাহবুবুল হক ভূঁইয়া, ১৮ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান এবং ২০ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টর মো. কামরুল হাসান ও শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষক কুলছুম আক্তার স্বপ্না পদত্যাগ করেন।

;

চবিতে সমাবর্তন করতে না পারার গ্লানি নিয়েই বিদায় নিচ্ছেন ভিসি শিরীণ



রেদ্ওয়ান আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
চবিতে সমাবর্তন করতে না পারার গ্লানি নিয়েই বিদায় নিচ্ছেন ভিসি শিরীণ

চবিতে সমাবর্তন করতে না পারার গ্লানি নিয়েই বিদায় নিচ্ছেন ভিসি শিরীণ

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ছয় ছয়বার ঘোষণা দিয়েও একবারও সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারেননি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। এরই মধ্যে নতুন ভিসি নিয়োগের মধ্য় দিয়ে পাঁচ বছরের ’শিরীণ শাসন’র ইতে ঘটতে যাচ্ছে। যে কারণে সমাবর্তনের আয়োজন করতে না পারার গ্লানি কাঁধে নিয়েই বিদায় নিতে হচ্ছে তাকে!

চবিতে নতুন ভিসি নিযুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে ডেপুটেশনে কর্মরত চবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩ এর ১২(২) ধারা অনুযায়ী এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাময়িক সময়ের জন্য তাকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। যোগদানের তারিখ থেকে তার এ নিয়োগ কার্যকর হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের আয়োজন করতে হলে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু ড. শিরীণ আখতার প্রশাসন সে পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। যতবারই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, প্রায় প্রতিবারই কোন না কোন অস্থিরতা দেখা গেছে। তাছাড়া, এ প্রশাসনের সময়ে পুরো বছরই কোন না কোন ঝামেলা লেগেই ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ২৮ বছর পর ১৯৯৪ সালে তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম প্রথম সমাবর্তনের আয়োজন করেন। এরপর ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়, ২০০৮ সালে তৃতীয় এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত হয় চতুর্থ সমাবর্তন। এই সমাবর্তনটি আয়োজন করেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। এরপরে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ২০১৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পরে বিভিন্ন সময়ে ৬ বার সমাবর্তনের ঘোষণা দিলেও তা কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করতে পারেননি। সবশেষ তিনি গত বছর শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল উদ্বোধনের সময় ৬ষ্ঠ বারের মতো সমাবর্তনের ঘোষণা দেন। এছাড়া একই বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক সমিতির সঙ্গে মতবিনিময়ে সমাবর্তনের ঘোষণা দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।

পরিসংখ্যান বলছে, ৭৩-এর অধ্যাদেশে পরিচালিত অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে প্রায় দুই বছরে ১ বার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে প্রায় ৬ বছরে ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ১০ বছরে একবার সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এ হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ১৪ বছরে একবার সমাবর্তন হচ্ছে।

চবিতে সর্বশেষ এবং সর্ববৃহৎ সমাবর্তন হয়েছিল ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি প্রায় ৭ বছর আগে। এতে ২০০৪ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর এবং ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পিএইচডি -এমফিলসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা অংশ নেয়। মোট ৭ হাজার ১৯৪ জন গ্রাজুয়েট। সর্বশেষ সমাবর্তনটি করেছিলেন চবির সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।

এদিকে ৮ বছর ধরে পঞ্চম সমাবর্তনের অপেক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট থেকে তাদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করেছে। প্রতিবছর সমাবর্তনের জন্য বাজেট থাকার পরেও সমাবর্তন আয়োজনের ব্যর্থতায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বেশিরভাগ শিক্ষার্থী।

পঞ্চম সমাবর্তনের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো চবির বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার সমাবর্তনের ঘোষণা দেন ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায়। একই বছর ১৬ই নভেম্বর চবির ৫৬তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ২য় বারের মতো ঘোষণা দেন। এরপর ২০২২ সালের ২৩ জুলাই ৩৪তম সিনেট সভার দ্বিতীয় অধিবেশনে ৩য় বারের মতো আবারো পঞ্চম সমাবর্তন আয়োজনের ঘোষণা দেন। সেই বছরই ১৭ই নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ৫৭ দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চতুর্থবারের মতো পঞ্চম সমাবর্তন আয়োজনের ঘোষণা দেন। পরপর ছয়বার সমাবর্তনের ঘোষণা দেওয়ার পরেও চূড়ান্ত কোনো তারিখ বেঁধে দিতে পারেননি।

শিক্ষকরা বলছেন, সমাবর্তন আয়োজনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু প্রায় প্রতিবারই কোনো না কোনো ধরনের অস্থিরতা দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও দাবি করেছে, বিভিন্ন ব্যাচে সেশন জটের কারণে অনেক শিক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের স্নাতক শেষ করতে পারছে না। সেশন জটের সম্মুখীন শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক সমাবর্তন আয়োজন করা কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাবর্তনের জন্য বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ করলেও সেই অর্থ অন্য খাতে ব্যয় হয়। তবে গত বাজেট অধিবেশনে সমাবর্তন খাতে কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি।

ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের এক শিক্ষার্থী বলেন, অনিয়মিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানের কারণে অনুষদ সদস্যদের মধ্যে একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণে উদাসীনতা রয়েছে। ফলে অধিকাংশ বিভাগে শিক্ষকরা সময়মতো ক্লাস নেন না। সেশন গ্যাপ বাড়ছে। নিয়মিত সমাবর্তন হলে শিক্ষকরা আরও দায়িত্বশীল হবেন। দর্শন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব এবং রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতাই অনিয়মিত সমাবর্তনের কারণ। তবে প্রশাসনের একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা থাকা উচিত।

এ বিষয়ে চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, যেহেতু সমাবর্তন হওয়ার একটা রেওয়াজ রয়েছে, তাই এটা সময়মত হওয়া উচিত। সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের একটা স্বপ্ন। অন্যদিকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, আমি বলব যে, সমাবর্তন নিয়মিত হওয়া উচিত। এটা একটা রুটিন কাজ। এর জন্য প্রশাসনিক উদ্যোগের দরকার হয়। কিন্তু শিরীণ প্রশাসন সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারেননি। আমি মনে করি, এই না পারাটা এ প্রশাসনের অনেক বড় একটি ব্যর্থতা।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য ভিসি অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল কেরলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে, প্রশ্ন থেকেই যায়, চবিতে নতুন উপাচার্য নিয়োগ হওয়া অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের কি পারবেন শিক্ষার্থীদের সমাবর্তনের এই প্রাণের দাবি মেটাতে?

;

অবন্তিকার মৃত্যু: বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লালকার্ড প্রদর্শন



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার বিচার ও যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর করার দাবিতে প্রশাসনকে লাল কার্ড দেখিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে ‘নিপীড়ন বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ এর ব্যানারে আয়োজিত প্রতীকী সমাবেশে এ লাল কার্ড প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, জগন্নাথে যেকোন নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নেব। এখানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল থাকলেও তার কেন কার্যক্রম নেই। এটি কার্যকর করতে হবে। এটিকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। সেখানে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করতে হবে। যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

তিনি আরও বলেন, শুধু কিছু প্রতিশ্রুতি দিলে হবে না। যখন একটা ঘটনা সামনে আসছে, তখন তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হচ্ছে, ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে, আমরা এভাবে আর এগোতে চাইনা, আমরা আরেকটি অবন্তিকাকে দেখতে চাইনা, আরেকটি অংকনকে দেখতে চাই না। আমাদের আন্দোলন ততদিন পর্যন্ত জারি থাকবে, যতদিন পর্যন্ত এটার একটা স্থায়ী সমাধান না হচ্ছে।

মহিউদ্দিন আল আরাবি বলেন, উপাচার্যকে নিয়ে মসজিদে গিয়ে শোক সভা করে ঘটনাটিকে হালকা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের সহপাঠীর মৃত্যু হয়েছে। তাই এ বিষয়ে আমাদের কথা শুনতে হবে।

সমাবেশে ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ সাকিব সোবহান বলেন, প্রক্টরিয়াল বডি করোনার সময় কুকুরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া বরাদ্দ টাকা মেরে খেয়েছে। আজকে সেই প্রক্টরিয়ার বডি নিপীড়ন বিরোধী সেলের নামে ডামি সেল গঠন করে রেখেছে। প্রক্টরিয়াল বডি যখন তখন ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থীদের ধরে নিয়ে মুচলেকা সংগ্রহ করত। এখন থেকে সেই খেলা আর চলবে না। যৌন নিপীড়ন সেলে ছাত্র-শিক্ষকসহ বাহির থেকে ম্যাজিস্ট্রেট এনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নিপীড়ক বিরোধী সেলের নামে যে টর্চার সেল যারা তৈরি করে রেখেছে, সেই প্রক্টর অফিসে আমরা সাতদিনের মধ্যে তালা ঝুলিয়ে দেব।

;

চবির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আবু তাহের



চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের

অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও চবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শতরূপা তালুকদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এমন তথ্য জানা যায়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩ এর ১২ (২) ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও চবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরকে ভাইস-চ্যান্সেলর (উপাচার্য) পদে সাময়িকভাবে দায়িত্ব প্রদান করা হলো।

আরও বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজন মনে করলে যেকোনো সময়ে এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন। ভাইস- চ্যান্সলর পদে তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতনভাতাদি পাবেন। তিনি বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ৪ বছরের জন্য ইউজিসিতে যোগদান করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন ছিলেন।

এর আগে, তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাউথইস্টের উপ-উপাচার্য এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রেজারার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের জীবন বিমা করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবেও কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশ-বিদেশে তার শতাধিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তার রচিত ব্যবসায় প্রশাসনবিষয়ক ১৫টি গ্রন্থ অনার্স এবং মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠ্য হিসেবে পঠিত হচ্ছে।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করা অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের কাঞ্চনা হাইস্কুল মাধ্যমিকের পর চট্টগ্রাম কলেজে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনহা, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের এ এন্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে উচ্চতর শিক্ষা এবং গবেষণা সম্পন্ন করেন তিনি।

কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ১৯৮৫ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি কমার্স কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ২০০৪ সালে ওই বিভাগে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।

;