বন্যার্তদের পাশে জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা
দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা কবলিত অসহায় মানুষের দ্বারে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। 'মানবতার সেবায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়'- এ স্লোগানকে সামনে রেখে উত্তরাঞ্চলের বন্যা কবলিত মানুষের জন্য এগিয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৭ জুলাই) জানা যায়, বানভাসি মানুষদের ত্রাণ বিতরণের লক্ষ্য গাইবান্ধা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি সিয়াম আহমেদ নাসিমের নেতৃত্বে ১৫ জনের একটি প্রতিনিধি টিম গত বুধবার(২৪ জুলাই) রাতে ঢাকা ত্যাগ করে।
সূত্র জানায়, প্রায় ৪৫০টি বন্যাদুর্গত পরিবারকে ত্রাণ সহযোগিতা করা হয়। ত্রাণের প্যাকেটে ছিল চাল, ডাল, স্যালাইন, চিড়া, চিনি, পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট, ইমোটিন ট্যাবলেট ও ম্যাচ।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ত্রাণের প্যাকেট প্রস্তুত করে শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সারাদিন ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে অংশ নেয় সংগঠনটি।
টিমটি তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে গাইবান্ধা সদরের সাধুর আশ্রম, কামারজানী, সুন্দরগঞ্জের চান্দের মোড়, বেলকা, গোবিন্দগঞ্জের এবং ফুলছড়ির অ্যারেন্ডাবাড়ী ও ফলজুপুর ইত্যাদি অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ করে।
এদিকে, বানভাসি মানুষদের জন্য ফান্ড কালেকশনের কাজ করে ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সদস্যরা। সদরঘাট বিভিন্ন জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, রায়সাহেব বাজার, লক্ষ্মীবাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা তোলেন শিক্ষার্থীরা।
ত্রাণ পাওয়ার পর এক বন্যার্ত ফিরোজ মিয়া কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, 'জগন্নাথ ভার্সিটিতে পড়া ছেলেগুলা হামার পাশে আসি দাঁড়াইছে, খুব খুশি হইছি। তাদের জন্য মন ভরে দোয়া করি।'
সংগঠনের সভাপতি সিয়াম আহমেদ নাসিম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'আমাদের সংগঠনটি শিক্ষার্থীদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে গঠিত হলেও নিজ জেলার মানুষের এমন দুঃসময়ে পাশে থাকতে পেরে ভাল লাগছে। 'মানবতার সেবায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়' -এ স্লোগান অব্যাহত থাকবে। শুধু আমরা কেন সারাদেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচিৎ বিপদে পড়া মানুষগুলোর সাথে থাকা। সংগঠনের প্রত্যেক সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তাদের সহযোগিতা ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব হতো না।'
ত্রাণবিতরণ টিমে ছিলেন সৈয়দ হাসান সজিব, আশরাফুল ইসলাম আকাশ, মাহবুব হোসাইন, সামিউল শাওন, ফারহান, জাবির, হাসান, রুবেল, রাতুল ও রোমান।
উল্লেখ্য, উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। গাইবান্ধা জেলার বন্যা পরিস্থিতি এরই মধ্যে ধারণ করেছে ভয়াবহরূপ। ৪২৪টি গ্রামে পানিবন্দি রয়েছে জেলার প্রায় ছয় লক্ষাধিক মানুষ। গাইবান্ধা জেলার ১৮টি জায়গায় পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এবং তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ফলে জেলার সিংহভাগ অঞ্চল এখন পানির নিচে। বন্যার পানিতে ঘরছাড়া হয়েছে প্রায় ছয় লক্ষাধিক মানুষ।