ঢাবিতে ৭৪১ কোটি টাকার বাজেট, গবেষণা খাতে মাত্র ৪.৯৩ শতাংশ
ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৭৪১ কোটি ১৩ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। এই বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ৩৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের মাত্র ৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
তবে তা বিগত বছরের চেয়ে ২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বেতন ভাতায় বরাদ্দ হয়েছে ৪৩২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা যা মোট বাজেটের ৫৮ দশমিক ৪২ শতাংশ।
বুধবার (২৮ জুন) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে এই বাজেট ঘোষণা করা হয়।
পরে তা সিনেট সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে বাজেট পেশ করেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দীন। এসময় প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদসহ সিনেট, সিন্ডিকেট, নির্বাচিত রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ বছর পাশকৃত বাজেটে মেরামত ও সংরক্ষণ খাতে ১.৯৪ শতাংশ (১৪ কোটি ৩৭ লাখ), মূলধন খাতে ৩.৯২ শতাংশ (২৯ কোটি ৫ লাখ), পরীক্ষা সংক্রান্ত খাতে ৯.২৩ শতাংশ (৬৮ কোটি ৪২ লাখ) ও বিবিধ খাতে ২১.৫৬ শতাংশ (১৫৯ কোটি ৭৮ লাখ) টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যয়ভার হিসেবে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭৪১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। কিন্তু বিগত অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৬৬৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
প্রস্তাবিত ৭৪১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকার মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে আসবে ৬২৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খাত থেকে আসবে ৭১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। বাজেটে সম্ভাব্য ঘাটতি ধরা হয়েছে ৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
বাজেট অধিবেশনে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান লিখিত বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সিনেট নিঃসন্দেহে, স্মরণকালের সর্বোচ্চ সংখ্যক সদস্য-সম্বলিত সিনেট। দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি এই মুহুর্তে সিনেটে ডাকসু প্রতিনিধি ব্যতীত সকল ক্যাটাগরির প্রতিনিধি বিদ্যমান রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাজে গতিশীলতা বজায় রেখে মান উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।
প্রথম অধিবেশর শেষে চা বিরতির পর সিনেট সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে উপচার্য ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সিনেট সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে অবাধে যান চলাচল করছে। যা প্রায়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি করছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়টি সমাধানের জন্য উপাচার্য ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি খন্দকার বজলুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অসাধারণ না হয়ে প্রতিনিয়ত সাধারণে পরিণত হচ্ছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নেই, ডাকসু ও সহায়ক শিক্ষা নেই। তাই ডাকসুকে ক্রিয়াশীল করার আহ্বান জানাই।