উপভোগের মন্ত্রে চাপ জিততে চান ফজলে রাব্বী
লম্বা সময় ধরে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েক মৌসুম ভাল পারফরমেন্সও ছিলো। কিন্তু কখনো নির্বাচকদের ‘নজরে’ পড়েননি তিনি। এবার পড়লেন। আয়ারল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে তার খেলা মাঠে বসে দেখেছেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার। সেই সফর শেষে ফজলে রাব্বীর পারফরমেন্সের পাশে বেশ বড়সড় একটা টিক চিহ্ন পড়েছিলো। এশিয়া কাপের দল গঠনের সময়ও প্রাথমিকভাবে তার নাম নির্বাচকদের গুডবুকে ছিলো। কিন্তু অভিজ্ঞদের নিয়ে দল গড়ার প্রেক্ষিতেই ফজলে রাব্বী সেই টুর্নামেন্টে নির্বাচকদের চিন্তার বাইরে পড়ে যান। আরেকবার অপেক্ষার প্রহর বাড়লো রাব্বীর। সেই অপেক্ষা শেষ হল এবারের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে। ১৪ বছর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলার পর জাতীয় দলে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেলেন ফজলে রাব্বী। প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায় ২১ অক্টোবর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে অভিষেক হচ্ছে তার। সোমবার, ১৫ অক্টোবর জাতীয় দলের অনুশীলন ক্যাম্পের প্রথমদিন, সব আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকলো ফজলে রাব্বীর নাম।
এখনো বাংলাদেশের হয়ে কোন ফরমেটের কোন ম্যাচ খেলা হয়নি তার। কিন্তু আলোচনায়-আড্ডায় তিনিই টপে। মুলত জিম্বাবুয়ে সিরিজে তাকে সাকিব আল হাসানের শূণ্যস্থান পুরুণের দায়িত্বটা পালন করতে হবে। ম্যাচে নামার আগেই তাই বাড়তি একটা উত্তাপ নিশ্চয়ই টের পাচ্ছেন রাব্বী। সবাই নিশ্চয়ই তাকে দলে ‘সাকিবের ভুমিকায়’ দেখার অপেক্ষায়! এমনিতেই প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে অভিষেকের ১৪ বছর এখন আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে খেলার দরজা খুলছে মাত্র; তারওপর আবার কাঁধে ‘সাকিবীয় দায়িত্ব!’ চাপের চোটে তো ফজলে রাব্বীর রাতের ঘুমও পালিয়ে যাওয়ার কথা! কিন্তু ভীষণ বাস্তববাদী রাব্বী জানালেন-‘ দলে সাকিব ভাইয়ের রোলটা কি সেটা আমি জানি। সাকিব ভাইয়ের জায়গা তো কারো পক্ষে নেয়া সম্ভব না। আমি মুলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ব্যাটিংটা করতে ভালবাসি। পাশাপাশি আমি দলের প্রয়োজনে বোলিংও করতে পারি। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই বোলিংয়ের রোলটাও পালন করার চেষ্টা করবো। তবে সাকিব ভাইয়ের জায়গা নেয়া না, আমি যেটা পারি সেটাই করার চেষ্টা করবো।’
প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পাওয়া। প্রথমদিনের অনুশীলন। সাকিবের জায়গায় একাদশে তাকে চিন্তা করা। হঠাৎ করে নাকের সামনে একঝাঁক টিভি ক্যামেরার লেন্স। চারপাশ থেকে রিপোর্টারদের প্রশ্ন। মাঠের মাঝখানে দাড়িয়ে যেন রাব্বী, আর সার্চলাইটের তীব্র আলোকচ্ছ্বটার সবটুকুই তার অবয়বে আছড়ে পড়ছে!
-চাপে টলে যাবার মতো অবস্থা কি?
আত্মবিশ্বাসী হাসিতে ভরসা দিলেন যুবক রাব্বী-‘আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। দেখি না কি হয়। আমি তো এখনো খেলিনি। খেললে বুঝা যাবে, আমি কতোটা চাপহীন ক্রিকেট খেলতে পারবো। আমার কাছে কিন্তু চাপের কিছু মনে হচ্ছে না। এই যে আপনাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে, আমি এখন সবকিছুই উপভোগ করছি।’
উপভোগের মন্ত্রেই তাহলে চাপকে জয়ের উপায় মানছেন রাব্বী!
জাতীয় দলের ক্যাম্পে নিজের প্রথমদিনের অভিজ্ঞতা তাকে যা শেখালো-‘খুব ভাল লাগছে, আমি খুব উপভোগ করছি, এই সময়টা। এই মুহুর্তে আমি শুধু চিন্তা করছি নিজের পারফরমেন্স নিয়ে। আমি এত বছর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলেছি, নিজেকে মোটামুটি প্রমান করা হয়ে গেছে ওই পর্যায়ে। এখানে এসে আমি নতুন করে কিছু করতে পারবো না। আমি যেটা পারি, সেটাই করার চেষ্টা করবো।’