যে কারণে এখন সালাউদ্দিন-তরফদার দুই দিগন্তে
একটা সময় একই পথে হেঁটেছেন দু'জন। দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে হবে-একই স্বপ্ন দেখে গেছেন নিরন্তর। সেই সম্পর্ক থেকেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সর্বশেষ নির্বাচনে কাজী সালাউদ্দিনের পাশে ছিলেন তিনি। নির্বাচনে সমন্বয়কের দ্বায়িত্ব পালন করেন তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। সফলভাবে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতেই সব এলোমেলো হয়ে যায়। কিছুটা সময় গড়াতেই সালাউদ্দিন-তরফদার দুই দিগন্তে। বাফুফে সভাপতি ব্যর্থ দাবী করে তার পদত্যাগও চাইছেন তরফদার। গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরছেন সালাউদ্দিনের ব্যর্থতার সাতকাহন।
কিন্তু কেন তাদের এই দূরত্ব? কেনইবা একসঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে দু'জন কাজ করতে পারছেন না? সালাউদ্দিনের সমর্থন থেকে সরে আসার কারণটা বুধবার জানালেন তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব বলছিলেন, ‘যে প্রার্থী উনার বিপরীতে দাঁড়িয়েছিল তার ফুটবল সম্পর্কে টোটালি কোন ধারণাই নেই। ফুটবলটা কিভাবে চলে, কিভাবে বাংলাদেশের ফুটবল পরিচালিত হয়, এ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল না। এসব পরিস্থিতি চিন্তা করে আমরা উনাকে সমর্থন দিয়েছিলাম। এরপর আমরা সালাউদ্দিন সাহেবের সঙ্গে যখন বসেছিলাম। আমি আজম নাসিরসহ আমরা যে গ্রুপটা এই নির্বাচনটা করেছি আমরা বলেছিলাম ফুটবল যেভাবে চলছে এটা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের ফর্মুলাতে ফুটবল চালাতে হবে।’
তরফদার মোঃ রুহুল আমিন আরো জানাচ্ছিলেন, ‘আমরা ২৬টা পয়েন্ট ইশতেহার করেছিলাম। এটা আমি ও নাসির ভাই, বাদল রায়, হারুন ভাইসহ অন্যরা মিলে তৈরি করেছিলাম। পুরো ইশতেহার তৈরি শেষে কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে এনিয়ে আমরা বসেছিলাম। উনাকে আমরা স্পষ্ট বলেছিলাম আপনি এটা দেখেন। আর এভাবেই ফুটবলটা চালাতে হবে। উনি একসেপ্ট করেছিলেন। এরপরই জানানো হয় যে আমরা যদি পাশ করি তাহলে এভাবে ফুটবল পরিচালনা করবো।’
তখন সালাউদ্দিন হ্যাঁ বললেও নির্বাচনের বৈতরণী পার হতেই বেঁকে বসেন। প্রতিশ্রুতি ভুলে বসেন বাফুফে সভাপতি। সাইফ পাওয়ারটেকের কর্ণধার তরফদার মোঃ রুহুল আমিন বলেন, ‘নির্বাচনের পরের দিনই উনি পাল্টে গেলেন। যতো ইশতেহার ছিল সব বাইরে ফেলে দিয়ে আবার সেই পুরনো ধারায় ফুটবলটাকে পরিচালনা করতে শুরু করেন। আবারো তিনি সেই ব্যর্থদের দিয়েই ফুটবলের কমিটি করলেন। যারা বারবার ব্যর্থ হয়েছে তাদেরই কমিটিতে রাখলেন তিনি। আমি বুঝিনা ওরা কী আসলেই ফুটবলের উন্নতি চান? এরপরই আমাদের সাথে উনার বিরোধ শুরু হয়। আমরাও বুঝতে পারি ওদের সাথে আর কাজ করা যাবে না। তখনই স্বাধীনভাবে কাজ করার কথা ভাবতে থাকি আমরা।’
এরপরই তরফদার-আজম নাসিররা মিলে গড়ে তুলেন জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। তাদেরই উদ্যোগে এবার ৪০টি জেলায় লিগ হয়েছে। উঠে এসেছে একাধিক ফুটবলার। তাদের নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করার কথাও শোনালেন তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। যদিও জানেন ঘরোয়া লিগগুলো নিয়মিত না হলে সেই উদ্যোগ পুরোপুরি ভেস্তে যাবে! ফুটবল সেই পেছনেই হাঁটতে থাকবে!
আরো পড়ুন-