সিলেটকে সেরা করতে চান ওয়ার্নার
সংবাদ সম্মেলনে সবার আগে হাজির তিনি। এমন কী দলের কোচ ওয়াকার ইউনিসও তখন পা রাখেন নি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের তুরাগ হলে। সাংবাদিকদের উপস্থিতিও তখন কম। ঘড়ির দিকে তাকালেন ডেভিড ওয়ার্নার। মনে করিয়ে দিলেন ৬টা মানে ঠিক ছয়টা। কিন্তু সংবাদ সম্মেলন ঘড়ির কাঁটা ধরে ঠিক সময়ে শুরু হতে পারল না। এবার এই অস্ট্রেলিয়ান মজা করে বললেন, ‘নিশ্চয়ই ঢাকার ট্রাফিক জ্যামে পড়েছে।’ সিডনির জ্যামের সঙ্গে তিনি মিলও খুঁজে পেলেন কিছুটা। ততোক্ষণে হাজির কোচ ওয়াকার।
সিলেট সিক্সাসের অধিনায়ক বৃহস্পতিবার মুখোমুখি হলেন গণমাধ্যমের। রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেলে অবশ্য কেপ টাউনের সেই বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির ঘটনাটাও উঠে এলো অবধারিতই ভাবে। গত মার্চের ওই বল বিকৃতি কাণ্ডেই যে তিনি নিষিদ্ধ এক বছরের জন্য। শুধু তিনি নন, সেই ঘটনায় আরেক খল নায়ক স্টিভেন স্মিথও খেলছেন এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে। তার দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।
সেই অধিনায়কের বিরুদ্ধেও লড়তে হবে এবারের বিপিএলে। অস্ট্রেলিয়ান দলের সতীর্থ ও সাবেক অধিনায়ক স্মিথের মুখোমুখি হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই সোজা ব্যাটে খেললেন ওয়ার্নার। বলছিলেন, ‘দেখুন, আমি এটিকে কেবল একটি সাধারণ ম্যাচ হিসেবেই দেখছি। আমাদের কাছে এটি নিছক একজন ক্রিকেটারের সঙ্গে লড়াই নয়। লড়াইটা হবে এগারজনের সঙ্গেই। আর আমি এটা নিশ্চিত করতে চাই যে আমাদের বোলাররা যেন স্মিথকে আগেভাগে আউট করতে পারে। এরপর বাকিদের বিষয়টা দেখব।’
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রায় শেষের পথে ওয়ার্নারের। মার্চেই আবারো জাতীয় দলে খেলা নিয়ে বিধি নিষেধ শেষ হবে। অবশ্য নির্বাসনের সময়টা মন্দ কাটেনি তার। জানাচ্ছিলেন, ‘আমার জন্য সময়টা ভালই ছিল। পরিবারের মানুষদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি। মাঠের বাইরে বসে আরো ভাল মানুষ হওয়ার চেষ্টাটাও ছিল। সবচেয়ে বড় কথা একজন বাবা ও স্বামী হিসেবে বাড়িতে থেকেছি। এখন আবারো ক্রিকেটে ফিরলাম। এখন অবশ্যই আমার লক্ষ্য সিলেট সিক্সার্সকে শীর্ষে নিয়ে যাওয়া।’
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসরে সাব্বির রহমান-লিটন দাস-নাসির হোসেনদের নিয়ে গড়া সিলেটের নেতৃত্ব দেবেন ওয়ার্নার। এর আ্গে বুধবার রাতে ঢাকায় পা রাখেন এই অজি ক্রিকেটার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিলেটের কোচ ও পাকিস্তানের কিংবদন্তি সাবেক পেসার ওয়াকার ইউনুসকে সঙ্গে নিয়ে কথা বলেন গণমাধ্যমের সঙ্গে।
প্রথমবার ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক ক্রিকেট খেলতে বাংলাদেশে এসেছেন ওয়ার্নার। এনিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত এই অজি ব্যাটসম্যান। জানাচ্ছিলেন, ‘আমি এখানে আসতে পেরে এবং এর (বিপিএল) অংশ হতে পেরে খুব উচ্ছ্বসিত। আমি মনে করি দারুণ এই প্রতিযোগিতাটিতে খুব ভালো ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাব।’
এখানেই শেষ নয়, সিলেট সিক্সার্সকে নিয়েও খুশি তিনি। পাশাপাশি ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট নিয়ে জানাচ্ছিলেন, ‘দেখুন, প্রতিটি দলেই কিছু অসাধারণ মাপের অভিজ্ঞ তারকা রয়েছেন। সেই সঙ্গে আছেন স্থানীয় উঠতি খেলোয়াড়রাও। আমি আশা করি এরা একদিন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের জার্সিতে খেলতে পারবে এবং তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। আমিও ঠিক এভাবেই আমার দেশের হয়ে খেলেছি। আমি আইপিএলেও (ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ) খেলেছি। আর সেখানে অনেক তরুণ প্রতিভাকে উঠে আসতে এবং দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে দেখেছি। আমার মতে এটাই বিপিএলের সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ দিক।’