শেষের ক্যারিশমায় সিলেটের জয়
শুরুটাই সব নয়, শেষটাই আসল!
সিলেট সিক্সার্স ও চিটাগং ভাইকিংসের ম্যাচটা সেই সত্যই জানান দিয়ে গেলো। চরম বাজে শুরুর পরও ৫ রানে ম্যাচ জিতলো সিলেট সিক্সার্স। কারণ শেষটা যে তাদের দুর্দান্ত হলো। আর দাপুটে শুরুর পরও ম্যাচ হেরে গেলো চিটাগং ভাইকিংস; কারণ তারা শেষটাই যে করতে পারলো না!
শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে চিটাগংয়ের প্রয়োজন ছিলো ২৪ রান। আল আমিন হোসেনকে পিটিয়ে দুই ছক্কায় ব্যবধান অনেক কমিয়ে আনেন ফ্রাইলিঙ্ক। ২ বলে ম্যাচ জিততে চাই ৯ রান। নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হলেও রোবি ফ্রাইলিঙ্কও পারলেন না ফিনিসার হতে। শেষ দুই বলে তিনের বেশি রান নিতে পারলেন না ফ্রাইলিঙ্ক।
ম্যাচ জিততে ১৬৯ রান তাড়া করতে নামা চিটাগং ভাইকিংসের শুরুটা হয়েছিলো চমৎকার। ৫.৩ ওভারে স্কোরবোর্ডে জমা ১ উইকেটে ৫০। কিন্তু ওপেনার ক্যামেরুন দেলপোর্টের রান আউটের পরই যেন রানওয়ে থেকে ছিটকে গেলো চিটাগংয়ের ইনিংস! ভাল খেলতে থাকা মোহাম্মদ আশরাফুলও উইকেট খোয়ালেন। নিরীহ দর্শন বলে আউট হলেন মুশফিক রহিম। ১৩ ওভারে একশ রানের নিচে ৫ উইকেট হারানোর পর চিটাগং ভাইকিংসের ধুঁকে চলা শুরু।
তারপরও স্কোর ৭ উইকেটে ১৬৩ রানে পৌছালো তার মুল কৃতিত্ব দুই বিদেশির; সিকান্দার রাজা ও রোবি ফ্রাইলিঙ্কের। তবে ফিনিংসটা যে তারাও দিতে পারলেন না। শেষ ৩ ওভারে জেতার জন্য চিটাগংয়ের প্রয়োজন দাড়ায় ৪১ রানের। শেষের কঠিন কাজটা ফ্রাইলিঙ্ক অনেক সহজ করে এনেছিলেন। কিন্তু শেষ ওভারের বাধাটা টপকাতে পারলে না চিটাগং ভাইকিংস।
৪ ওভারে ২৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সিলেট সিক্সার্সের পেসার তাসকিন আহমেদ ম্যাচের সেরা বোলিং পারফর্মার।
টসে জিতে ব্যাট করতে নেমেই ম্যাচের প্রথম ১৬ বলেই সিলেট সিক্সার্সের ৩ উইকেট নেই। স্কোরবোর্ডে জমা তখন মোটে ৬ রান! ইনিংস শেষে সেই দলই পৌছে গেল ১৬৮ রানে! শুরুর বিপদ কিভাবে কাটিয়ে বড় স্কোর গড়তে হয়-সেই উদাহরণ তৈরি করে দেখালেন ডেভিড ওয়ার্নার। ইনিংস ওপেন করতে নেমেই দেখলেন অন্যপাশে তিন সতীর্থের আসা-যাওয়া! লিটন দাস ০, নাসির হোসেন ৩ এবং সাব্বির রহমান ০। সেই দলকে বিপদের গর্ত থেকে উদ্ধার করে ম্যাচ জয়ী স্কোরে পৌছে দিয়ে ফিরলেন ওয়ার্নার।
৪৭ বলে ওয়ার্নারের ৫৯ রানের ইনিংসে বাউন্ডারি মাত্র দুটি। ছক্কা মোটে একটি। কঠিন পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দিতে হয়-ওয়ার্নারের ইনিংস সেই শিক্ষাই দিয়ে গেল। দল উদ্ধারের এই মিশনে ওয়ার্নার বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবে পেলেন আফিফ হোসেন এবং নিকোলাস পুরানকে। আফিফের ব্যাট হাসল ২৮ বলে ৪৫ রানে। নিকোলাস পুরান টানা দ্বিতীয় ম্যাচেও দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখালেন। সমান তিন বাউন্ডারি ও ছক্কায় ৩২ বলে তার হার না মানা ৫২ রান সিলেট সিক্সার্সকে এই ম্যাচে ১৬৮ রানের যে স্কোর এনে দিল তার নাম-নিরাপদ সঞ্চয়!
সংক্ষিপ্ত স্কোর: সিলেট সিক্সার্স: ১৬৮/৫ (২০ ওভারে, ওয়ার্নার ৫৯, আফিফ ৪৫, পুরান ৫২*, অলক ২*, ফ্রাইলিঙ্ক ৩/২৬)। চিটাগং ভাইকিংস: ১৬৩/৭ (২০ ওভারে, দেলপোর্ট ৩৮, আশরাফুল ২২, সিকান্দার রাজা ৩৭, ফ্রাইলিঙ্ক ৪৪*, তাসকিন ৪/২৮, অলক ২/৬)। ফল: সিলেট সিক্সার্স ৫ রানে জয়ী।