হ্যামিল্টনে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং সুখস্মৃতি
ওয়ানডে সিরিজে ধবল ধোলাই। ৩-০ তে হার। ব্যাট হাতে সেই তিন ম্যাচে বলার কোন রান করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২৮ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার থেকে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু। আর এই সিরিজে শুধু বাড়তি আরেকটি বড় দায়িত্ব পড়েছে ঘাড়ে; অধিনায়কত্ব! নিয়মিত টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল ইনজুরিতে। ওয়ানডে সিরিজে রান নেই। তারওপর বিদেশের মাটিতে টেস্টে অধিনায়কত্বের গুরু দায়িত্ব। সবকিছু মিলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জন্য ক্রিকেটীয় চাপ একটু বেশিই অনুভূত হওয়ার কথা।
কিন্তু সিরিজের প্রথম টেস্ট হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে বলেই ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ চাপ সরিয়ে সুখস্মৃতি উপভোগ করতে পারেন!
নিউজিল্যান্ডের এই মাঠ যে তাকে ব্যাটসম্যান হিসেবে দু’হাত ভরে উজাড় করে দিয়েছে! সেটা যেমন টেস্ট ম্যাচে ঠিক তেমনই ওয়ানডে ক্রিকেটেও। ৪৩ টেস্টের ৮১ ইনিংসে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি তিনটি। লোয়ার মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরির এই রেকর্ডটা খুব একটা ‘বড়’ কিছু নয়। তবে এই তিন সেঞ্চুরির মধ্যে যখনই প্রথমটির প্রসঙ্গ আসবে তখনই হ্যামিল্টনের সেডন পার্ক নিয়ে আলাদা একধরনের নষ্টালজিক সুখ-আনন্দে মোহিত হবেন মাহমুদল্লাহ রিয়াদ। ২০১০ সালের ফেব্রæয়ারিতে এই সেডন পার্কেই টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। আট নম্বরে ব্যাট করতে খেলেন ১১৫ রানের ঝলমলে ইনিংস। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে সপ্তম উইকেট জুটিতে ১৪১ রান বাংলাদেশকে সেই ম্যাচে ৪০৮ রানের বড় সঞ্চয় এনে দেয়। দ্বিতীয় ইনিংসে এই দুজনের ব্যাট থেকে ভালো নির্ভরতা পায় বাংলাদেশ সেই ম্যাচে। সাকিব দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ১০০ রান। মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ৬৭ বলে ৪২ রানের ইনিংস। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই ম্যাচে হার বাঁচাতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে লড়াইয়ের একটা ভালো চেষ্টা এবং নিজের অভিষেক সেঞ্চুরির জন্য মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হ্যামিল্টনের সেই ম্যাচকে সুখস্মৃতি হিসেবে রাখতেই পারেন।
নিউজিল্যান্ডের হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে এখন পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের খেলা সেটাই একমাত্র টেস্ট। ২৮ ফেব্রæয়ারি যখন অধিনায়ক হিসেবে সিরিজের প্রথম টেস্টে সেই মাঠে টস করতে নামবেন তখন নিশ্চয়ই ৯ বছর আগের এই মাঠে গড়া কীর্তি তাকে সুখের পরশ দেবে।
এই মাঠে শুধু কি টেস্ট ম্যাচ? এখানে ওয়ানডে ম্যাচে ব্যক্তিগত সাফল্যের হাসিতে উজ্জ্বল হয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট। ২০১৫ সালের ১৩ মার্চ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে সেডন পার্কে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেটা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। প্রথমটাও ছিলো অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। চারদিন পরেই বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির মালিক হয়ে গেলেন সেডন পার্কে। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সেঞ্চুরির সংখ্যা তিনটি। যার প্রথম দুটির মালিকই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ!
হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে এখন পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন একটি টেস্ট ম্যাচ ও একটি মাত্র ওয়ানডে। দুই ফরমেটের এই দুই ম্যাচেই তার ব্যাটে সেঞ্চুরির হাসি! টেস্টের দুই ইনিংসে ১১৫ ও ৪২। ওয়ানডেতে ১২ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ১২৩ বলে অপরাজিত ১২৮ রান!
সেঞ্চুরির মাঠে এবার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পারফরমেন্স কেমন হবে?