ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা জোরদারের আশ্বাস বিসিবির
বড় ধাক্কা খেয়েছেন ক্রিকেটাররা। ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলা থেকে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছে পুরো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে বিদেশ সফরে বাংলাদেশ দলের অপ্রতুল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। সামনের সফরগুলোতে যাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা যায়, সেই উদ্যোগ এবং পরিকল্পনা সফল করার আশ্বাস দিয়েছে বিসিবি।
সোমবার (১৮ মার্চ) বিসিবি কার্যালয়ে এ প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলছিলেন, ‘একেক দেশে নিরাপত্তার ধারণাটা একেক রকম। আমাদের দল যখন বিদেশ সফরে যায় তখন সেই সব দেশ চিন্তা করে আমাদের দলকে কেউ কিছু করবে না। যত ভয় সব শুধু সেটা তাদের নিজেদের নিয়ে। তাদের চিন্তা হলো আমাদের আবার মারবে কে? মারলে ওদেরকেই মারবে! সেই ধারণা অনুযায়ী তারা ভাবে, নিরাপত্তাটা ওদেরই বেশি প্রয়োজন। তবে ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে এই ঘটনা ঘটার পর থেকে এখন ক্রিকেটের সর্বত্র নিরাপত্তার বিষয়টি বাড়তি প্রাধান্য পাবে। চিন্তা-ভাবনাটা বদলাবে। এখন সবার জন্যই নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হবে।’
নিরাপত্তা জোরদারের সেই পদ্ধতিটা কি হবে? বা বিসিবি এই ইস্যুতে নতুন কি পরিকল্পনা নিতে চলেছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে বিসিবি বস্ জানান, ‘দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজের সময় যখন উভয় বোর্ডের মধ্যে পারস্পারিক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয় তখন সেখানে পরিস্কার লেখা থাকে- স্বাগতিক দেশ সমস্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। প্রয়োজনে তারা নিজ দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো বাড়াবে। কিন্তু সেটা শুধু তাদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। তবে এখন থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই নিরাপত্তার ব্যাপার শুধু অন্যের ওপর ছেড়ে দেব না। আমাদের নিজের পক্ষ থেকেও তদারকি করা হবে। শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে যে নিরাপত্তা অটুট আছে। আমরা ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা যাতে আরো বাড়ানো যায় সেটা নিয়ে বোর্ডের মধ্যে আলোচনা করছি। এটুকু বলতে পারি ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার বিষয়টি আগের চেয়ে আরো ভালো হবে।’
নিউজিল্যান্ডের মতো শান্তিপ্রিয় একটি দেশে এমন ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটবে, সেটা ছিল মূলত সবার চিন্তারও বাইরে। তবে এই ঘটনায় বিসিবি ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা প্রশ্নে আরো সতর্ক হবে বলে জানান নাজমুল ইসলাম পাপন।
তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট দলের এবারের সফরে আমি নিজেকে ছিলাম তিনদিন। আমি তো ওখানে কোন পুলিশই দেখিনি। হোটেল বা অন্য কোথাও কোনো পুলিশই চোখে পড়েনি। আসলে ওই দেশটাই এমনই হয়তো। আর ওখানে পুলিশ মসজিদে পাহারা দেবে সেটা তো কল্পনাই করা যায় না। তবে ক্রাইস্টচার্চের এই ঘটনা আমাদের সবার জন্যই চোখ খুলে দেয়ার মতো একটা ঘটনা। নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের নতুনভাবে চিন্তা ভাবনার দিগন্ত প্রসারিত করেছে এই ঘটনা। কোনো দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে যদি আমরা মনে করি যে বাড়তি কোনো কিছু আমাদের করতে হবে তখন আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নেব। এখন থেকে কোথাও সফরের আগে সেই দেশের বোর্ডের কাছ থেকে ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার বিষয়ে তাদের পরিকল্পনা কী, তার একটা বিস্তারিত রিপোর্ট আমরা চাইব। তারপর সেই অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’