জেসন রয়ের সেঞ্চুরি, বিশাল সঞ্চয়ের পথে ইংল্যান্ড
টসে হেরে ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ুন মরগান দুঃখ করছিলেন-‘আমিও টসে জিতলে এই উইকেটে আগে বোলিংই বেছে নিতাম।’
সবুজ উইকেট। সকালের সতেজ বাতাস। একেবারে নতুন উইকেটে ম্যাচ। এমন তেজি আবহাওয়া ও উইকেটে যে কোনো অধিনায়ক আগে বোলিংই বেছে নিবেন। তবে আগে ব্যাটিং করেও এই ম্যাচে ইংল্যান্ডের শুরুটা যে দুর্দান্ত হলো তাতে মরগান টস হারার দুঃখ সম্ভবত ভুলে গেছেন। এই রিপোর্ট লেখার সময় ২৮ ওভারে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিলো ১ উইকেটে ১৭৫ রান।
যেভাবে এবং যে গতিতে ইংল্যান্ডের রান সামনে বাড়ছিলো তাতে এই ম্যাচে বিশাল সঞ্চয়ের পথেই ছিলো স্বাগতিকরা। তিনশ তো বটেই সাড়ে তিনশ ছড়ানোর প্রাথমিক কাজ বেশ ভালভাবেই সুসম্পন্ন করে ফেলেছিলো তারা।
ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে ৫০ রান এলো অষ্টম ওভারেই। কোনো ক্ষতি ছাড়া ওপেনিং জুটির সঞ্চয় দাড়ালো ১০০ রানে। তাও মাত্র ১৫ ওভারে! দুই ওপেনার কম বলে বেশি রান করলেন। জেসন রয়ের হাফসেঞ্চুরি এলো মাত্র ৩৮ বলে, ৭ বাউন্ডারি ও সাইফুদ্দিনকে একটি ছক্কা হাঁকিয়ে। জনি বেয়ারস্টোর হাফসেঞ্চুরি পুরো ৪৮ বলে। নিজের দ্বিতীয় স্পেলে বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে মাশরাফি ম্যাচে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দিলেন। তবে অপর ওপোনার জেসন রয় ঠিকই সেঞ্চুরি তুলে নিলেন। ৯২ বলে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি পেলেন রয়। ওয়ানডেতে এটি তার নবম সেঞ্চুরি।
সাকিব বল হাতে ইনিংসের সূচনা করেন। ইংল্যান্ড ইনিংসের ২৭ ওভারের মধ্যে সাকিবেরই সাত ওভার শেষ। সম্ভবত শেষের ওভারগুলো পেসারদের জন্যই জমা রেখেছিলেন মাশরাফি।
ম্যাচের আগেরদিন বৃষ্টিতে মাঠ ভেজা থাকায় কোনো দলই ওপেন ফিল্ডে অনুশীলন করতে পারেনি। সেই সমস্যা নিয়ে মাশরাফি বলছিলেন-‘এখানে ম্যাচে আগে আমার অনুশীলনের বেশ প্রয়োজন ছিলো। মাঠে বোলিংয়ে যা করতে চাইছি, সেটা পারছি না। অনুশীলনে সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠার একটা সুযোগ ছিলো। রিদম ফিরে পাওয়ার একটা ব্যাপার-স্যাপার ছিলো। কিন্তু বৃষ্টি সমস্যা বাড়ালো।’
বিশ্বকাপে নিজের ফর্ম নিয়ে কোনো লুকোছাপাও করলেন না অধিনায়ক-‘জানি, আমি এখন সেরা ছন্দে নেই। তবে ফিরে আসার চেষ্টাই আছি।’
কার্ডিফে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগের চার ম্যাচে মাশরাফির ছিলেন উইকেট শূন্য। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে টানা চার ম্যাচে উইটেক শূন্য থাকার ঘটনা মাশরাফির জন্য অবশ্য নতুন কিছু নয়। আগেও তিনবার এমন দুঃসময় দেখেছেন তিনি। টানা পাঁচ ম্যাচে উইকেট শূন্য থাকার ‘রের্কড’ এর আশঙ্কা নিয়ে কার্ডিফে খেলতে নামেন মাশরাফি। তবে সেই আশঙ্কা তাড়িয়ে মাশরাফি এই ম্যাচে দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন।
নিজের প্রথম স্পেলে অবশ্য মাশরাফি কোনো উইকেট পাননি। দ্বিতীয় স্পেলে সাফল্যের দেখা পান। ইংলিশ ওপেনার জনি বেয়ারস্টোকে ফেরান। গুডলেন্থে পড়া বল ডিফেন্স করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় বল লাগে তার। ক্যাচ উঠে। শর্ট কাভারে সামনে ঝাঁপিয়ে চমৎকার কায়দায় ক্যাচ ধরেন মেহেদি হাসান মিরাজ। চলতি বিশ্বকাপে তিন ম্যাচে এটি মাশরাফির প্রথম উইকেট।