৩৩৭ রানে থামল ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ঝড়
ইংল্যান্ডের ব্যাটিংকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রথমে দেখেশুনে সামনে বাড়া। মাঝে তেঁড়েফুড়ে হাঁকানো। উইকেট জমা রেখে শেষে আরেকবার বলের ‘সুতো খোলা’ ব্যাটিং! এই সংজ্ঞার ব্যাটিং করে ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ড ৫০ ওভারে রান তুললো ৭ উইকেটে ৩৩৭।
ওয়ানডে ক্রিকেটে এরচেয়ে বেশি রান তাড়া করে ম্যাচ জেতার কৃতিত্ব আছে ভারতের। তবে বিশ্বকাপের মাঠে এখন পর্যন্ত কোনো দল এতো বেশি রান তাড়া করে ম্যাচ জিততে পারেনি।
নতুন সেই রেকর্ডটা কি তাহলে করছে ভারত? এই ম্যাচের দিকে এমন কৌতুহল ও আশা নিয়ে তাকিয়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। ভারতের জয়ে যে এই তিনদলেরও সেমি-ফাইনালের স্বপ্ন আরেকটু সবুজ হবে।
এজবাস্টনের উইকেটকে সাধারণ পেস বোলারদের সহায়ক মানা হয়। তবে এই উইকেটে ব্যাটিংয়ের সামান্য সময় বাদে আর কখনোই মনে হয়নি ভারতীয় বোলাররা এখান থেকে ‘কিছু’ পাচ্ছে। আসলে যা পাওয়ার তার সবটুকুই আদায় করে নিলো ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা।
টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা যা করলো তাকে এককথায় বলা যায়- বিধ্বংসী ব্যাটিং! দুই ওপেনার জ্যাসন রয় ও জনি বেয়ারস্টোর ওপেনিং জুটিতেই এই ম্যাচের ব্যাটিংয়ের তাল লয় ঠিক করে ফেলে ইংল্যান্ড। ওপেনিং জুটিতে জমা হয় ১৬০ রান। তাও আবার মাত্র ২২.১ ওভারে। এই সময় ওভার প্রতি ইংল্যান্ডের রান সাতের ওপরে! পুরোই টি-টুয়েন্ট স্টাইলের ব্যাটিং!
বেয়ারস্টো বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার জন্য ভারতের বোলিংকেই বেছে নিলেন! ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার অষ্টম সেঞ্চুরি। ১০৯ বলে তার ১১১ রানের সেঞ্চুরির ইনিংসে বাউন্ডারি ১১টি। ছক্কা ৬টি। সঙ্গী ওপেনার জ্যাসন রয় ইনজুরি সারিয়ে একাদশে ফিরেই দলকে কক্ষপথে ফিরিয়ে আনলেন। ৫৭ বলে জ্যাসন রয়ের ইনিংস শেষ হলো ৬৬ রানে। কুলদ্বীপের বলে ম্যাচে বদলি খেলোয়াড় রবিন্দু জাদেজা মাটি থেকে ইঞ্চিখানেক ওপরে যে ক্যাচটি নিলেন- সেটা এই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ক্যাচের মর্যাদা পাবে।
বেয়ারস্টো সেঞ্চুরি করে ফিরে আসার পর ৩০ থেকে ৪০ ওভার পর্যন্ত ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ে একটু সতর্ক হলো। শেষের জন্য জমা বাড়াতেই এই সময় উইকেট হাতে রাখার দিকেই মনোযোগ বেশি দিলেন জো রুট ও বেন স্টোক। এই দুই অভিজ্ঞের জুটিতেও ইংল্যান্ড পেলো ৭০ রান। তাও আবার মাত্র ১০.৪ ওভারে।
ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের ফিনিসিংটা দিলেন বেন স্টোকস। শুরুটা ধীরস্থির ভাবে করলেও স্টোকসে শেষটায় রীতিমতো ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন। শেষ ওভারে বুমরার বলে আউট হওয়ার আগে মাত্র ৫৪ বলে তার ৭৯ রানের ইনিংস ইংল্যান্ড এই ম্যাচে স্বাস্থ্যবান সঞ্চয় এনে দিলো।
এই ম্যাচে ভারতের দুই স্পিনার চাহাল ও কুলদ্বীপ ভীষণ খরুচে। চাহালা ১০ ওভারে খরচা গুনেন ৮৮ রান। কুলদ্বীপ কোনো মতো একটি উইকেট পেলেও ১০ ওভারে রান ব্যয় করেন ৭২! মোহাম্মদ সামী ও জাসপ্রিত বুমরার বোলিংকেই শুধু কিছুটা সমীহ করে ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপটা বেশ ভালো যাচ্ছে মোহাম্মদ সামির। আফগান ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পেলেন ৬৯ রানে ৫ উইকেট।