তখন ফিলিপ হিউজকে মনে পড়েছিল স্মিথের!
লর্ডস টেস্টে জোফরা আর্চারের বাউন্সারে ঘাড়ে চোট নিয়ে পড়ে যাওয়ার পর স্টিভেন স্মিথের মাথায় প্রথম চিন্তায় এসেছিলো ফিলিপ হিউজের নাম! পাঁচ বছর আগে ক্রিকেট মাঠে এমনই এক বাউন্সারে ঘাড়ে চোট পেয়ে মারা যান স্মিথের সতীর্থ ফিলিপ হিউজ।
২০১৪ সালে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শেফিল্ড শিল্ডের সেই ম্যাচে স্টিভেন স্মিথ খেলেননি। মাথায় বলের আঘাত লাগার পর অ্যাম্বুলেন্সে করে সঙ্গে সঙ্গে হিউজকে হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। কোমা থেকে আর ফিরতে পারেননি হিউজ।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ফিলিপ হিউজের স্মরণে তার একটি আবক্ষ মুর্তি ও ফলক স্থাপন করা হয়েছে।
সৌভাগ্যের বিষয় স্টিভেন স্মিথ বাউন্সারের চোট সামলে উঠেছেন। সিরিজের চতুর্থ টেস্টের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন তিনি। লিডসে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট মিস করতে হয়েছে তাকে। স্মিথ লর্ডসে আর্চারের বাউন্সারের পরের সময় প্রসঙ্গে বলছিলেন-‘ ঘাড়ে চোট লাগার পর সম্ভবত আমার প্রথমেই কয়েক বছর আগে ফিলিপ হিউজের কথা মনে পড়ে যায়। তবে উঠে দাড়িয়ে বলতে থাকি-আমি ঠিক আছি। চোট নিয়ে মাঠ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিলো, সেজন্য একটু কষ্ট লাগছিলো। তবে সেদিন বিকেলের মধ্যেই আমি মানষিক ধাক্কাটা সামলে উঠেছিলাম।’
শারীরিক এবং মানষিকভাবে নিজে ফিট ঘোষণা করার পর স্মিথ যখন আবার মাঠে ব্যাট করার জন্য প্রস্তুত নিচ্ছিলেন ঠিক তখনই আবার পুরো শরীর এবং মস্তিস্কে তার ঝিম ধরার একটা ভাব আসে। অতিরিক্ত মদ গিলে ফেললে পুরো মস্তিস্কে যে রকম প্রতিক্রিয়া হয়- তেমন একটা ঘোরের মধ্যে পড়েন স্মিথ তখন!
সেই প্রসঙ্গে স্মিথ বলছিলেন-‘ মনে হচ্ছিলো আমি বোধহয় আগের রাতে ছয়টা বিয়ারের বোতল গলায় ঢেলেছি! পরের কয়েকদিনও একই রকম ঘোরের মধ্যে আমাকে যেতে হয়েছে। দারুণ জমজমাট হেডিংলি টেস্ট ম্যাচটা আমি মিস করলাম।’
সেই চোট থেকে সেরে উঠার পর স্মিথকে আরো অনেকগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার অনুশীলন নেটে মিচেল মার্শ ও মাইকেল নেসারের ফাস্ট বোলিংয়ের মোকাবেলা করতে হয়েছে তাকে। চতুর্থ টেস্টের আগে একটা ট্যুর ম্যাচে খেলবে অস্ট্রেলিয়া। স্মিথ সেই ম্যাচে খেলবেন। বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে এই ম্যাচ।
বাউন্সারের চোট থেকে ঘাড় বাঁচাতে হেলমেটের সঙ্গে স্টেমগার্ড লাগানো একটা নতুন ধরনের আবরন নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামতে হবে স্মিথকে। এই নতুন ধরনের গার্ড আগেও পরে খেলেছিলেন তিনি। কিন্তু এই গার্ড পরে খেলতে নামলে একটা খচখচানি ভাব থেকে যায়। এটা ঠিক আরামদায়ক কিছু না। তবে স্মিথ বলছেন-‘ এই গার্ড পরে খেলাটা একসময় বাধ্যতামুলকই হয়ে যাবে। তাই আগেভাগে এটা নিয়ে খেলার অভ্যস্থতা গড়ে তুলতে চাই আমিও।’
যে ক্রিকেটার জুতোর লম্বা ফিতে যাতে দেখা না যায় সেজন্য সেটা পায়ের গোড়ালির সঙ্গে বেঁধে রাখেন তার জন্য ঘাড়ের পাশে স্টেমগার্ড নিয়ে খেলাটা তো ঝক্কি মনে হবেই!
তবে নিরাপত্তার স্বার্থে সবকিছুই মেনে নিতে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই অধিনায়ককে।