জয়তু টাইগ্রেস নাহিদা
৩২ নম্বর জার্সি নিয়ে তিনি বাঘিনীর মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন ক্রিকেট ময়দানে। নাহিদা তার নাম। বাংলাদেশের প্রমীলা ক্রিকেটারদের ঐতিহাসিক বিজয়ের অন্যতম নায়িকা তিনি।
ফাইনালে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা দলের উদ্বোধনী বোলার কিশোরগঞ্জের মেয়ে নাহিদা আক্তার। ভারতকে ১১২ রানে আটকে রাখতে সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং করেছেন এই টাইগ্রেস। তার কৃতিত্বে কিশোরগঞ্জ ও কুলিয়ারচরে বইছে উচ্ছ্বাস।
বামহাতি অর্থোডক্স বোলার নাহিদা আক্তারের জন্ম ২০০০ সালের ২রা মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার দ্বাড়িয়াকান্দি গ্রামে। তার বাবার নাম মো. হামজু ভূঁইয়া। বেড়ে ওঠা রাজধানী ঢাকায়। তথাপি বাড়ির সাথে তাদের পরিবারের রয়েছে নাড়ির টান।
ঐতিহাসিক ফাইনালে চার ওভার বোলিং করে কোন উইকেট না পেলেও ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সমীহ আদায় করেন তিনি। দিয়েছেন মাত্র ১২ রান। তার করা ২৪ বলের মধ্যে ১৬টিই ডট বল ছিল। ভারতকে চেপে ধরতে নাহিদার বোলিং মন্ত্রের মতো কাজ করেছিল।
ভারতীয় ইনিংসের প্রথম ওভারে নাহিদা আক্তার বাংলাদেশের হয়ে উদ্বোধনী বল করেন। তিনি চারটি ডট বল আদায় করে মাত্র দুই রান দেন। ইনিংসের তৃতীয় ওভার ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে নাহিদা আক্তার ছিলেন আরো মিতব্যয়ী। পাঁচটি ডট বল আদায় করে দেন মাত্র এক রান। নাহিদার বোলিং ফিগার হয় ২-০-৩-০। পঞ্চম ওভারে ও নিজের তৃতীয় ওভারে নাহিদা আক্তার একটি ওয়াইডসহ দেন তিন রান। এই ওভারেও ডট বল ছিল চারটি।
দ্বিতীয় স্পেলে নাহিদা ছিলেন আরো উজ্জ্বল। ইনিংসের ষোড়শ ওভার ও নিজের চতুর্থ অর্থাৎ শেষ ওভারে নাহিদা দেন ৬ রান। এই ওভারেও তিনি তিনটি ডট বল আদায় করে নেন। নাহিদা আক্তারের ইকোনমি রেট ছিল সবচেয়ে কম ৩.০০।
ক্রিকেট আর নাহিদা যেন এক ও অভিন্ন। ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে করাচিতে অনুষ্ঠিত খেলায় আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় নাহিদা আক্তারের। মহিলাদের আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট দলে বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় ছিলেন নাহিদা আক্তার। তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর ২১২ দিন।
অভিষেকে প্রথম তিনটি টি-টুয়েন্টি ম্যাচের প্রত্যেকটিতেই তিনি দুইটি করে উইকেট পান এবং বরাদ্দকৃত সবগুলো ওভার কুশলতার সাথে সম্পন্ন করেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষেই ২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিষেক হয় নাহিদা আক্তারের।
তারপর আর পিছনে তাকাতে হয় নি তাকে।দলের অপরিহার্য সদস্য এখন তিনি। বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের উদ্বোধনী বোলার হিসেবে আস্থা আর নির্ভরতার প্রতীক নাহিদা আক্তার। নাহিদা আক্তারের ৩২ নম্বর জার্সিটাকে ঘিরে সমর্থকদের ভরসা চমকায় প্রতিটি ম্যাচে। বাংলা ক্রিকেট দলের দুর্ধর্ষ বাঘিনী নাহিদা সাধ্যমত নিজেকে উজার করে দেন দলের জন্য।
ফাইনাল বিজয়ী সালমা খাতুনের দলের নির্ভরযোগ্য স্তম্ভ নাহিদা । জয়তু টাইগ্রেস নাহিদা।