বেঁচে গেল পর্তুগাল, আক্ষেপ নিয়ে বিদায় ইরানের
দ্বিতীয় পর্বের টিকিট পেতে জয় চাই-একেবারে সহজ একটা সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়েছিল ইরান। আর পতুর্গাল ড্র করলেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত। এমন হিসাবের সামনে দাঁড়িয়ে 'বি' গ্রুপের এই ম্যাচে শেষ মুহুর্তের গোল ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইরান। ১-১ গোলে ড্র হলেও প্রথম রাউন্ডেই রাশিয়া বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেল ইরানের। আক্ষেপ সঙ্গী করেই বিদায় হল এশিয়ার এই দেশটির। একটুর জন্য মিলল না পরের পর্বে খেলার সুযোগ! পতুর্গাল গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে উঠে গেল পরের পর্বে।
এই গ্রুপের আরেক ম্যাচে সোমবার মরক্কোর সঙ্গে ড্র করে দ্বিতীয় রাউন্ডের ছাড়পত্র পেয়েছে ফেভারিট স্পেন। চমক দেখিয়ে আফ্রিকার দলটি এগিয়ে থেকে ইনজুরি সময়ে গোল হজম করে। খেলা শেষ হয় ২-২ গোলে।
সারানস্কের মোরদোভিয়া অ্যারেনাতে সোমবার অবশ্য আরো বড় ব্যবধানে জিততে পারতো পতুর্গাল। ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময় দাপট ছিল তাদেরই। বল দখলের লড়াইটা দেখলেই গোটা ম্যাচের চিত্রটা পরিস্কার হয়ে যাবে। খেলার ৭৩ ভাগ সময় পর্তুগালের নিয়ন্ত্রনে ছিল বল।
যদিও প্রথম গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৪৫তম মিনিট পর্যন্ত। বিরতির আগে পর্তুগালকে লিড এনে দেন রিকার্দো কুরেসমা। সেদ্রিচ সোয়ারেসের সঙ্গে ‘ওয়ান-টু-ওয়ান’ বোঝাপড়ায় ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে ডান পায়ের বাঁকানো শটে গোল করেন তিনি। এরপর ব্যবধানটা দ্বিগুন করতে পারতেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। কিন্তু তার নেওয়া পেনাল্টি শট আটকে দেন ইরানের গোলকিপার।
ম্যাচের ৫০ মিনিটে পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। ইরানের ডি বক্সে ফাউল করা হয় রোনালদোকে। প্রথমে পেনাল্টির বাঁশি বাজাননি রেফারি। এরপর ভিএআর রিপ্লে দেখে পেনাল্টির ঘোষণা দেন। কিন্তু স্পট কিক থেকে গোল করা হল না রোনালদোর। তার শট বাদিকে ঝাপিয়ে আটকে দেন ইরানের গোলরক্ষক আলিরেজা বাইরানবন্দ।
পুরো সময় দাপট থাকলেও ইনজুরি সময়ে এসে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে সুযোগ এসে যায়। পেনাল্টি পায় ইরান। স্পট কিক থেকে গোল করতে ভুল করলেন না করিম আনসারিফার্দ। এটি এবারের রাশিয়া বিশ্বকাপে এটি ১৯তম পেনাল্টি। এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ পেনাল্টির রেকর্ড এটিই। এর আগে ১৮টি পেনাল্টি হয়েছিল ১৯৯০, ১৯৯৮ ও ২০০২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে।
সেই গোলের পর আরেকটি সুযোগ এসে যায় ইরানের সামনে। কিন্তু মেহেদী তেরেমি গোলের সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেন নি। পারলে আক্ষেপ নয়, উৎসব করেই মাঠ ছাড়তে পারতো দলটি।
এছাড়া বারবারই আক্রমনের তোড়ে দিশেহারা হয়েছে ইরান। কিন্তু কঠোরভাবে রক্ষনাত্মক ফুটবল খেলে মোটামুটি তারা সফল। গোল তো আর বেশি হজম করতে হয়নি। কিন্তু জিতলে যে পরের রাউন্ডে উঠার সুযোগ ছিল সেটা বোধহয় ভুলেই গিয়েছিলেন ইরানের কোচ কার্লোস কুইরোজ। যিনি এর আগে দুই মেয়াদে ছিলেন পর্তুগালের কোচ। পর্তুগিজদের দুর্বলতাটুকু জেনেও তা কাজে লাগানো হল না!
তবে ইতিহাসটাও পক্ষে ছিল না ইরানের। এর আগে বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে কখনোই জিততে পারেনি দলটি। একইসঙ্গে অতীত রেকর্ডও তাদের হয়ে কথা বলে নি। সেই ২০০৬ বিশ্বকাপের পর আবারো বড় মঞ্চে সাক্ষাতে পতুর্গালের কাছে হেরে গেল ইরান। সেই ম্যাচে গোল করেন ডেকো অার রোনালদোর। সব মিলিয়ে ইউরোপিয়ান দলগুলোর সঙ্গে ঠিক পেরে উঠছে না ইরান। সব শেষ ৭ লড়াইয়ে ইউরোপের দেশের কাছে হেরেছে এশিয়ার এই জায়ান্ট।
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের পর্তুগাল প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছে উরুগুয়েকে। নকঅাউট পর্বের আরেক ম্যাচে স্পেন লড়বে রাশিয়ার সঙ্গে।