১৮৪ রান স্বপ্ন দেখাচ্ছে বাংলাদেশকে
শুরুতে লিটন দাসের ব্যাটে ঝড়। মাঝে দুই সিনিয়র সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর হিসেবে ব্যাটিং। এই সম্মিলিত যোগফলে সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচে ১৮৪ রানের বড় স্কোর গড়ে। ইনিংসের শেষদিকে বৃষ্টিতে খানিকক্ষণ খেলা বন্ধ হয়ে থাকায় রান তোলার যে গতি নিয়ে ছুটছিল বাংলাদেশ, তাতে বাধা পড়ে। তারপরও ফ্লোরিডার লডারহিলের এই উইকেটে বাংলাদেশের ১৮৪ রানকে চ্যালেঞ্জিং মানতেই হচ্ছে। তিন ম্যাচের সিরিজে এটাই যে সর্বোচ্চ স্কোর। শুধু তাই নয়, টি-টুয়েন্টিতে এটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্কোর। বলাই যায় সিরিজের ট্রফি জেতার মতো সঞ্চয় এনে দিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা।
এই উইকেটে এত বেশি রান তাড়া করে ম্যাচ জেতার নজির যে কারো নেই। তাই বলা যায় ইতিহাসও ছিল বাংলাদেশের পক্ষেই!
এই ম্যাচে টসে জিতেন সাকিব আল হাসান। লডারহিলের স্লো উইকেট ক্রমশ আরো স্লো হয়ে পড়ে, এই চিন্তায় সাকিব আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। তামিমের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামেন লিটন দাস। ম্যাচের প্রথম ওভার থেকেই বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে স্রেফ যেন ঝড় তোলো। প্রথম ওভারে মিলল ৮ রান। দ্বিতীয় ওভারে লিটন দাস দুই ছক্কা ও এক বাউন্ডারিতে আদায় করে নিলেন ১৭ রান! ম্যাচের টেম্পো মুলত সেই ওভারেই স্থির করে নিল বাংলাদেশ। সেই যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের ওপর চড়ে বসল বাংলাদেশ, দাপটটা রইল বৃষ্টি নামার আগ পর্যন্ত!
লিটন দাস ওপেনিংয়ে নামার সুযোগটা দক্ষতার সঙ্গে কাজে লাগালেন এই ম্যাচে। পাওয়ার প্লে’তে সত্যিকার অর্থেই পাওয়ার দেখাল বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে দলের ৫০ রান এল মাত্র ৩.৪ ওভারে। টি-টুয়েন্টিতে এটি বলের হিসেবে বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটি। লিটন দাসের ব্যাট তখন যেন খাপ খোলা তলোয়ার। সামনে যাকেই পাচ্ছেন তার বলেই ছক্কা-চারের ঝড় উঠছে! মাত্র ২৪ বলেই লিটন দাস তার হাফসেঞ্চুরি পেয়ে গেলেন। টি-টুয়েন্টিতে এটি বাংলাদেশের হয়ে কোন ব্যাটসম্যানদের দ্বিতীয় দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির ইনিংস। ওয়েষ্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০০৭ সালে ২০ বলে ৫০ রান করা মোহাম্মদ আশরাফুল এই তালিকার শীর্ষে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলতি বছর মুশফিকও ২৪ বলে হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন।
তামিম ইকবাল ও লিটস দাসের ওপেনিং জুটিতে মাত্র ৪.৪ ওভারে ৬১ রান পায় বাংলাদেশ। তামিম ১৩ বলে ২৩ রান করে ফিরেন। সৌম্য সরকার এই ম্যাচেও যথারীতি ব্যর্থ। কিমো পলের স্লোয়ারে সিঙ্গেল ডিজিটে আউট হন সৌম্য। মুশফিকও ফিরে আসেন চটজলদি। কিন্তু অপরপ্রান্তে লিটন দাস প্রায় একাই এগিয়ে নেন দলের স্কোর। তবে অতিমাত্রায় আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে উইকেট খোয়ান লিটন। কেসরিক উইলিয়ামসের স্লোয়ারে টাইমিংটা মেলেনি তার। ৩ ছক্কা ও ৬ বাউন্ডারিতে ৩২ বলে ৬১ রান করে আউট হন লিটন।
ততক্ষণে বাংলাদেশের স্কোর তিন অংকের ঘরে পৌছে গেছে। সাকিব আল হাসানের ২২ বলে ২৪ রান বাংলাদেশকে বড় স্কোরের স্বপ্নকে রঙিনই রাখে। এবং শেষের দিকে আরেকবার নির্ভরতার প্রতীক হয়ে দাড়াল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের চওড়া ব্যাট। ২০ বলে তার হার না মানা ৩২ রান বাংলাদেশের ডাগআউটে স্বস্তি এনে দেয়। আরিফুল হক ১৬ বলে অপরাজিত ১৮ করেন। শুরুর সঙ্গে মাঝে এবং শেষের এই সম্মিলিত কার্যকর যোগাড়ে বাংলাদেশ ম্যাচ জেতার মতো পুঁজি তাহলে পেয়েই গেল!
কি বলেন?
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ১৮৪/৫ (২০ ওভারে, লিটন দাশ ৬১, মাহমুদুল্লাহ ৩২, সাকিব ২৪, তামিম ২১, পল ২/২৬ ব্রাথওয়েট ২/৩২)