বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে উড়ছেন সাকিবরা
হতাশায় শুরু হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। টেস্টে ভয়াবহ বিপর্যয়! ৪৩ রানে অলঅাউটের লজ্জা। সঙ্গে হোয়াইটওয়াশের যন্ত্রনা। কিন্তু সময়ের পথ ধরে ঠিকই চেনা ছন্দ খুঁজে নিয়েছেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। মাশরাফি বিন মর্তুজার স্পর্শে ওয়ানডেতে জেগে উঠে টাইগাররা। এবার টি-টুয়েন্টিতেও বিশ্ব শুনল বাঘের গর্জন!
সাকিব আল হাসানের হাত ধরে বাংলাদেশ সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২-১ এ ব্যবধানে হারাল। দেশের বাইরে এটি মাত্র দ্বিতীয় দ্বিপাক্ষিক টি-টুয়েন্টি সিরিজ জয়। সব মিলিয়ে টাইগাররা ১১টি একের অধিক ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজ খেলেছে। দেশে ৪টি, বিদেশে ৭টি। দেশের মাঠে সিরিজ অধরা হয়েই আছে। আর বিদেশে এনিয়ে দুটি সিরিজ জিতল দল। ২০১২ সালের জুলাইয়ে আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ।
তবে এবারের জয়টি নিশ্চিত করেই অনেক অনেক দিন মনে থাকবে ক্রিকেট ভক্তদের। টি-টুয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে জয় বলে কথা! টাইগারদের দাপটে দিশেহারা হয়ে গেল ক্যারিবীয়রা।
সিরিজের প্রথম ম্যাচ হারলেও মার্কিন মুল্লুকে পা রাখতেই পাল্টে যায় বাংলাদেশ। ফ্লোরিডায় দ্বিতীয় ম্যাচে ১২ রানে জয়। সোমবার শেষ ম্যাচে বৃষ্টি আইনে ১৯ রানে জিতে গড়ল নতুন এক ইতিহাস। দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়। ঐতিহাসিক তো বটেই!
তাইতো হাওয়ায় উড়ছেন সিরিজসেরা সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলছিলেন, ‘দেখুন, সবার অবিশ্বাস্য চেষ্টার ফসল এই সিরিজ জয়। কখনও আত্মবিশ্বাস হারাইনি আমরা। আমরা জিতবো-সবাই সেটা বিশ্বাসও করেছে। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে খেলেছি আর নিজেদের দৃঢ়তা দেখিয়েছি।’
ফ্লোরিডার এই ম্যাচেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা দারুণ সমর্থন দিয়ে গেছেন। তারা এভাবে পাশে থাকায় মুগ্ধ সাকিব। বলছিলেন, ‘দর্শকরা এই ম্যাচেও দারুণ সমর্থন দিয়েছেন আমাদের। ওরা ছিলেন আমাদের ১২তম খেলোয়াড়।’
সিরিজের ব্যাটে-বলে দারুণ দাপট দেখিয়েছেন সাকিব আল হাসান। ৩ ম্যাচে করেছেন ১০৩ রান। সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ৬০। বল হাতে নিয়েছেন ৩ উইকেট। সঙ্গে অসাধারন নেতৃত্ব। এই সিরিজ জয়ের দিনেই নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ‘যুগপূর্তি’ হলো সাকিবের। মনে রাখার মতো উপলক্ষ্যই বটে!
ওয়ানডের পর টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটেও মিলল সাফল্য। অথচ দেশের বাইরে টেস্টে বারবারই ব্যর্থ বাংলাদেশ। সাকিবও ভারছেন বিষয়টা নিয়ে। সোমবার ম্যাচ শেষে বলছিলেন, ‘সেই ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে ওয়ানডেতে ভালো করছি আমরা। এই সিরিজ জয় টি-টুয়েন্টিতেও ভাল করতে সাহস জোগাবে। টেস্টে আরও ভালো খেলাই লক্ষ্য আমাদের। এনিয়ে কাজ করে যেতে হবে। দেশে ভালো করছি আমরা কিন্তু বিদেশে আরো ভালো করতে হবে।’
টেস্ট সিরিজ ব্যর্থতার্ পর কেউ কি ভেবেছিলেন এভাবে শেষ হবে সফর?
নিশ্চয়ই না। হিসাবের ছক উল্টে দিয়ে স্বস্তি নিয়ে দেশে ফিরছেন সাকিব-তামিমরা। সঙ্গে নিয়ে আসছেন ওয়ানডে আর টি-টুয়েন্টি সিরিজের দুটো ট্রফি! এখন এই সাফল্যের পথ ধরেই এগিয়ে যাওয়ার পালা।