ইভিএমের নতুন মেশিনে থাকছে ভোটের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা



ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম
ইভিএমে ভোটগ্রহণ- ছবি: বার্তা২৪।

ইভিএমে ভোটগ্রহণ- ছবি: বার্তা২৪।

  • Font increase
  • Font Decrease

 


নতুন এই মেশিন হ্যাকার দ্বারা হ্যাকিং সম্ভব নয়

বায়োমেট্রিক আর স্মার্টকার্ড ছাড়া ভোটগ্রহণ সম্ভব নয়

ইভিএম মেশিন চালু করার বিষয়টি পাসওয়ার্ডের ওপর নির্ভর করবে


ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্ক ছিল শুরু থেকেই। হ্যাকিংসহ নানা অভিযোগে জর্জরিত এই মেশিন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছেই। তবে থেমে নেই নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নত প্রযুক্তির মেশিন সংগ্রহ করছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এই মেশিনে রয়েছে ভোটের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিশ্বের কোন হ্যাকার দ্বারা এটি হ্যাকিং সম্ভব নয় বলে দাবি ইভিএম সংশ্লিষ্টদের।

ইভিএম নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি উইং) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। বর্তমানে ইভিএমের সার্বিক পরামর্শক হিসেবেও কাজ করছেন তিনি।

তার মতে, ইভিএমের নতুন মেশিনে ভোটারের বায়োমেট্রিক আর স্মার্টকার্ড ছাড়া কোনোভাবেই ভোট গ্রহণ সম্ভব নয়। তাছাড়া অনলাইন সংযুক্ত না থাকায় হ্যাকিংয়েরও শঙ্কা নেই।

তিনি জানান, নতুন এই মেশিনে স্ক্যানার ছাড়াও অনেক নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে। নিশ্চিত করা হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা। পুরো মেশিনটিই এখন অত্যাধুনিক। আমরা আমেরিকা, সুইজারল্যান্ড, ভারত, ব্রাজিলে ব্যবহার হওয়া ইভিএমগুলো পর্যবেক্ষণ করে তাদের সব প্রযুক্তিও এই মেশিনে যুক্ত করেছি। সে তুলনায় আমাদের মেশিন বিশ্ব মানের। আমাদের মত মেশিন সারা বিশ্বে নেই।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, নতুন ইভিএম মেশিন চালু করার বিষয়টি পাসওয়ার্ডের ওপর নির্ভর করবে। এটি ভোটের আগে কারও জানার সুযোগ থাকবে না। ভোট শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসারের মোবাইল ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে ওই পাসওয়ার্ড পৌঁছে যাবে। ফলে ওই অনুমোদিত ব্যক্তির বাইরে কেউ এটি চালু করতে পারবেন না। তবে প্রথম ব্যক্তি কেন্দ্রে উপস্থিত হতে না পারলে দ্বিতীয় নির্ধারিত ব্যক্তির মোবাইল ফোনে পাসওয়ার্ড পৌঁছে দেওয়া হবে।

এছাড়াও ভোটের সময় ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ভোটার শনাক্ত করা হবে। কোনও ভোটারের ফিঙ্গার প্রিন্ট মিললেই তার ব্যালটটি আনলক হবে এবং সেটি প্রদান করা যাবে। ফলে জাল ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। আর সাধারণত কোনও ডিভাইস ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকলে সেটি হ্যাক হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। কিন্তু ইভিএম মেশিনটি ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকবে না। এর পরিবর্তে ইসির নিজস্ব নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা Nationwide Private Network (NPN) এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে। ভোট 'কাউন্টিং' হবে সফটওয়্যারের মাধ্যমে। ফলে এটি কারও হ্যাক করার সুযোগ নেই। নতুন ইভিএমে ভোট শুরুর আগে-পরে শূন্য ভোটিং, স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফল প্রিন্ট, ঘোষণা ও বিতরণ করার ব্যবস্থাও রয়েছে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে এনআইডির ডিজি বলেন, ইভিএমে কোনভাবেই একাধিক ভোট দেয়া সম্ভব না।  একটি বুথে সাধারণত সাত আটটি মেশিন থাকে। এগুলো একসঙ্গে ভোটের আগে কেন্দ্রে চলে যাবে। ভোটের দিন সকালেই ভোটারের তথ্য সম্বলিত কার্ডটি কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে, যাতে ওই কেন্দ্রের সকল ভোটারের তথ্য রয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুরুতেই পোলিং এজেন্টদের দেখিয়ে পাসওয়ার্ড দিয়ে ইভিএম মেশিনটি খুলবেন। এরপর ভোটার আসলে প্রথমে তার পরিচয়পত্রটি দেখবেন। প্রত্যেক ভোটারের আলাদা একটি করে সিরিয়াল নাম্বার থাকবে। ভোটার ইভিএম মেশিনে তার ফিঙ্গার প্রিন্ট দিলে তার জন্য নির্দিষ্ট করা ব্যালটটি আনলক হবে। এরপর সে সেই ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন। তিনি ছাড়া এই ভোট আর কারও দেয়ার সুযোগ নেই। ভোটগ্রহণ শেষে প্রিজাইডিং অফিসার সহজেই ভোটের সার্বিক ফল প্রকাশ করতে পারবেন।

ভোট নিয়ে কোন অভিযোগ থাকলে গেজেট প্রকাশের দুই মাসের মধ্যে প্রার্থী মামলা করতে পারেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভোটাররা ভোট দেওয়ার পর তার তথ্য একইসঙ্গে মেশিনের অভ্যন্তরীণ ডাটা সেন্টারে সংরক্ষণ হবে। একইসঙ্গে মেশিনে যুক্ত এক্সটার্নাল চিপসেও তথ্য সংরক্ষণের সুবিধা আছে। এই তথ্য আমরা এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করে থাকি। ভোটের বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে কেউ যদি আদালতে যায়, তাহলে আমরা আদালতে চিপস উপস্থাপন করব। সেটি যাচাই বাছাই করলেই বোঝা যাবে ভোটে কোন জালিয়াতি হয়েছে কিনা।

জানা গেছে, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) মাধ্যমে মেশিনগুলো তৈরি করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে যে ২৫৩৫টি ইভিএম ক্রয়ের সিদ্ধান্ত ছিল তার মধ্যে ৩৮০টি ইভিএম আগেই হাতে পেয়েছিল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি আরো ৬০০ সেট মেশিন হাতে পেয়েছে কমিশন। আগের মেশিনগুলো দাম ছিল ৪৬ হাজার টাকা। কিন্তু নতুন মেশিনগুলোর প্রতিটির দাম পড়ছে গড়ে প্রায় ২ লাখ টাকা।

আগের মেশিনের চেয়ে নতুন মেশিনের দাম কয়েকগুণ বেশি, এমন প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, আগের ইভিএমগুলোর প্রতিটি মেশিনের দাম ছিল ৪৬ হাজার টাকা, আর নতুন মেশিনগুলো দুই লাখ টাকা। নতুন ইভিএমে মাদারবোর্ড থেকে শুরু করে সবকিছুই অত্যাধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ইভিএমে নতুনভাবে অনেক কিছুই যুক্ত করা হয়েছে। ধরুন, চায়নার ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার দাম ১১ হাজার টাকা, ইতালির স্ক্যানার ২৮ হাজার। কিন্তু আমেরিকার স্ক্যানার ৩৭ হাজার। তো আমরা সবচেয়ে ভালো মেশিনই ব্যবহার করেছি। সে কারণেই দামটা একটু বেশি পড়ছে। আমরা টেকসই একটি মেশিন তৈরি করতে চাই। এমন মেশিন তৈরি করতে চাই না, যে এক বছর পর ফিঙ্গার প্রিন্ট কাজ করবে না। আমাদের বিশ্বাস দুই থেকে তিন বছর পর ৯৯ ভাগ মানুষ বলবে আমরা ইভিএম ছাড়া ভোট দেবো না।

এই শীর্ষ কর্মকর্তা মেশিনটি শতভাগ নিরাপদ উল্লেখ করে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ইভিএমের মেশিনটি হ্যাক করতে বিশ্বের যতো হ্যাকার আছে নিয়ে আসুন। আমরা প্রমাণ করতে চাই যে এটা কেউ হ্যাকিং করতে পারে কিনা। দেশে সাফল্য পেলে বিশ্বমানের এই ইভিএম ভবিষ্যতে দেশের বাইরেও রপ্তানি করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

নির্বাচনগুলোতে ইভিএমের ব্যাপকতা বাড়াতে দেড় লাখ ইভিএম কেনার জন্য তিন হাজার ৮২৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।  ‘নির্বাচন-ব্যবস্থায় অধিকতর স্বচ্ছতা আনয়নের লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ক্রয়, সংরক্ষণ ও ব্যবহার’ শীর্ষক প্রকল্প এটি। চলতি সপ্তাহে এ সংক্রান্ত প্রকল্পটি একনেকে উঠবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এদিকে ইভিএমের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরতে আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে বড় পরিসরে ঢাকায় ইভিএম মেলার আয়োজন করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে মেলা উপলক্ষে কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও সমন্বয় কমিটি গঠন করেছে ইসি। দুই দিনব্যাপী ইভিএম মেলায় লোকসমাগম ঘটাতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে ওই কমিটি। ইভিএমের এই প্রদর্শনীতে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের।

   

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবান-রাঙ্গামাটির সীমান্তের দুর্গম এলাকায় তীব্র গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। সেখানে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বান্দরবানের রুমার প্রাংসা-পাইন্দু ও রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির বড়থলি ইউনিয়নে সীমান্তের দুর্গম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গত ৬ এপ্রিল থেকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে যৌথ বাহিনী, যা এখনও চলমান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুমা খাল, প্রাংসা, পাইন্দু ও রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি সীমান্ত এলাকায় তীব্র গোলাগুলির চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান উহ্লা চিং মারমা জানান, কয়েকদিন ধরে রুমা উপজেলায় যৌথবাহিনীর অভিযান চলছে। এলাকাবাসীরা তাকে আজ বিকেলে জানিয়েছেন পাইন্দু- রুমা সদর ইউপি ও বিলাইছড়ি উপজেলা বড়থলি ইউনিয়নের সীমান্তে দুর্গম এলাকার ভিতরে প্রচণ্ড গুলি বোমার আওয়াজ শুনেছেন। এলাকাবাসীর ধারণা, গোলাগুলি হচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান জানান, গোলাগুলির সংবাদ পেয়েছি। তবে বিস্তারিত জানা যায়নি।

গত ৮ এপ্রিল যৌথবাহিনী বিশেষ অভিযান চালিয়ে রুমা উপজেলার বেথেলপাড়া থেকে ১৮ নারীসহ ৪৯ জনকে গ্রেফতার করে। অন্যদের বিভিন্ন সময়ে মোট ৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ৫২ জনের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে পাঠানো ৫২ জনের মধ্যে ১৭ জন নারী রয়েছেন।

 

 

 

 

 

 

;

সাভারে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং, আতঙ্কে নগরবাসী



মো. কামরুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকার সাভারে দিনদিন বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ংকর তাণ্ডব। ফলে সাভার এখন পরিণত হয়েছে আতঙ্কের নগরীতে। পৌর এলাকাতেই মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ৪ খুন। এছাড়া প্রতিনিয়ত ছিনতাই, আধিপত্য বিস্তার ও মাদকের অন্যতম কারণ এই গ্যাং কালচার। কোনোভাবেই যেন লাগাম টানতে পারছে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রকাশ্যে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা পাল্টা হামলা সাভার পৌরসভার নিত্যদিনের ঘটনা। রক্তাক্ত শরীর নিয়ে কেউ হেঁটে যায়, আনার কেউ হাসপাতালে বিছানায় করে বাঁচার আর্তনাদ। কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যে সম্প্রতি সাভার পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১২ এপ্রিল সাভারের আড়াপাড়ায় খুন হলেন রং মিস্ত্রী সাজ্জাদ। গত ৩১ মার্চ সাভারের রেডিও কলোনীতে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মৃত্যু সাথে লড়াই করেছেন কলেজ ছাত্র রবিউল।

ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্র রবিউল ইসলাম বার্ত২৪.কম-কে বলেন, 'সকালে আমি ডিউটির উদ্দেশ্যে যাইতেছি। তখন দেখি দুইটা ছেলে বসা তখন আমার হাতে মোবাইল ছিল ওরা আমাকে ডাক দিছে। ডাক দিয়েই বলে কি আছে দে। আমি সাথে সাথে মোবাইল দিয়ে দিছি। তারপরেও ওরা আমাকে ছুরি মারছে। আমার পেটে পিঠে চাকু মারছে। তখন আমি চিৎকার দিলে আশপাশে থেকে লোকজন এসে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমার পায়েও সমস্যা, ১৮ দিন ধরে ব্যথায় আমি একটুও ঘুমাতে পারি না।

ছেলেকে বাঁচাতে রবিউলের কৃষক বাবা ধার-দেনা করে প্রায় নিঃস্ব এখন। তাদের দাবি এ ধরনের ঘটনা যেন কোনো পরিবারের সাথে না হয়। এই পরিবারের মত এমন ঘটনার ভুক্তভোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।

ভুক্তভোগী রবিউল ইসলামের বাবা মো. আশরাফুল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমাদের টোটাল বিল আসছিল ৭ লাখ টাকা। পেমেন্ট দিয়েছি প্রায় চার লাখ টাকা। আমি কৃষি কাজ করি ও মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করি। হাসপাতালের এই ৪ লাখ টাকা মানুষের কাছে তো ধার ও সুদের উপর এনে দিয়েছি। আর্থিকভাবে মনে হয় দশ বছরেরও আমি এই জিনিসটা পূরণ করতে পারব না। আমি সুদে যে টাকাটা নিছি প্রতিমাসে এই সুদ টানতেই আমার কষ্ট হয়ে যাবে এখন।

ভুক্তভোগী রবিউলের মা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা যদি আর্থিক দিকে কোনো সাহায্য সহযোগিতা না পাই, তাও কোনো দুঃখ নাই। আমার ছেলেটা ১৮ দিন ধরে হসপিটালের বিছানায়। আমার ছেলের মত এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে এটাই আমার দাবি।

তথ্য বলছে, সাভারে কিশোর গ্যাংয়ের মূল দৌরাত্ম্য পৌরসভাজুড়ে। পিনিক রাব্বি, হৃদয় গ্রুপ, ভাই-ব্রাদার গ্রুপ বেশ সক্রিয়। নিজেদের দ্বন্দ্ব থেকে ভাগ হয়ে তৈরি হচ্ছে আরো গ্রুপ। গত দুই মাসে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাই ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অন্তত ৪ খুনের ঘটনা ঘটেছে। খরচ মেটাতে ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত এই কিশোর গ্যাং।

সাভার পৌর সভার বাসিন্দা রিফত বার্তা২৪.কম-কে বলেন, অপরাধীরা বেশিরভাগই মাদক সেবন করেন। তার জন্য তো টাকা দরকার তাদের। তারা কোনো কাজকর্ম করে না। আর এই টাকার জন্যই তারা ছিনতাই করে। কাছে কিছু না পেলে বা দিতে না চাইলেই তাকে আঘাত করে। কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে এমন। মারাও গেছেন কয়েকজন। সরকারের কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ, এই মাদক ও কিশোর গ্যাং নিয়ে যেন কঠোর একটা ব্যবস্থা নেয়। এদের যেন শাস্তি হয়, এগুলো যেন একবারে নির্মূল করে দেয়।

গত মার্চ মাসে র‍্যাব ও পুলিশের আলাদা অভিযানে হৃদয় গ্রুপের প্রধান গিয়ার হৃদয়সহ ৮ জন ও ভাই-ব্রাদার গ্রুপের ৪ জনসহ মোট ১২ জন গ্রেফতার করা হয়।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শাহ জামান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কখনো যদি কোনো লোক এরকম ছিনতাইয়ের শিকার হন বা ডাকাতির শিকার হন, তাহলে তাৎক্ষণিক আমাদের কাছে রিপোর্ট করবেন। যাতে করে আমরা এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারি। যদি এরকম কোনো ঘটনায় আপনারা রিপোর্ট না করেন, ওই অপরাধীদেরকে আমরা যদি গ্রেফতার করতে না পারি, সেক্ষেত্রে কন্টিনিউয়াস একটার পর একটা ঘটনা ঘটিয়ে যাবে। সুতরাং যে কোনো ঘটনাই ঘটুক, অবশ্যই পুলিশকে রিপোর্ট করতে হবে। পুলিশ যাতে সংশ্লিষ্ট অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে পারে।

;

পটিয়ায় বাস-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের পটিয়াতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে বাস-অটোরিকশা মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও একজন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার চেয়ারম্যান ঘাটা নাকম এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- চন্দনাইশ উপজেলার বৈলতলী এলাকার আবু বক্কর তাসরিফ (১৫) ও কক্সবাজারের রামুর নুরুল আলম (২৮)। তিনি চন্দনাইশের এলেহাবাদ এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। তারা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন পটিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামমূখী মারসা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে একটি স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বাকী একজনের নাম জানা যায়নি। তারা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।

ওই অটোরিকশায় চালকসহ মোট ৪ আরোহী ছিলেন। তবে দুর্ঘটনার সাথে সাথে এক যাত্রী লাফ দিয়ে সরে পড়ে। তাই তিনি তেমন আঘাত পাইনি বলে যোগ করেন ওসি। 

;

মালয়েশিয়ায় ৪৫ বাংলাদেশি আটক



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাউথ-ইস্ট এশিয়া
মালয়েশিয়ায় ৪৫ বাংলাদেশি আটক

মালয়েশিয়ায় ৪৫ বাংলাদেশি আটক

  • Font increase
  • Font Decrease

মালয়েশিয়ার পার্লিস প্রদেশের পেদাং বাসারে একটি নির্মাণাধীন ভবনের চত্বর থেকে ৪৫ জন বাংলাদেশিসহ ৪৯ জন বিদেশিকে আটক করা হয়েছে।

অবৈধ অবস্থানের অভিযোগে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ইমিগ্রেশন বিভাগের অভিযানে তাদের আটক করা হয়।

পার্লিস ইমিগ্রেশনের পরিচালক খায়রুল আমিন তালিব বলেন, আটককৃতরা মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থান করছিলেন এবং তাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।

আটককৃতদের মধ্যে ১ জন নারীসহ মোট ৪৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক। এ ছাড়াও ৩ জন ইন্দোনেশিয়া এবং ১ জন ভারতের নাগরিক রয়েছে। এদের বয়স ১৯ থেকে ৫৪ বছরের মধ্যে।

তালিব জানান, শহরের বুকিত চাবাং এলাকার সেকোলাহ সুকান নির্মাণাধীন এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়। আটককৃতদের অধিকতর তদন্তের জন্য কুয়ালা পার্লিস কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মোট ১০১ জন বিদেশিকে তল্লাশি করা হয় অভিযানের সময়। যার থেকে ৪৯ জনকে আটক করা হয়েছে।

ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩ এর ধারা ৬(১)(সি), ধারা ১৫(১)(সি) এবং ধারা ৫৬(১)(ডি) এর অধীনে এই বিদেশিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্ত করা হবে বলে জানান তিনি।

;