চালক সংকটে বাস মালিকরা, এখনই নয় সিটিং নীতিমালা
চালক সংকট নিয়ে বেশ বিপাকে রয়েছেন গাড়ির মালিকরা। চালক সংকটের বিষয় জানিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ বলেছেন, দেশে বাস-ট্রাক ও ট্যাংক লরির সংখ্যা সাড়ে ৩ লাখ। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংখ্যক চালক নেই। আমাদের হিসাব মতে ২ লাখ চালকের সংকট রয়েছে। যাদের হেভি লাইসেন্স নেই। তিনি বলেন, আমরা ড্রাইভার নিয়ে বেশ বিপদেই আছি।
সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানে পরিবহন মালিকদের বিশেষ সাধারণ সভার বক্তব্যে এনায়েত উল্ল্যাহ এসব কথা বলেন।
গাড়ি মালিকদের ডেকে তিনি তাদের বক্তব্য যেমন শুনেছেন, তেমনি শেষে তার বক্তব্যে কিছু নির্দেশনা আর পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন। সাধারণ মালিকদের বক্তব্য নোট করে তিনি সেগুলো সরকার ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানান।
বক্তব্যে খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, নির্বাচনের আগে ঢাকায় সরকার 'সিটিং সার্ভিস নীতিমালা' চালু করতে চাচ্ছে না। তবে মালিকরা নীতিমালার পক্ষে।
বাস মালিকদের গুরুত্বপূর্ণ এ নেতা বলেন, প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক ও আমি ৪ হাজার বাসের যে কাজ শুরু করেছিলাম সেটি আবার শুরু হয়েছে। আমরা চাই এটা বাস্তবায়িত হোক। মালিকরা এর পক্ষে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিটবেল্টযুক্ত বাস আমাদের দেশে আসে না। আমরা শিল্প মন্ত্রণালয়কে বলেছি, বাস আমদানির ক্ষেত্রে বিষয়টি যুক্ত করার জন্য। বর্তমানে যেগুলো আছে সেগুলো আলোচনা করে দেখবো কি করা যায়।
ঢাকার ভেতরে চলমান পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনয়নে তার সংগঠনের নেওয়া পদক্ষেপগুলো জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা শহরে ৪টি ভিজিলেন্স টিমে মালিক শ্রমিক নেতাদের ৬০ জন নেতা কাজ করছেন। এ পর্যন্ত চুক্তিতে চালানোর জন্য ৫টি কোম্পানি স্থগিত করা হয়েছে।
শুধু চালকদের ওপর ছেড়ে দিয়ে নয় নিজে মালিকদের তদারকির জন্য তিনি আহবান করেন। ঢাকায় চুক্তি বন্ধ করে কাউন্টার সার্ভিসে বাস চালাতে তিনি সিটি করপোরেশনকে লিখিতভাবে বলেছেন বলেও সভায় জানান। তিনি বলেন, কাউন্টার পদ্ধতি আমরা চালু করতে চাই। সিটি করপোরেশনকে বলেছি, আপনারা কাউন্টারের জায়গা দেন। অথবা কাউন্টার বানিয়ে দেন, আমরা টাকা দিয়ে কাউন্টার কিনবো। আর এটা যদি নাও হয় তবুও কোনো গাড়ি আর কন্ট্রাকে চলবে বলে জানান তিনি।
এ সময় কয়েক হাজার গাড়ি মালিকদের চুক্তিতে গাড়ি না চালাতে শপথবাক্য পাঠ করান খন্দকার এনায়েত। মালিকরাও শপথ করে বলেন, তারা আর কন্ট্রাকে গাড়ি চালাবেন না।
গাড়ির মালিকদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ব্লুবুকে যত আসন উল্লেখ থাকবে; তত আসন রাখতে হবে। সিট বেশি থাকলে পুলিশ মামলা দিচ্ছে। এমনকি সিট কম থাকলেও মামলা হচ্ছে।
আর ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি মালিকদের সময় দিয়ে রিপ্লেসের সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি সরকারের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানান তিনি।
পেশাদার হালকা যানের গাড়ির লাইসেন্স দিয়ে ভারি গাড়ি চালানোর জন্য সরকারের সঙ্গে ফলপ্রসু আলোচনা চলছে বলেও জানান খন্দকার এনায়েত।
তবে চালক সংকটের বিষয়টি নিয়ে বিপদের মধ্যে আছেন বলে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে চালক তৈরির কোনো প্রতিষ্ঠান নাই। বিআরটিসির কয়েকটি ইনস্টিটিউট আছে সেগুলো দিয়েও কাজ হচ্ছে না। বাকি যেসব বেসরকারি ইনস্টিটিউট আছে সেগুলো সব হালকা গাড়ির জন্য। বাস-ট্রাকের জন্য নয়। তাই মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে আমি প্রস্তাব করেছি, কেবল ব্যবহারের জন্য আমাদের একটা জায়গা দেওয়া হোক; যেখানে আমাদের উদ্যোগে আমরা চালক তৈরি করবো।