লঘু অপারাধে দণ্ডিত প্রায় ৬ হাজার কারাবন্দী মুক্তি পাচ্ছে
লঘু অপরাধে দণ্ডিত প্রায় ৬ হাজার কারাবন্দীকে মুক্তি দিচ্ছে কারাকর্তৃপক্ষ। কারাসূত্রে জানা গেছে, মুক্তি দেয়া হবে, এমন বন্দীদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এই তালিকায় আছেন ৮ জেলার ৫ হাজার ৭৭৫ জন কারাবন্দী। তবে মানবধিকার কর্মীরা বলছেন, সাধারণ চোখে বিষয়টা ভাল মনে হলেও, এর পিছনে থাকতে পারে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।
কারাসুত্র বলছে, লঘু অপরাধে কারাবন্দীদের মুক্তির অংশ হিসেবেই (১৬ সেপ্টেম্বর) সিলেট কারাগার থেকে ১৪৮ জনকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। বাকি কারাগার গুলোর মধ্যে, এখন পর্যন্ত কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে ১ হাজার ২৪৩ জনকে, রাজশাহী থেকে ১ হাজার ৩২৩ জনকে, খুলনা বিভাগে ৬০৪ জনকে এবং রংপুরে ৩৭৫ জনকে মুক্তি দেয়া হবে। বাকি গুলোর কাজ চলছে।
চূড়ান্ত হয়ে যাওয়া অন্য বন্দীদের কবে নাগাদ মুক্তি দেয়া হবে জানতে চাইলে, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, তালিকা প্রস্তুত করার কাজ শেষ হয়েছে। তবে তালিকাটা আবারও যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। আমরা দেখছি, এদের মধ্যে কোন বড় ধরনের আসামি আছে কিনা। সব কিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরে, পর্যায়ক্রমে তালিকার সবাইকে ছেড়ে দেয়া হবে।
কারাগারের এই মহাপরিদর্শক বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত এবং কারা আইন মেনেই তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া যারা লঘু অপরাধে কারাগারে আছে, এমন বন্দীর কেউ যদি অপরাধ স্বীকার করে নেন। সেক্ষেত্রে আমরা নূন্যতম সাজা দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারি।
অন্যদিকে নির্বাচনের আগে হঠাৎ এমন কারাগার ফাঁকা করে দেয়ার বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখছেন মানবধিকার কর্মী নূর খান লিটন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আগামী ৩ মাস পর যে জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে। সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কারাগার ফাঁকা করা হচ্ছে, এমন আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ। তাই আমার কাছে এই কারাবন্দীদের মুক্তি পাবার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।
এই প্রসঙ্গে কারা মহাপরিদর্শক বলছেন, এটা মানবধিকার কর্মীদের ভুল ধারণা। আমরা শুধু লঘু অপরাধে অপরাধীদের বিবেচনায় এনেছি। যারা বড় অপরাধ করেছেন বা দাগি আসামি তাদের কিন্তু এই তালিকায় রাখা হয়নি।
অন্যদিকে জানা যায়, দেশের কারাগার গুলোতে বন্দী ধারণক্ষমতা ৩৫ থেকে ৪০ হাজার কিন্তু অবস্থান করছে প্রায় ১ লাখের মত বন্দী। কারা সদরদফতরের তথ্য বলছে, মোট বন্দীর মধ্যে ৬৫ ভাগই চলমান মাদক বিরোধী অভিযানে, দায়ের করা মামলার আসামি।