বার্তা২৪.কমে সংবাদ প্রকাশ, স্বপ্নপূরণ হচ্ছে সেই নাজমুলের
কুষ্টিয়া: স্বপ্ন পড়ালেখা শেষে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হবেন। আর যদি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হতে না পারেন তাহলে ভবিষ্যতে শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় কাজ করবেন। কারণ শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর।
বলছিলাম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হতদরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থী নাজমুল হুসাইনের কথা। তার বাবা আব্দুল আজিজ একজন ভূমিহীন কৃষক। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় নাজমুল। তার ছোট বোন অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। শৈশব থেকে পরিবারের দরিদ্রতা দেখে বড় হয়েছেন নাজমুল। ফলে টিউশনির পাশাপাশি মাঠের কাজ করে নিজের পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছেন। অর্থের অভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সুযোগ পেয়েও ভর্তি হতে পারছিলেন না তিনি।
বিষয়টি নিয়ে শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে বার্তা২৪.কমে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। রোববার সকালে তা দৃষ্টিগোচর হয় কুষ্টিয়ার একটি স্বনামধন্য ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মৌবন কর্তৃপক্ষের। পরে তাকে ডেকে প্রতিমাসে আড়াই হাজার টাকাসহ প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ দেওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এ সময় নাজমুলের সঙ্গে বার্তা২৪.কমের প্রতিনিধিসহ স্থানীয় সাংবাদিক, প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মৌবনের নির্বাহী পরিচালক সাফিনা আঞ্জুম জনি বলেন,‘নাজমুল একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। তার মতো এমন মেধাবী আমাদের সমাজে বড় প্রয়োজন। তার মতো মেধাবীরাই আগামীতে দেশ পরিচালনা করবে। তাকে আমি নামে মাত্র সহযোগিতা করছি। সহযোগিতা স্বরূপ তাকে প্রতিমাসে আড়াই হাজার টাকাসহ তার শিক্ষা উপকরণের ব্যবস্থা করব। প্রতি মাসের এক তারিখে তার একাউন্টে আড়াই হাজার টাকা পৌঁছে যাবে।’
এ সময় নাজমুল বলেন, ‘আমি আমার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছি। অর্থের অভাবে আমি ভর্তি হতে পারছিলাম না। কিন্তু এখন সেই চিন্তার অবসান ঘটল। কুষ্টিয়ার মৌবন আমাকে যে সুযোগ সৃষ্টি করে দিল তা আমি কোনো দিনও ভুলব না।’
প্রসঙ্গত, মিরপুর উপজেলার হালসা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন নাজমুল। ২০১৮ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় তিনি জিপিএ-৫ পান। ওই উপজেলায় মাত্র ৩টি কলেজ থেকে ৩ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পান। এর মধ্যে নাজমুল একজন।
নাজমুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘খ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। আগামী ২১ অক্টোবর মৌখিক পরীক্ষা রয়েছে তার।