গ্যাড়াকলে বরিশাল শিল্পনগরীর উদ্যোক্তারা



সিদ্দিকুর রহমান, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
গ্যাড়াকলে বরিশাল শিল্পনগরীর উদ্যোক্তারা। ছবি: বার্তা২৪.কম

গ্যাড়াকলে বরিশাল শিল্পনগরীর উদ্যোক্তারা। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

শিল্প উন্নয়নের পাশাপাশি বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে ষাটের দশকে গড়ে উঠেছিল বরিশাল বিসিক শিল্পনগরী। তবে প্রথমদিকে এর যাত্রা ভালোভাবে শুরু হলেও দীর্ঘ ৫৮ বছরেও পূর্ণাঙ্গতা পায়নি এই নগরী।

বর্তমানে অবকাঠামোগত অপর্যাপ্ততা, সংস্কারের অভাব, রাস্তা, পানি-বিদ্যুৎসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এই শিল্পনগরী। আর এ কারণেই শিল্পনগরীতে বিনিয়োগকারী উদ্যোক্তারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

তাছাড়া বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) কার্যক্রম যে ভবনে বসে পরিচালিত হচ্ছে, সেই ভবনটিও অনেকটা জরাজীর্ণ।

মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শিল্প নগরীর প্রায় প্রতিটি সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে মাটি বের হয়ে গেছে। এর ফলে একটু বৃষ্টিতে প্রতিটি রাস্তায় পানি জমে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। পাশাপাশি অনেক জায়গায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে শিল্প নগরীর উদ্যোক্তারা। আর আশপাশের পরিবেশ দেখলে মনে হবে, এটা নামমাত্র শিল্পনগরী। যেই নগরী থেকে আশপাশের পুরো এলাকার উন্নয়ন হবে, কিন্তু সেই শিল্পনগরীর আজ এই জীর্ণদশা!

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কার্যালয়ের তথ্য মতে, ১৯৬০-৬১ সালে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নগরীর লাকুটিয়া সড়কের পাশে ১৩০.৬১ একর জমিতে বরিশাল বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলা হয়। পরে ১৯৮৯ সালে প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা হয়। বিপুল অর্থ ব্যয়ে সেখানে ৪৪৬টি প্লট নির্মাণ করা হয়। আর বর্তমানে শিল্প নগরীতে প্লটের সংখ্যা ৪৭০টি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Oct/02/1538461670469.jpg

এদিকে শিল্পনগরীতে শিল্প-কলকারখানা স্থাপনের জন্য নির্দিষ্ট ৪৭০টি বিভিন্ন গ্রেডের প্লটের মধ্যে এখনো ৭৫টি ফাঁকা পড়ে আছে। কাগজে-কলমে ৩৭৮টি প্লটের বিপরীতে ১৭৩ টি বিভিন্ন ধরনের শিল্প ইউনিট রয়েছে। কিন্তু এগুলোর মধ্যে বাস্তবিক অর্থেই চালু রয়েছে মাত্র ৮৮টি। আর ১৭টি শিল্প ইউনিট পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও বাস্তবায়নাধীন রয়েছে ৬৮টি শিল্প ইউনিট। কিন্তু বর্তমানে এই নানামুখী সমস্যার কারণে ওই সকল শিল্প ইউনিট আদৌ বাস্তবায়ন হবে কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়।

এদিকে বিসিক কার্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, জমির পরিমাণ, অবস্থান ও ধরনভেদে শিল্পনগরীর প্লটগুলোকে ৪টি ভাগে ভাগ করা হয়। যার মধ্যে ৩৭.৮৮ শতাংশ আয়তনের এ গ্রেডের প্লটের এককালীন দাম ধরা হয় ১১ লাখ টাকা, ২০.৬৬ শতাংশ আয়তনের বি গ্রেডের প্লটের দাম ৬ লাখ টাকা, ১৩.৭৭ শতাংশের সি গ্রেডের প্লটের দাম ধরা হয় ৪ লাখ টাকা এবং ডি গ্রেডের প্লটের দাম ধরা হয় ২ লাখ টাকা। প্লটের দাম একবারে দিতে না পারলেও ১০% বেশি দিয়ে কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ রয়েছে। সবকটি গ্রেডের প্রতি শতাংশের দাম ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৪০ টাকা।

বর্তমানে শিল্পনগরীতে এ গ্রেডের প্লটের সংখ্যা ১৩৪টি, বি গ্রেডের প্লটের সংখ্যা ৮১টি, সি গ্রেডের প্লটের সংখ্যা ৬৪টি, ডি গ্রেডের প্লটের সংখ্যা ১৭৮টি এবং এস (স্পেশাল) গ্রেডে ১৩টি প্লট রয়েছে।

তাছাড়া সুযোগ-সুবিধার ভিওিতে প্লটগুলোতে উন্নত ও অনুন্নত দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে উন্নত ৩৩৭টি ও অনুন্নত ১৩৩টি প্লট রয়েছে। এদিকে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা প্লটগুলোতে মাদক সেবনকারীদের আড্ডাস্থল এবং গো-চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে।

তবে উদ্যোক্তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মহাসড়ক কিংবা নদীবন্দর থেকে শিল্পনগরীর দূরত্বের বিষয়টি। মহাসড়ক এবং নদীবন্দর দূরে থাকায় এখানে উৎপাদিত শিল্পপণ্য সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে মালিকদের বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হয়।

তাছাড়া বর্তমানে এখানে চালু থাকা শিল্প কলকারখানাগুলোর মধ্যে খান সন্স টেক্সটাইল মিলস, ফরচুন সু কোম্পানি, বেঙ্গল বিস্কুট লি., মোহাম্মদী ইলেকট্রিক প্রজেক্ট, সুগন্ধা ফ্লাওয়ার মিলস, আজমিরী খাজা বিস্কুট, বরিশাল আয়রন মিলসহ অন্যান্য শিল্প ইউনিটগুলোও চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। তাই বহুমুখী সমস্যার কারণে ইতোমধ্যে অনেকেই তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Oct/02/1538461699108.jpg

বিসিকের একাধিক উদ্যোক্তারা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘শিল্পনগরীর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য কখনো কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আমরা সকল ধরনের ভ্যাট ও খাজনা দেই , কিন্তু বিপরীতে কিছুই পাইনা। কর্মকর্তাদের অবহেলায় ও সরকারের দৃষ্টিহীনতার কারণে আজ এই শিল্পনগরী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।’

এ সময় তারা আরও জানান, বিসিক শিল্পনগরীর রাস্তা ঘাটের উন্নয়নের পাশাপাশি যাবতীয় সমস্যাগুলোর সমাধান করা অতি জরুরি। স্থানীয় উৎপাদিত সম্ভাবনাময় পণ্যগুলো যদি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবহার বৃদ্ধি করা যায়, তাহলে এই শিল্পনগরীতে কয়েক লাখ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।

আর এই সকল সমস্যার কথা অকপটে স্বীকার করেন বিসিক শিল্প নগরী কর্মকর্তা মো. খায়রুল বাশার। তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, এতোদিন বরাদ্দের অভাবে উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা দিতে পারেননি। তবে এর বিপরীতে উদ্যোক্তাদের কিছু খামখেয়ালীপনাও রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি আরও জানান, উদ্যোক্তারা ঠিকমতো রাজস্ব খাতের টাকা পরিশোধ করে না। এর ফলে শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ উদ্যোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে পারছে না। তবে চলতি বছরেই শিল্পনগরীর উন্নয়নের জন্য ৫২ কোটি ২০ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। আর ইতোমধ্যে প্রকল্পটি ই-টেন্ডারের পর্যায়ে রয়েছে। তাই টেন্ডার হয়ে গেলে আগামী মাসের মধ্যেই বিসিক শিল্পনগরীর সকল রাস্তার উন্নয়নসহ যাবতীয় সমস্যা সমাধানে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

   

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মানবাধিকার সম্পর্কিত একটি নতুন শাখা চালু করার পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালং এবং ভাসানচর পরিদর্শনের জন্য বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়।

কমিটির সভাপতি এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শাহরিয়ার আলম, নাহিম রাজ্জাক, নিজাম উদ্দিন জলিল, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবুর রহমান, সাইমুম সারওয়ার, জারা জাবীন মাহবুব অংশ নেন।

 

;

ঢাকাসহ ৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাসহ দেশের আট জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এ অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

;

ইসলামি সংগীত শিল্পী সালমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় নিহত তিনজনের একজন সালমান আজাদী। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক। তার মৃত্যুতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সালমান আজাদী।

তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার হাপানিয়া এলাকার মৃত কোরবান আলীর ছেলে। নিহত সালমান স্ত্রী ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে নগরীর মাসকান্দা এলাকায় থাকতেন।

জানা গেছে, ইসলামি সংঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ময়মনসিংহে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সালমান আজাদী। ইসলামি সঙ্গীতের প্রসারে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন সালমান ইসলামি সঙ্গীত একাডেমি। প্রায় দুই বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে শিশুদের ইসলামি গান শেখাতেন। এছাড়াও ত্রিশালে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ইসলামি সঙ্গীতের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।

উদীয়মান এ ইসলাম সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে শোকাভিভূত পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, ক্যাম্পাসের সহপাঠী-শিক্ষার্থী, ইসলামি সংস্কৃতি প্রেমিসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শতশত মানুষের ফেসবুক স্ট্যাটাসে যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়েছে সানমানের ফেসবুক টাইমলাইন।

আব্দুর রহিম ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, কিছু মৃত্যুর সংবাদ মানুষকে ভীষণ বেদনা দেয়, ভীষণ কষ্ট দেয়। আর এই মৃত্যু যদি অকালে হয় বা আকস্মিক হয় তার শোক কাটিয়ে উঠা মোটেও সহজ না। সালমান আজাদী ইসলামিক শিল্প একাডেমির শিক্ষক ও স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি বাচ্চাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। বাচ্চাদের সুস্থ ধারার ইসলামিক সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যাপারে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল।

হানজালা রমজান মুন্না নামে আরেকজন লিখেছেন, প্রিয় হাসিমাখা মুখ ও সুন্দর করে কথা উপস্থাপন ছিল যার নৈমিত্তিক অভ্যাস। ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ায় পেছনে ময়মনসিংহ শহরে যাদের অবদান, তাদেরই একজন ছিলেন। মনের মধ্যে ছিল ইসলামের জন্য তীব্র ভালবাসা। ভাইয়ের ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের উঁচু মাক্বাম দান করুন।

স্বামীর শোকে বাকরুদ্ধ স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, সালমান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ক্লাস করতেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ত্রিশাল যাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে সালমান আজাদীর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এক শোকবার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৭-'১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে ২০২১-'২২ সেশনে অধ্যয়নরত মো. সালমান আজাদী (২৫) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় ত্রিশালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়-পরিবারের পক্ষে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে সালমানের বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য প্রার্থনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, বিনা ময়নাতদন্তের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার ত্রিশাল বাজারের সাইফুল কমিশনারের বাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত অন্য দুইজন হলেন, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামের এনামুল হকের মেয়ে রুবাইরা তাজনিম (২) ও চিকনা মনোহর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৪)।

;

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীরাঙ্গনাদের সম্মাননা দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের বহু যুবক ও ছাত্র জনতার আত্মহুতির অবদান। এই যুদ্ধে নারীদের অবদানও কোন অংশে কম নয়। এ যুদ্ধে অসংখ্য নারী সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ইজ্জতও দিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বেদনা দত্ত। বেদনা দত্তের মতো বীরাঙ্গনাদের স্মরণীয় করে রাখতে বীরাঙ্গনা স্মৃতিসৌধ বা রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বড়ি-বাড়ির বেদনা দত্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্বেই স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ তিন শিশুকে নিয়ে অনেক দুঃখ কষ্টে দিন পার করছিলেন। ঠিক সেই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়ানোসহ তাদের নানাভাবে সহয়তা করতেন বেদনা দত্ত। আর এমন খবর পেয়ে রাজাকার সদস্যরা বেদনাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়। বাড়ির পাশে রেল ব্রিজের নিচে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ৪ দিনে নির্যাতন শেষে মৃত ভেবে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয় বেদনাকে।

পরে সেখান থেকে দুইদিন পর প্রাণ ফিরে পেলেও ইজ্জত আর সন্তানদের জীবন রক্ষায় এলাকা ছেড়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে আসলেও জীবন চলে অনাহারে অর্ধাহারে। এভাবেই পার করতে হয়েছে জীবনের প্রায় অর্ধশতাব্দি। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসলে তার কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তাকে বীরাঙ্গনা হিসেবে নথিভুক্ত করেন এবং ভাতার আওতায় আনেন। সেই সাথে মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে তার জন্য তৈরি করা হয় বীর নিবাস। এখন এলাকাবাসীর দাবি বেদনা দত্তের অবর্তমানে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। অথবা তার নামে স্থানীয় কোন রাস্তা বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযুদ্ধাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় জিনারদী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান উদ্দিন পাঠান বলেন, আমরা জানতামই না আমাদের এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছে। সরকার যখন বেদনা দত্তকে একটি বীর নিবাস তৈরি করে দেয় তখনই জানতে পারি এই এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মম নির্যাতনের শিকার এই নারী হয়তো একদিন থাকবেনা। কিন্তু তাকে যেনো পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখে এবং স্মরণ করে সেজন্য তার নামে একটি সড়কের নামকরণ বা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাই।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেদনা দত্তের মতো আরও যারা বীরাঙ্গনা রয়েছেন তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। নরসিংদীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে যা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

;