চবিতে ভালোবাসার তোরণ
শহর থেকে ট্রেন লাইন এসে শেষ হয়েছে পাহাড়ের পাদদেশে। তারপর খানিকটা পথ পেরিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মূল ক্যাম্পাস।
চট্টগ্রাম মহানগর থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী বিশ্বের মধ্যে অনন্য সংযোজন শাটল ট্রেনে চেপে আসে চির সবুজ প্রাণের ক্যাম্পাসে। ঘন সবুজ বনানী আর ছোট ছোট পাহাড়ের অনিন্দ্য ক্যাম্পাসে প্রবেশকালে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নবনির্মিত একটি তোরণ, যার প্রতিটি ইটে মিশে আছে স্মৃতি ও ভালোবাসার স্বর্ণরেণু।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম ব্যাচের অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে এই সুদৃশ্য তোরণটি। নিজের ক্যাম্পাসের প্রতি দরদ ও দায়বদ্ধতা থেকে ২৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা নির্মাণ করেন তোরণটি। নিজেদের স্পর্শ প্রিয় ক্যাম্পাসে স্থায়ী করে রাখার বাসনা কাজ করেছে এই উদ্যোগের নেপথ্যে।
এই সুন্দর তোরণ-এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয় ৯ অক্টোবর ২০১৫ সালে। তিন বছর পর উদ্বোধন হয় ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে। চমৎকার নকশা আর নির্মাণশৈলীতে অপরূপ তোরণটি তৈরি হয়েছে অনেক যত্নে ও আদরে। ২৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সরাসরি খোঁজ-খবর নিয়েছেন সমগ্র কার্যক্রমের।
২৪তম ব্যাচের ছাত্র এবং বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, হালদা-বিশেষজ্ঞ ড. মনজুরুল কিবরিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বিগত তিন বছরে এখানের প্রতিটি ইটের গাঁথুনির সঙ্গে জমা হয়ে আছে অনেক স্মৃতি (ভালো-মন্দ দুটোই)। অব্যক্ত কথাগুলো আর কখনো প্রকাশ করতে চাই না। তোরণের রঙিন ছবিগুলো সুখ স্মৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাই সামনের দিনগুলো। আমাদের ২৪তম ব্যাচের সকল শিক্ষার্থী এই তোরণের মাধ্যমে চবি ক্যাম্পাসে চিরদিন স্পন্দিত হবেন।'
চবির ২৪তম ব্যাচের কয়েক হাজার শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই বিদেশে প্রবাস জীবন কাটাচ্ছেন। কর্ম ও পেশার কারণে ছড়িয়ে গেছেন দেশের নানা স্থানে। সকলের সাধ্য মতো শ্রম, মেধা, অর্থে নির্মিত তোরণটি ২৪তম ব্যাচের কথা বার বার মনে করিয়ে দেয়। শিক্ষাজীবন শেষে সুদূরে চলে গেলেও তারা তাদের নির্মিত কর্মের মাধ্যমে স্থায়ী হয়ে থাকেন চবি ক্যাম্পাসের হৃদয়ের কন্দরে। নিজের প্রিয় ক্যাম্পাসের জন্য কিছু করতে পারার অনুকরণীয় দৃষ্টান্তের মাধ্যমে ২৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় মিশে আছেন প্রাণের চবির অস্তিত্বে।