মানহীন পণ্যের ভিড়ে আসল পণ্য চেনা দায়



আবদুস সাত্তার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহিত

ছবি: সংগৃহিত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশজুড়ে মানহীন পণ্যের ভিড়ে আসল পণ্য পাওয়াটাই দিন দিন দুষ্কর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বাজার, দোকান, সুপার শপ সব জায়গাতে ভেজালমুক্ত খাদ্যপণ্য মিলানো কঠিন হয়ে উঠছে। মাছ, মাংস, দুধেও ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন কেমিক্যাল। ফলে সঠিক মানের শিশু খাদ্য মেলাও দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে মানহীন পণ্য বাজার দখল করতে চললেও নীরব দর্শকের ভূমিকায় আছে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্ট্রিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই)।  এমন পরিস্থিতিতে এরই মধ্যে ১৪ অক্টোবর (রোববার) পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব মান দিবস’। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে আর্ন্তজাতিক মান’।

জানা যায়, মাছ, মাংস, ফলে ফরমালিনের ব্যবহার কমলেও বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে এখনো। শাক-সবজিতে রাসায়নিক কীটনাশক, ব্রেড, বিস্কুট, সেমাই, নুডলসসহ সব রকম মিষ্টিতে টেক্সটাইল-লেদারের রং। আর মুড়িতে ইউরিয়া-হাইড্রোজেনের অবাধ ব্যবহার তো চলছেই। অতিরিক্ত রেডিয়েশনযুক্ত শিশুখাদ্য গুঁড়া দুধ আমদানি হচ্ছে দেদারসে। নোংরা পানি ব্যবহার করে আইসক্রিম বানানো হচ্ছে ময়লা-আবর্জনার স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে। খাদ্যপণ্যে ভেজাল মেশানোটা রীতিমতো অঘোষিত নিয়মে পরিণত হয়েছে।

চাল, আটা, লবণ, চিনি, ভোজ্যতেল, আলু থেকে শুরু করে রুটি, কেক, মিষ্টি, বিস্কুট কিছুই ভেজালের ছোবল থেকে বাদ যাচ্ছে না। জীবনধারণের জন্য সবচেয়ে জরুরি পানি পর্যন্ত নিরাপদ থাকছে না।

যত্রতত্র নকল কারখানা বানিয়ে পুকুর-ডোবা ও ওয়াসার পানি সরাসরি গামছায় ছেঁকে বোতলজাত করা হচ্ছে। সে পানিতে থাকছে আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম-লেড-ইকোলাই। এসব পানিই ‘বিশুদ্ধ মিনারেল পানি’ হিসেবে নামিদামি কোম্পানির সিলমোহরে সরবরাহ করা হচ্ছে।

কলা, আম, পেঁপে, পেয়ারা, আনারস থেকে শুরু করে আপেল, আঙ্গুর, নাশপাতিসহ দেশি-বিদেশি প্রায় সব ফলেই মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যাল। অপরিপক্ব ফল পাকাতে ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও তা উজ্জ্বল বর্ণে রূপান্তরের জন্য অধিক ক্ষারজাতীয় টেক্সটাইল রং ব্যবহার হচ্ছে অবাধে।

বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা, সীমিত তৎপরতা ও মাসোহারার দৌরাত্ম্যে জনস্বাস্থ্য চরম হুমকির মুখে পড়েছে। মানসম্পন্ন পণ্য ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাসহ ক্রেতাস্বার্থ রক্ষায় কারও কোনো মাথাব্যথা নেই।

কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারির অভাবে দেশ মানহীন, অবৈধ, নকল খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজারে সয়লাব হয়েছে। অনেকে আবার বিএসটিআইর লোগো ছাপিয়ে এসব মানহীন পণ্য বাজারজাত করছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। সংস্থাগুলোর পারস্পরিক সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এটা থেকে রেহাই মিলবে না।

তিনি বলেন, ‘বারবারই নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতি বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে বলে আসছিলাম। বাজারগুলোতে তদারকি ও সমিতির সাথে আলোচনা এবং সতর্ক করা হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের চেয়েও ভালো ফল পাওয়া যেতো। এখন মাঝে মাঝে অভিযান হয়, জরিমানা করা হয়। কার্যত কোনো সুফল আসছে না। এভাবে চলতে থাকলে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে।’

সূত্র মতে, বিএসটিআই মান কোড সমর্থন করে- এমন পণ্যের বাজারজাতকরণের আগেই পণ্যের গুণগত মানের নিশ্চয়তা (পণ্য পরিক্ষা) বিএসটিআই সিএম সনদ গ্রহণ করতে হয়। সিএম সনদ ছাড়া পণ্যের উৎপাদন ও বাজারজাত করা যায় না।

পণ্যের মোড়কে সিএম সনদের নম্বরও উল্লেখ করতে হয়। কিন্তু অনেক পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান বিএসটিআইয়ের সিএম সনদ না নিয়েই পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। পরীক্ষাবিহীন এসব পণ্যের গুণগত মান ঠিক রয়েছে কিনা, তা যাচাই করতে পারেন না ভোক্তারা। আবার বিএসটিআই মনোগ্রাম ব্যবহার করাতে সরল বিশ্বাসে ভোক্তারা প্রতারিত হচ্ছেন।

বিএসটিআই চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক সাজ্জাতুল বারি বার্তা২৪কে বলেন, ‘ভেজাল থেকে বাচার জন্য ঐ ভেজাল পণ্য এড়িয়ে চলতে হবে। আসল এবং নকল পণ্য চিনে ব্যবহার করতে হবে। আমাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। বিএসটিআইয়ের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ ভিজিলেন্স টিমের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।’

বিএসটিআই সূত্র মতে, বিএসটিআইয়ের মূল তদারকির কাজ চারটি বিভাগের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বিভাগগুলো হল- টেস্টিং কেমিক্যাল, টেস্টিং ফিজিক্যাল, মেট্রোলজি ও সার্টিফিকেশন মার্কস (সিএম)। কেমিক্যাল পরীক্ষার জন্য তালিকাভুক্ত ১৯৪ টি পণ্যের মধ্যে চট্টগ্রামে সম্পূর্ণ করা যায় মাত্র ৫৯টি। বাকি পণ্যেগুলোর পরীক্ষার জন্য ঢাকার ওপর নির্ভর করতে হয়।

কেমিক্যাল টেস্টের বাইরে ২৫টি পণ্য রয়েছে টেস্টিং ফিজিক্যালের তালিকাভুক্ত। এই বিভাগের ২৫টি পণ্যের মধ্যে মাত্র নয়টি পণ্যের শতভাগ পরীক্ষা চট্টগ্রামে করা সম্ভব হচ্ছে। নতুন আঞ্চলিক ভবন হলে পূর্ণাঙ্গ ল্যাব সুবিধা পাবে বিএসটিআই। তখন তালিকাভুক্ত সকল পণ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। এতে করে পণ্যের মান সম্পর্কে সচেতনতা ও নিশ্চয়তা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

   

মশা নিয়ন্ত্রণে গবেষণার প্রয়োজন বোধ করছেন চসিক মেয়র!



স্টাফ করেসপেন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে তিন বছর পূর্ণ হয়েছে মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেইে গত তিন বছরে ছোট্ট মশাই যেন বড় ব্যর্থতা তাঁর! তবে মেয়র এই ব্যর্থতার দায় চাপাচ্ছেন মশার প্রতিরোধক্ষমতার উপর। এবার মশা নিয়ন্ত্রণ করতে গবেষণার প্রয়োজনও বোধ করছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে লালদিঘী পাড়স্থ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত চসিকের ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৮তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, মশার ঔষধের প্রতি মশার প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়েছে। এখন ঔষধ মেরেও মশা মারা যাচ্ছে না। মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে গবেষণা প্রয়োজন।

সভায় মশার প্রকোপ কমাতে আগামী সপ্তাহ (৩১ মার্চ) থেকে কার্যক্রম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে মেয়র বলেন, ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও মশা দ্রুত বাড়ছে। আগামী সপ্তাহ থেকে স্প্রেম্যান থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট লোকবল বাড়িয়ে মশা নিধনে প্রতিটি ওয়ার্ডে আরও ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। ডেঙ্গু প্রকোপ প্রতিরোধে এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কাউন্সিলরদের মাঠে থেকে তদারকি করতে হবে এ কার্যক্রম।

‘অনেকে মনে করে টনকে টন মশার ঔষধ মারলেই মশা কমবে, এটা ঠিকনা। আমাদেরকে পরিবেশগত ভারসাম্যের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। একসময়ে শহরে ব্যাঙ পাওয়া যেত যেটা মশার লার্ভা খেয়ে মশা কমাতে সহায়তা করত। বিভিন্ন ধরনের উপকারী কীট-পতঙ্গ পাওয়া যেত, যা পাওয়া যাচ্ছে না।’

জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, আমাদের পরিচ্ছন্ন বিভাগ নালা-গুলো পরিস্কার করছে। অনেক সময় দেখা যায় নালায় ডাবের খোসা থেকে লেপ-তোষক সব ফেলা হয়েছে যা জলাবদ্ধতা তৈরি করে মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে। জনগণ সচেতন না হলে মশার প্রকোপ কমানো কঠিন হবে। জনগণ বাড়িতে থাকা জমা পানি প্রতি তিনদিনে একদিন ফেলে দিলে এবং যত্রতত্র ময়লা ফেলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি থেকে জনগণকে বিরত রাখতে পারলে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে। সিডিএ ৩৬টা খালে যে জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্প করছে সেগুলোতে বাধ দিতে হয়েছে। সিডিএ বর্ষার আগে বাধ ও খালের মাটি অপসারণ করলে জলাবদ্ধতা ও মশার প্রকোপ কমবে।

আর্থিক সমস্যায় চট্টগ্রামের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় শহর। চট্টগ্রামকে ঘিরে বে-টার্মিনাল, শিল্পপার্ক, গভীর সমুদ্র বন্দরসহ অনেকগুলো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পগুলোকে সফল করতে যে ধরনের অবকাঠামো চট্টগ্রামের দরকার তা কেবল শুধু হোল্ডিং ট্যাক্স আর ট্র্রেড লাইসেন্সের আয় দিয়ে তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব নয়।

‘আমরা বন্দরের আয়ের ১ শতাংশ চেয়েছিলাম। আইনের গ্যাড়াকলে তা হয়নি। অথচ বন্দরের ৩০ থেকে ৪০ টনের লরি চলাচল করে শহরের রাস্তা নষ্ট করে ফেলছে। প্রতিদিন যে কন্টেইনার খালাস হচ্ছে তা থেকে আয়ের একটি অংশ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে দেয়া উচিৎ। চসিকের ভবনগুলোকে উর্ধ¦মুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে আয়বর্ধন করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করব। চসিকের রাজস্ব বিভাগকেও আয় বহুমুখীকরণে মনোযোগ দিতে হবে। সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বানাচ্ছে। সিডিএ টোল আদায় করবে কিন্তু চসিকের হিস্যা কী হবে তা আলাপ করা উচিৎ ছিল। কারণ সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় এক্সপ্রেসওয়ে বানাবেন, সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা দিয়ে গাড়ি উঠা-নামা করবে, আমরা সড়ক সংস্কারে ব্যয় করব অথচ আমাদের কোন হিস্যা থাকবেনা তা হবেনা।’

নগরীতে আলোকায়ন প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, চসিকের বিদ্যুৎ উপ-বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছিলাম রমজানে সড়কে, মসজিদে, কবরস্থানে আলোকায়ন করতে। কিন্তু, আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি অনেক রাস্তায়, গলিতে বাতি জ্বলেনা।

কাউন্সিলররা নিজ নিজ এলাকার বিদ্যুতের ইন্সপেক্টরদের নাম্বার রাখার পরামর্শ দিয়ে মেয়র বলেন, কোন সড়কে বাতি না জ্বললে জানতে চাবেন কেন বাতি জ্বলছেনা। কেউ রেসপন্স না করলে লিখিত অভিযোগ দিবেন। পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা অনেক সময় শোনা যায় এক-দুই ঘন্টা কাজ করে চলে যায়। এদের ব্যাপারেও অভিযোগ দিবেন। তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বরখাস্ত করে দিব।

হকার উচ্ছেদ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও র‌্যাবের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অবৈধ হকার উচ্ছেদ হওয়ায় মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। মানুষ খুবি খুশি। মানুষের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ নিরসণ হয়েছে। গরীব হকারদের জন্য হলিডে মার্কেটের ব্যবস্থা করব। তবে, হকারদের নিয়ে কাউকে চাঁদাবাজি করতে দেয়া হবে না। অলিতে-গলিতে হকার বসিয়ে মানুষকে কষ্ট দেয়া বন্ধ করব। রেলওয়ে ও গণপূর্তর সাথে আমরা যোগাযোগ করছি। পরিত্যক্ত ভূমিতে কেবল সপ্তাহে দু’দিন হলিডে মার্কেট চালু করা হবে।

হলিডে মার্কেট প্রসঙ্গে গণপূর্ত অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী রমিজুর রহমান জানান, চসিকের উচ্ছেদ অভিযানে বায়েজিদ বোস্তামীতে দুটি ভূমি অবৈধ দখল থেকে মুক্ত হয়েছে। বায়েজিদ এলাকায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের উদ্ধারকৃত জায়গায় হকারদের জন্য হলিডে মার্কেট স্থাপনের বিষয়ে মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন দিতে হবে। জনস্বার্থ বিবেচনায় হলিডে মার্কেট বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

চসিকের প্রকৌশল বিভাগের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, শুস্ক মৌসুমে ফুটপাত রং করা, জ্যাব্রাক্রসিং এবং রোডমার্কিং এর কাজ একমাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। কিছুদিন আগে একজন জানালো একটা রাস্তা বানানোর মধ্যে রাস্তাটা কেটে ফেলেছে। সমন্বয় করলে রাষ্ট্রের সম্পত্তির এ অপচয় রোধ করা যাবে। আমাদেরকে কিছু কিছু সড়কে ব্লক দিয়ে নির্মাণ করা যায় কীনা তা ভাবতে হবে। প্রয়োজনে পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে

ঈদের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান মেয়র।

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, স্থায়ী কমিটির পরামর্শ অনুসারে ১ জুলাই থেকে অস্থায়ী কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হবে। চসিকের অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের কার্যক্রমও অনেকটুকু এগিয়ে গেছে।

সভায় ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রউফ জানান, গ্রীস্মে কিছু এলাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা পানি সরবরাহ ও লিকেজ মেরামতের জন্য ভিজিল্যান্স টিম গঠন করেছি। সহসাই পানির সংকটের সমাধান হবে।

সভায় ট্রাফিক বিভাগের এডিসি মো. কাজী হুমায়ুন রশীদ বলেন, অবৈধ হকার উচ্ছেদ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সর্বাত্মক সহায়তা করেছে এবং ভবিষ্যতেও এধারা অব্যাহত থাকবে। তবে, উচ্ছেদ অভিযান বিকালে পরিচালনা করলে আরো বেশি সুফল পাওয়া যাবে। কারণ হকাররা মূলত বিকালে সড়ক-ফুটপাত দখল করে নিচ্ছে যা নগরীতে তীব্র যানজট সৃষ্টি করছে। নির্বিঘ্নে রাস্তা পারাপারের স্বার্থে নগরীজুড়ে জেব্রা ক্রসিং গড়ে তুলতে হবে।

সভায় বিগত সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, দরপত্র কমিটির কার্যবিবরণী এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী অনুমোদিত হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতিগণ তাদের নিজ নিজ স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী পেশ করেন। সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, প্যানেল মেয়রবৃন্দ, কাউন্সিলরসহ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

;

এক এলইডি লাইটের দাম ২৮ হাজার, দুদকের জালে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ রেলওয়ে (পূর্বাঞ্চল), চট্টগ্রাম অফিসে রেলের যন্ত্রাংশ ক্রয়ে ভয়াবহ দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক টিম বৈদ্যুতিক প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ৯০টি এলইডি লাইট এবং এলইডি ল্যাম্প কেনার তথ্য সংগ্রহ করে। সেগুলোর ক্রয় সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করার জন্য সিওএস এর দপ্তরে যায়। সেখান থেকে ডকুমেন্টস সংগ্রহ পর্যালোচনা করে দুদক টিম দেখে, প্রতিটি এলইডি লাইট ২৭ হাজার ৭০০ টাকায় ক্রয় করা হয়েছে। যা অসঙ্গতিপূর্ণ বলছে দুদক।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল অফিসে অভিযান চালিয়ে এমন তথ্য পায় দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম। 

দুদুক জানায়, দুদক টিম ট্র‍্যাক সাপ্লাই কর্মকর্তা কার্যালয় থেকে লিফটিং জ্যাক, ড্রিলিং মেশিন এবং কাটিং জ্যাক ক্রয় সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে। এতে দেখা যায়, এই পণ্যগুলোর প্রাক্কলিত দর ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সেখানে এই পণ্যগুলো ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার অধিক ব্যয়ে কেনা হয়। যা পিপিপি এবং পিপিআরের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলছে দুদক। মূলত ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে একই ঠিকানায় নিবন্ধিত দুইটি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে তাদের মধ্যে একটিকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। যা প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়। এছাড়া বাজারমূল্য নির্ধারণ কমিটি কীসের উপর ভিত্তি করে ওইসব পণ্যের বাজারমূল্য নির্ধারণ করেছে, সেসব সংক্রান্ত কোন ডকুমেন্টস পায়নি দুদক।

দুদুক আরও জানায়, একই টিম পরে পাহাড়তলীতে অবস্থিত রেলের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ও জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অভিযান চালায়। সেখানে অবস্থিত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আরএ্যাণ্ডআই এর মেরামতকৃত কক্ষ পরিদর্শন করেন। ওয়াকিটকি ক্রয় সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনায় প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়।

অভিযান শেষে সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, রেলে লিফটিং জ্যাক, ড্রিলিং মেশিন এবং এবং কাটিং জ্যাক ক্রয় সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে দেখা যায়, এই পণ্যগুলোর প্রাক্কলিত দর ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সেখানে এই পণ্যগুলো ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার অধিক ব্যয়ে কেনা হয়। যা পিপিপি এবং পিপিআরের সুস্পষ্ট লঙঘন। এছাড়া আরও কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালানো হয়, যেগুলোর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। আমরা এগুলো ভালো করে পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।

;

নোয়াখালীতে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর সেনবাগ পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত মোহাম্মদ তাহসিন মাহমুদ (৪) উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামে পুকুরের গ্রামের মিজি বাড়ির হেদায়েত উল্যা মিয়াজীর ছেলে। সে তাহিরপুর নূরানী তালিমুল কুরআন হাফেজী মাদরাসা প্রথম জামায়াতের ছাত্র ছিল।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর পৌনে ২টার দিকে উপজেলার উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামে পুকুরের গ্রামের মিজি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে দিকে শিশু ছেলেকে ঘরে রেখে পরিবারের কাজে ব্যাস্ত ছিল তার মা। ওই সময় মায়ের অগোচরে বাড়ির পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে অনেকক্ষণ তাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুজি শুরু করে। পরবর্তীতে দুপুরের দিকে পুকুর থেকে তাহসিনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেএ নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার থানায় কোনো অভিযোগ করেনি।

;

তরমুজ বিক্রির কার্যক্রম পরিদর্শন: মন্ত্রী বললেন ‘সিন্ডিকেট ভাঙার বড় উদ্যোগ’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
তরমুজ বিক্রির কার্যক্রম পরিদর্শন: মন্ত্রী বললেন ‘সিন্ডিকেট ভাঙার বড় উদ্যোগ’

তরমুজ বিক্রির কার্যক্রম পরিদর্শন: মন্ত্রী বললেন ‘সিন্ডিকেট ভাঙার বড় উদ্যোগ’

  • Font increase
  • Font Decrease

‘কৃষকের পণ্য, কৃষকের দামে’-এই স্লোগানে বাংলাদেশ এগ্রি ফার্মার্স এসোসিয়েশনের (বাফা) উদ্যোগে ও ব্যবস্থাপনায় রাজধানীতে তরমুজ বিক্রির কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, এটি সিন্ডিকেট ভাঙার একটি বড় উদ্যোগ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়ির পাশে বঙ্গবন্ধু চত্বরে তরমুজ বিক্রির কার্যক্রম পরিদর্শন করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, অনেক পরিশ্রম করে কৃষকেরা এ তরমুজ চাষ করেন। সেই কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি ও উন্নতির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বাফা নেতৃবৃন্দ আমার সঙ্গে যখন পরামর্শ করতে এলো, তখন আমি তাঁদের বললাম, ভোক্তারা তরমুজ খেতে চায়, কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় অনেকে কিনতে পারছেন না। আপনারা উদ্যোগ নিন। এরপর তারা এ উদ্যোগ নিয়েছে। আমি মনে করি, এটি সিন্ডিকেট ভাঙার একটি বড় উদ্যোগ।’

সিন্ডিকেটের তথ্য গণমাধ্যমে আরো বেশি করে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উৎপাদক ও ভোক্তা পর্যায়ে দামের বিরাট পার্থক্য রোধে সরকার কাজ করছে। আপনারা গণমাধ্যমে সিন্ডিকেটের তথ্য আরো বেশি করে তুলে ধরুন। কোথাও সিন্ডিকেটের তথ্য পেলে সেটি ভাঙতে আমরা দেরি করব না।

মন্ত্রী বলেন, সরকার তো জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির জন্য সরকারের অনেক উদ্যোগ রয়েছে। কিন্তু সব উদ্যোগ সারা দেশে একসঙ্গে নেওয়ার মতো জনবল ও বিশেষজ্ঞ নেই। তারপরও আমরা জনগণের মঙ্গলের জন্য যতটুকু পারছি কাজ করে যাচ্ছি।

বাফার সভাপতি একেএম নাজিব উল্লাহ্ বলেন, কৃষকেরা যে মূল্যে পণ্য উৎপাদন করে এবং বিক্রি করে ভোক্তারা সেই দামে পণ্য পায় না। ভোক্তারা কয়েকগুণ বেশি দামে সেই পণ্য কিনে। যার ফলে পণ্যের দামের তফাৎ অনেক বেশি দেখি। এটা সমন্বয় হওয়া দরকার। বাড়তি দামের সুবিধা কৃষকেরা পায় না; মধ্যস্বত্বভোগীরা লভ্যাংশটা খেয়ে ফেলে, তাদের আটকাতে হবে। এজন্য আমরা কৃষকের দামে তরমুজ বিক্রির এ উদ্যোগটি নিয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা সারা দেশের মানুষকে দেখাতে চাই, তরমুজের দাম বেশি না। কিন্তু বেশি দামে এটি বিক্রি হচ্ছে।

রোজার শুরুতে বা আরো আগে এ উদ্যোগ কেন নেওয়া হলো না-এমন প্রশ্নের জবাবে বাফার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইমরান হোসেন বলেন, তরমুজের ভরা মৌসুম এখনো শুরু হয় নি। রমজানের শুরুতে যেসব তরমুজ বাজারে এসেছিল, তার বেশির ভাগই ছিল অপরিপক্ব। আমরা শুধু কম দাম নয়, কোয়ালিটিও নিশ্চিত করতে চেয়েছি। সেজন্য, এ সময়টি বেছে নিয়েছি।

বাফা নেতৃবৃন্দ জানান, আজ দুপুর থেকে কৃষকের দামে ৫ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ১০০ টাকা, ৭ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ১৫০ টাকা, ৯ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ২০০ টাকা, ১১ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ২৫০ টাকায় পিস হিসাবে বিক্রি শুরু হয়েছে। কৃষক সরাসরি তাঁর উৎপাদিত তরমুজ বিক্রি করছেন।

রাজধানীর ৫টি স্থানে এই কার্যক্রম চলছে। স্থানগুলো হলো- খামারবাড়িতে বঙ্গবন্ধু চত্বর, উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের জমজম টাওয়ার, সচিবালয়ের সামনে আব্দুল গণি রোড, মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন এবং পুরান ঢাকার নয়াবাজার। ২৭ রমজান পর্যন্ত এই উদ্যোগটি চলবে এবং পরবর্তীতে বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

তরমুজ কেনায় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে এবং আজ প্রথমদিনে ৫টি স্থানে ২ হাজার ৫০০টি তরমুজ কয়েক ঘন্টার মধ্যে বিক্রি শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে বাফা।

;