আমি অপমানিত বোধ করেছি: মাহবুব তালুকদার
পাঁচ দফা প্রস্তাবনা উপস্থাপন করতে না দেওয়ায় আপমানিত বোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
তিনি বলেছেন, 'একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশীদারমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে কতিপয় প্রস্তাবনা শিরোনামে আমি যা আলোচনা করতে চেয়েছিলাম, আমাকে নির্বাচন কমিশন সভায় তা উপস্থাপন করতে দেওয়া হয়নি। অথচ গত ৮ অক্টোবর ইসি সচিবালয় থেকে ইউওনোটের মাধ্যমে আমাকে আজকের সভায় তা উপস্থাপন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিলো। আমাকে আমার প্রস্তাবনা উপস্থাপন করতে বলে – করতে না দেওয়া আমি আপমানিত বোধ করেছি।'
সোমবার (১৫ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'বাক প্রকাশের স্বাধীনতা ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধান প্রদত্ত আমার মৌলিক অধিকার। নির্বাচন কমিশন কোনোভাবেই আমার এই অধিকার খর্ব করতে পারে না। এমতাবস্থায় কোনো উপায় না পাওয়ায় আমি নির্বাচন কমিশনের এরকম সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছি এবং এর প্রতিবাদস্বরূপ নির্বাচন কমিশনের সভা বর্জন করেছি।'
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনামোতায়েন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, নির্বাচনে নিরপেক্ষতা, নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সরকারের সঙ্গে সংলাপ-এই পাঁচটি বিষয়ে তিনি কমিশন সভায় কথা বলতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন মাহবুব তালুকদার।
সেনা মোতায়েন বিষয়ে তিনি বলেন, 'আগের নির্বাচনগুলোতে সেনাবাহিনীর মূল্যায়ন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কীভাবে তাদের ব্যবহার করা যায়, তা ঠিক করতে হবে।'
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বিষয়ে এই কমিশনারের বক্তব্য, 'অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে নির্বাচনে অনিয়মের পথ বন্ধ হয়। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ না হলে তা গণতন্ত্রের পূর্ণ বিকাশকে সমর্থন করে না। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশন দ্বিপক্ষীয়ভিত্তিতে আলোচনা করতে পারে।'
নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বিষয়ে তিনি বলেন, 'নির্বাচনে নিরপেক্ষতা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ওপর নির্ভর করে। নির্বাচনের সময় সংসদ সদস্যদের নিষ্ক্রীয় রাখা নির্বাচনের কমিশনের একার ওপর নির্ভর করে না। এতে সরকারের সহযোগিতার দরকার হয়।'
ইসির সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে মাহবুব তালুকদার বলেন, 'নির্বাচন কমিশনের যথেষ্ট ক্ষমতা আছে। কিন্তু ক্ষমতা প্রয়োগে সীমাবদ্ধতাও আছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে, রাজনৈতিক বাস্তবতায় কমিশন ক্ষমতা প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ওপর খুব একটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারে না। ক্ষমতা প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কীভাবে আরও নিয়ন্ত্রণাধীন করা যায়, তা দেখা উচিত।'
সরকারের সঙ্গে সংলাপ বিষয়ে তিনি বলেন, 'জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকার নির্বাচন কমিশনের বড় অংশীজন। সংলাপে দেখা যায়, কিছু বিষয় রাজনৈতিক বা সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। এসব বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সংলাপ আবশ্যক।'