চট্টগ্রাম নগরীর মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে দেবী দর্শন
শরতের আকাশে বর্ষার কৃষ্ণবর্ণ মেঘ যখন শুভ্ররূপ ধারণ করে, তখন পৃথিবীতে আগমন ঘটে দেবী দুর্গার। সনাতনী রীতি মেনে শাস্ত্রমতে দেবীর বোধন মহাষষ্ঠীতে। অসরদুলানী দেবী দুর্গা এবার ধরাধমে অবতীর্ণ হয়েছেন ঘোড়ায় চড়ে। দেবী দুর্গার আরাধনা লাভের এই মহোৎসবে চট্টগ্রাম নগরীর পূজামণ্ডপে লেগেছে উৎসবের আমেজ।
উলুধ্বনি, শঙ্খ, ঘণ্টা আর ঢাকের বোলে বরণ করে নেওয়া হচ্ছে দেবী দুর্গাকে। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মাতৃসম্মনা, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উজ্জীবিত মূলমন্ত্রের মধ্য দিয়ে চলেছে দেবীর আরাধনা। আর সারাদিন ধরে উপোষ মায়েরা সন্তানের সমৃদ্ধির জন্য করছেন প্রার্থনা। অনেকে এই বিশেষ দিনে আমিষ ও চাল খাওয়া থেকে বিরত থাকেন।
পূজার সাথে মিলিয়ে মেয়েরা শাড়ি আর ছেলেরা পাঞ্জাবি পরে আসছেন পূজামণ্ডপে দেবী দর্শন করতে। সারাদিন ঘোরাঘুরি, হৈহুল্লোড় আর আনন্দ-উল্লাসে মেতেছেন সব বয়সী মানুষ।
নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকার জেমসন হলের পূজামণ্ডপে আসা রাহুল দাশ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সমাজের সকল মানুষের দুঃখ ও মানবতার কল্যাণে মা দেবীর আগমন ঘটে। সকল খারাপ ও অন্যায্য কাজকে বিনষ্ট করে পৃথিবীতে কল্যাণ নিয়ে আসবেন।’
পূজামণ্ডপে উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়লেও সনাতনী ধর্মালম্বীদের মনে বিরাজ করছে ক্ষোভ। সারাবছর ধরে জাঁকজমক ও আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে দুর্গা পূজা পালনের জন্য ক্ষণ গণণা করেন সনাতন ধর্মালম্বীরা। কিন্তু পূজার সবচেয়ে আর্কষণীয় অষ্টমীর দিন স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়াও শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) মা দেবীর বির্সজনের পরের দিন রাখা হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা। এতে ধর্মীয় উৎসব উৎযাপনে ব্যাঘাত ঘটবে বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর পূজা উৎযাপন পরিষদের প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট টিপু শীল জয়দেব বার্তা২৪.কমকে আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘মহা অষ্টমীর দিনে শিক্ষার্থীসহ সবাইকে ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় দিবসের প্রাক-প্রস্তুতির জন্য স্কুল-কলেজে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এখন আমরা কি পূজা পালন করব নাকি স্কুলে-কলেজে ছুটে যাব?’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি বির্সজনের পরের দিন আইনের চূড়ান্ত পরীক্ষা না রাখার জন্য। সংবাদ সম্মেলনেও দাবিসমূহ লিখিত আকারে জানিয়েছি। এমন বঞ্চনা ও অবহলো মেনে নেওয়া যায় না।’