আলো ছড়াচ্ছে মুন্নার ড্রাগন বাগান
বান্দরবানের মিয়ানমার সীমান্তবর্তী উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ি। উপজেলার আদর্শগ্রামের তরুণ ইউসুফ আজাদ মুন্না। তার ড্রাগন বাগান এখন আলো ছড়াচ্ছে নাইক্ষ্যংছড়ি জুড়ে। ড্রাগন চাষে সাফল্য আসায় উপজেলার অনেক তরুণ এ চাষে নেমে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আদর্শগ্রামের ৪০ শতক জায়গাজুড়ে রয়েছে ড্রাগন বাগান। পাঁচ ফুট উচ্চতার খুঁটি পেঁচিয়ে উঠেছে ড্রাগন ফলের গাছ। গাছে ঝুলছে কাঁচা-আধাপাকা ফল। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকার ড্রাগন বিক্রি করেছেন মুন্না। পর্যটন সম্ভাবনাময় নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রথম ড্রাগন চাষ করেছেন তিনি। তবে এখন এই ড্রাগন চাষে আগ্রহী হাজারো তরুণ।
ড্রাগন চাষি ইউসুফ আজাদ মুন্না বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ড্রাগন চাষে যৌথভাবে সহায়তা করেছে নাইক্ষ্যংছড়ি হর্টিকালচার সেন্টার ও উপজেলা কৃষি বিভাগ। ২০১৬ সালের জুনে নাইক্ষ্যংছড়ি হর্টিকালচার সেন্টার থেকে বিনামূল্যে পাওয়া ১৬০টি ড্রাগন ফলের চারা লাগাই। পরবর্তীতে আরও ৩০টি চারা যুক্ত করা হয়।’
মুন্না বলেন, ‘চলতি বছর সবকটি গাছে ফল এসেছে। প্রতিটি গাছে পাঁচ থেকে ছয়টি ফল এসেছে। বেশ কিছু ফল বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকার মতো আয় হয়েছে। বাগান করতে খরচ পড়েছে ৮০ হাজার টাকা। আগামী দুই সপ্তাহ পর বাকি ফল বিক্রি করতে পারব বলে আশা করা যাচ্ছে। ফল যথাযথভাবে বিক্রি করা হলে অধিক লাভবান হওয়া যাবে।’
তিনি আরও জানান, একটি গাছ পরিপক্ব হতে তিন থেকে চার বছর সময় লাগে। পরিপক্ব গাছে ২৫ থেকে ৩০টি ড্রাগন ফল ধরে। প্রতি কেজি ফলের বর্তমান বাজার মূল্য ৬০০ টাকা।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘মুন্নার দেখানো পথে এখন অনেক তরুণ যাচ্ছে। আসা করি আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে নাইক্ষ্যংছড়ি হবে দেশের ড্রাগনের রাজ্য।’
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রনজন চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে জানান, ড্রাগন ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ লবণযুক্ত এই ফল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এছাড়া এ ফল রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
নাইক্ষ্যংছড়ি হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মকর্তা দুলাল দাশ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘নাইক্ষ্যংছড়িতে এই ফল চাষ করে সাফল্য আসা চাষিদের জন্য সুখবর। এখানে বাণিজ্যিকভাবেও এই ফল চাষ করা যেতে পারে। আমরা চাষিদেরকে মুন্নার মতো সার্বিক সহযোগিতা করব।