ময়মনসিংহে মধ্যরাতে নারীকে কুপিয়ে হত্যা
ময়মনসিংহের নান্দাইলে নাজমা আক্তার (৩৫) নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চারি আনি পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত নাজমা আক্তার ওই এলাকার আব্দুল মান্নানের স্ত্রী।
নান্দাইল মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সুজন মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, ওই নারী চার সন্তানের জননী। রাতে পরিবারের সদস্যদের সাথে খাওয়া দাওয়া করেন। খাওয়া শেষে রাত ১০ টার দিকে পান কিনতে বের হন নাজমা আক্তার। ফিরতে দেরি হওয়ায় পরিবারের লোকজন খোঁজতে শুরু করেন। খোঁজাখোঁজির একপর্যায়ে বাড়ি থেকে কিছুটা দুরে ধান ক্ষেতে ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে নাজমা আক্তারের পরিবারের লোকজন তাকে শনাক্ত করেন। এদিকে, পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছেন ।
নান্দাইল মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সুজন মিয়া বলেন, ধারণা করা হচ্ছে অজ্ঞাত দুবৃত্তরা কুপিয়ে হত্যার পর মরদেহ ধান ক্ষেতে ফেলে রেখে গেছে। পুলিশ ঘটনা স্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হবে । পরে আরও বিস্তারিত জানানো যাবে বলেও জানান তিনি।
কক্সবাজারের ইনানীতে পর্যটক ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ১
কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী সৈকতে একজন পর্যটক তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত মোহাম্মদ নিজামকে (৪৪) গ্রেফতার করেছে।
ভুক্তভোগী তরুণী ঢাকা কাফরুলের ইব্রাহিমপুর এলাকার বাসিন্দা। আর অভিযুক্ত নিজাম নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ কদমতলীর শামসুল হকের ছেলে। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল আরেক বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে ওই তরুণী ঢাকা থেকে কক্সবাজার ভ্রমণে যান।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বলেন, ‘অভিযুক্ত নিজামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী তরুণীকে বুধবার বিকালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। সন্ধ্যায় তিনি ঢাকার পথে রওয়ানা দিয়েছেন। এ ঘটনায় বুধবার উখিয়া থানায় ভুক্তভোগী তরুণী বাদী মো. নাজিমকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছে।’
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এক বান্ধবীকে নিয়ে মামলার বাদী গত ১৫ এপ্রিল ঢাকা থেকে কক্সবাজার যান। উঠেন উখিয়ার ইনানী সৈকতের লা বেলা রিসোর্টের ‘রোজ’ কটেজের নিচ তলার ৪০২ নম্বর কক্ষে। তাদের সঙ্গে আসেন এক মাস আগে পরিচিত ব্যক্তি মোহাম্মদ নিজাম। তিনি উঠেন পাশের ৪০১ নম্বর কক্ষে। নিজাম মামলার বাদীর সঙ্গে আসা বান্ধবীর পূর্ব পরিচিতি ছিলেন। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বান্ধবী সৈকত ঘুরতে যান। মাথা ব্যথা জনিত কারণে বাদী ৪০২ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছিলেন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে নিজাম ওই কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে তাকে ধর্ষণ করে। তার আত্মচিৎকারে হোটেলের লোকজন এগিয়ে গেলে নিজাম পালিয়ে যান। পরে জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে উখিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাদীকে উদ্ধার করেন। পুরে পুলিশ ইনানী এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত নাজিমকে গ্রেফতার করে।
লা বেলা রিসোর্টের ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘১৫ এপ্রিল দুপুরে রিসোর্টে এসে মো. নিজাম দুইটি এসি রুম ভাড়া নেন। ৪০২ নম্বর কক্ষে উঠেন ২ নারী। নিজাম উঠেন পাশের ৪০১ কক্ষে। নিজাম এ সময় দুই তরুণীকে চাচাতো বোন পরিচয় দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগে রিসোর্ট কক্ষে তরুণীকে ধর্ষণের বিষয়টি তাদের কেউ জানায়নি।’
গুলিবিদ্ধ ইউপি সদস্যকে মামলায় পলাতক দেখায় বিজিবি
ভারতীয় সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে ফিরে আসার সময় লালমনিরহাটের সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম নান্নুকে (৪৮) গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলেও মামলায় তাকে পলাতক দেখিয়েছে বডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে বডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি) লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের লোহাকুচি ক্যাম্পের হাবিলদার মাসুদুল হক বাদি হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৯/১০ জনের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় গুলিবিদ্ধ সাইফুল ইসলাম নান্নুকে ১৩ নম্বর আসামি করা হলেও তাকে পলাতক এবং ৩জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে গুলিবিদ্ধ ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম নান্নুকে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন বডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি) লোহাকুচি ক্যাম্পের সদস্যরা।
আহত সাইফুল ইসলাম নান্নু আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের তালুক দুলালী গ্রামের মৃত গনি মিয়ার ছেলে। তিনি ভেলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য।
সীমান্তবাসী জানান, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সহায়তায় ভারতীয় গরু পাচার করতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তালুক দুলালী বড় মালদি সীমান্তে ৯২১ নং পিলার এলাকায় কাটাতারের বেড়ার পাশে নিজের পরিচালিত চর্কা বসাতে যান গরু ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম নান্নুসহ কয়েকজন রাখাল। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী(বিএসএফ) তাদের লক্ষ করে রাবার বুলেট ছুড়লে সাইফুল ইসলাম নান্নু গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যান। বাকীরা পালিয়ে এসে স্থানীয় লোহাকুচি বিজিবি ক্যাম্পের টহল দলকে খবর দিলে তারা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সে নিলে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
এ সময় অবৈধ অনুপ্রবেশ করে ফেরার দায়ে ৩জনকে আটক করে বিজিবি। এ ঘটনায় বুধবার আদিতমারী থানায় অবৈধ অনুপ্রবেশ করে ফেরার দায়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৯/১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে লোহাকুচি বিওপি ক্যাম্পের হাবিলদার মাসুদুল হক। তবে এ মামলায় গুলিবিদ্ধ সাইফুল ইসলাম নান্নুকে ১৩ নম্বর আসামি করা হলেও তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি। একই সাথে ঘটনার বর্ণনায় গুলিবিদ্ধ কিংবা কাউকে আহত দেখানো হয়নি।
মামলায় বিজিবি'র হাবিলদার মাসুদুল হক দাবি করেন, আসামিরা ৯২১ নং পিলার এলাকায় ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে ফেরার সময় বিজিবি ৩জনকে আটক করে। আটককৃতরা পলাতকদের বিষয়ে তথ্য প্রদান করেন। তবে গুলির কোন ঘটনা বা গুলিবিদ্ধ ইউপি সদস্যকে কঠোর নিরাপত্তায় হাসপাতালে নিলেও তাকে পলাতক দেখানো হয়েছে মামলার বর্ণনায়।
এ মামলায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার তালুক দুলালী গ্রামের মৃত গফুরের ছেলে বেলাল হোসেন (৩০), একই গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে এমদাদুল হক (৩৫) ও ফলিমারী গ্রামের কান্তিশ্বর বর্মনের ছেলে প্রদিপ কুমার (২৪)।
পলাতকরা হলেন- তালুক দুলালী গ্রামের এমদাদুল হক (৩৫), সাদ্দাম হোসেন (২৮), এমতা (২৭), সৈয়দ আলী (৩৫), সৈকত আলী (২৫), হাশেম আলী (৩০), জাহিদুল ইসলাম (৩৫), জামাল (৩০), আলামিন মিয়া (২৭) ও সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম নান্নু।
মঙ্গলবার রাতে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডা. বিক্রম চন্দ্র বার্তা ২৪ কমকে বলেন, আহত সাইফুল ইসলাম নান্নুকে পিঠের নিচে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নিয়ে আসে বিজিবি। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী বার্তা ২৪ কমকে বলেন, বিজিবি অবৈধ অনুপ্রবেশের অপরাধে আটককৃত ৩ জনসহ ১৩ জনের নাম এবং অজ্ঞাত আরও ৯/১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ে করেছে। আটক ৩জনকে গ্রেফতার দোখানো হয়েছে। গুলির বিষয়ে এজারে কিছু উল্লেখ নেই। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোফাজ্জল হোসেন বার্তা ২৪ কমকে বলেন, সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ৩ জনকে আটক করে ১৩জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দেয়া হয়েছে। তবে গুলিবিদ্ধ সাইফুলকে চিকিৎসার জন্য রংপুরে রেফার করায় তাকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। মামলায় তাকেও আসামি করা হয়েছে। সুস্থ্য হয়ে ফিরলে পুলিশ ব্যবস্থা নিবে।