শেষ মুহূর্তে আমনে রোগ, কৃষকদের মাথায় হাত!
মাঠের পর মাঠ ধান আর ধান। কোথাও ধান পেকে হলুদ হয়েছে, আবার কোথাও কাঁচা রয়েছে। আর মাত্র এক সপ্তাহ পর থেকেই শুরু হবে ধান কেটে ঘরে তোলার পালা। এর মধ্যে কিছু এলাকায় আমন ধানে দেখা দিয়েছে পাতা মোড়ানো ও খোল পচা রোগ। শেষ মুহূর্তে এই রোগ দেখা দেয়ায় কৃষকদের এখন মাথায় হাত।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার কৃষক আলমগীর হোসেন। তিনি এ বছর ব্রি-৪৯ জাতের ধান চাষ করেছেন। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলনেরও আশা করেছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করে কয়েকদিন আগে দেখতে পান তার জমির ধান গাছের পাতা এবং শীষ লালচে হয়ে যাচ্ছে। এখন তার দেড় বিঘা জমির ধান ঘরে তোলা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
শুধু গাবতলী নয়, বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও শাজাহানপুর উপজেলাতেও ধানের জমিতে বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।
তবে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১২টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকার পাশাপাশি সার, বীজ, কীটনাশক ছাড়াও কৃষি বিষয়ক পরামর্শ সহজলভ্য হওয়ায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৬৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে। কিন্তু মৌসুমের শেষের দিকে কৃষি কর্মকর্তাদের তদারকির পড়েও ৪৫ হেক্টর জমিতে পাতা মোড়ানো রোগ এবং ৮৭ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।
গাবতলী উপজেলার কৃষক পিন্টু, সবুজ, জাহেদুল ইসলাম, লাল মিয়া জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং পর্যাপ্ত কৃষি সরঞ্জাম হাতের নাগালে পাওয়ায় ধান চাষে তেমন কোনো বেগ পেতে হয়নি। এছাড়া মৌসুমের শুরুতে ধানের গাছ সুষ্ঠু সবল এবং পোকা মাকড়ের উপদ্রব কম দেখা গেছে। তবে ধান কাটার আগ মুহূর্তে কিছু কিছু এলাকায় জমিতে ধানের পাতা মোড়ানো, খোল পচা রোগ দেখা দিয়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় রয়েছে কৃষকরা।
গাবতলী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন জানান, বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। কিছু স্থানে পাতা মোড়ানো রোগের খবর পাওয়া গেছে। সেগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখে জরুরি ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।