সংলাপ সরকারের সঙ্গে নয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে: ওবায়দুল কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ছবি: বার্তা২৪.কম

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঐক্যফ্রন্টের যে সংলাপ সেটা সরকারের সঙ্গে নয়, এ আলোচনা আওয়ামী লীগের সঙ্গে। এটা পরিষ্কার করে বুঝতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, এ সংলাপ সরকারের সঙ্গে নয় এ সংলাপ আওয়ামী লীগের সঙ্গে। এ সংলাপ আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে। আলোচনায় আওয়ামী লীগ সভাপতি নেতৃত্ব দেবেন। তারাও চেয়েছেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলাপ করতে। এটা আপনাদের মনে রাখতে হবে।

মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) সচিবালয়ে তার নিজ দফতের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

এ সংলাপে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কতজন থাকবেন এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, তারা কতজন আসেন লিস্টটা দেখি। তারপর আমাদের কারা থাকবেন সেটা আমরা পরে ঠিক করবো। দেখুন, আমরা এদিকে ১৪ দল আমরা একই ভয়েসে কথা বলি। আমরা আমাদের সরকার ও দলের পলিসি যেটা ছিল সেটাই বলেছি। এখানে আমাদের পার্টি প্রধান যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই হবে।

তিনি বলেন, আমাদের পার্টি প্রধান বলেছেন, আমিতো কারো আন্দোলনের মুখে, বা কারো চাপের মুখে সংলাপে বসতে যাচ্ছি না। এটাতো এমন হয়নি দেশে একটি প্রতিবাদের ঝড় বা দেশে একটি আন্দোলনমুখর অবস্থা করছে যে সেই অবস্থায় সরকার নতি স্বীকার করে সংলাপে বসছে, বিষয়টা এমন নয়।

সেতু মন্ত্রী বলেন, বিষয়টা হচ্ছে ড. কামাল হোসেন সাহেব ঐকফ্রন্টের পক্ষ থেকে আমাদের দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন। শেখ হাসিনাও বলেছেন কেউ আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তার জন্য দরজা খোলা আছে। তাই আলোচনা হবে।

এ বিষয়ে সোমবার (২৯ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় নেত্রী বলেছেন, কেউ যদি আমার সঙ্গে দেখা করতে চান, শেখ হাসিনার দরজাতো কারো জন্য বন্ধ নয়। আমার দরজা খোলা আছে। দেখা করতে চেয়ে যেহেতু চিঠি দিয়েছেন, ফলে আমি দেখা করবো। বিষয়টি এমন। এটা আসলে কারও চাপের কাছে নয়- যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।

আলোচনার বিষয়ে কিছু বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, আমি গণফোরামের মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সঙ্গে সোমবার রাতে ফোনে আলাপ করেছি। কিছু পত্রিকা লিখেছে আলোচনার জন্য আমি নাকি দশজনের নাম প্রস্তাব করেছি, এটা সঠিক নয়। আমি এমন কিছু বলিনি, আমি মোস্তফা সাহেবকে বলেছি আপনারা আলোচনায় কতজন আসতে চান। তিনি আমাকে বলেছেন তারা ১৫ জন আসতে চান। আমি বলেছি ১৫ জন কেন, ২০-২৫ জনও আসতে পারেন।

‘আবার কোনো কোনো কাগজে লিখেছে আমি নাকি খাবারের মেনু নিয়ে আলোচনা করেছি। এসব হালকা বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া উচিত গণমাধ্যমের। আলোচনার বিষয়টি একটি সিরিয়াস বিষয়, সেখানে এভাবে হালকা বিষয়গুলো তুলে ধরা ঠিক নয়’- যোগ করেন কাদের।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘আজকে আমাদের অফিসে তাদের তালিকা পাঠাবে। কারা কারা আমাদের পার্টি প্রধানের সঙ্গে সংলাপ করতে চান। তবে আমি বলেছি সংখ্যার বিষয়ে আমাদের কোনো বাধা নেই। আপনারা ১৫ জন কেন আসবেন আরও বেশি আসতে পারেন।’

ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আলোচনায় আলোচ্য বিষয় কী হবে সেকথা বলতে গিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংবিধান সংশোধনের বিষয় ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং সভা-সমাবেশে সমান অধিকার নিয়ে তারা আলোচনা করতে চান। সভা-সমাবেশতো করছেনই তারা। কিন্তু যখন সিডিউল ঘোষণা হবে তখন সভা-সমাবেশের সমান অধিকারের বিষয়টি চলে যাবে একেবারেই নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে। দে উইল ডিসাইড ইট।

তিনি জানান, তাদের আলোচ্য বিষয়ে সংবিধান সংশোধনের বিষয় আছে। দুই একটি বিষয় আছে যা আইন আদালতের বিষয়। আবার দুই একটি বিষয় আছে যা পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। সংলাপ নিয়ে আমরা যা বলেছি, সেটা আমাদের সরকার এবং দলের পলিসি মেটার। তারা তাদের বিষয় নিয়ে হয়তো কথা বলবেন। তাদের সাত দফা দাবী এবং এগারোটি লক্ষ্য নিয়ে তারা আলোচনা করতে চান। তাতে মোস্ট ওয়েলকাম।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে দল এবং সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দাবী মেনে নেওয়ার বিষয়েতো আমরা বলতে পারি না যে, মেনে নেওয়া হলো। এ বিষয়ে তাদের দাবীর সঙ্গে আমরা একমত হতে পারি বাট ডিসাইড করবে নির্বাচন কমিশন।

কাদের বলেন, আরেকটি বিষয় আছে সেটা হলো- বিদেশি পর্যবেক্ষক। সেটাতো মেনে নেওয়ার বিষয়ে আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু সেটাতো আমরা মেনে নিতে পারি না। সেটা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের বিষয়। তবে প্রধানমন্ত্রী যখন চেয়েছেন তখন আলাপ আলোচনা খোলামেলা পরিবেশেই হবে।

   

সিজারিয়ান প্রসবে নিষেধাজ্ঞার দাবি কি যৌক্তিক?



খন্দকার আরিফুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪
সিজারিয়ান প্রসবে নিষেধাজ্ঞার দাবি কি যৌক্তিক?

সিজারিয়ান প্রসবে নিষেধাজ্ঞার দাবি কি যৌক্তিক?

  • Font increase
  • Font Decrease

 

সিজারিয়ান প্রসবে নিষেধাজ্ঞা যৌক্তিক কিনা তা নিয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও বিতর্ক থাকতে পারে। তার আগে জানা দরকার সিজারিয়ান প্রসব কেন করতে হয়। সিজারিয়ান প্রসব করা হয় যখন মা স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে শিশুর জন্ম দিতে অপারগ হন বা মেডিকেল হিস্ট্রি অনুযায়ী যদি মায়ের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে ডাক্তারগণ মা এবং শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সিজারিয়ান প্রসবের সিদ্ধান্ত নেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রসবে কোনও ঝুঁকি না থাকা সত্ত্বেও গর্ভবতী মায়ের ইচ্ছেতেও অনেক সময় সিজারিয়ান প্রসব করতে হয়।

সর্বশেষ জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের (নিপোর্ট) একটি সমীক্ষাতে বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে (বিডিএইচএস) ২০২২-এর প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায় যে, ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মাত্র ৫ বছরে সিজারিয়ান প্রসবের ঘটনা ৩৪ থেকে বেড়ে ৪৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ সমীক্ষাই প্রমাণ করে বাংলাদেশে অস্ত্রোপচার বা সিজারিয়ান সন্তান জন্মদানের প্রবণতা কতটুকু বেড়েছে।

যদিও সিজারিয়ান প্রসব করানো হয় শুধুমাত্র প্রসবের সময় কোনও জটিলতা দেখা দিলে। তবে বাংলাদেশে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও দিন দিন বেড়েই চলছে সিজারিয়ান প্রসবের প্রবণতা। সমীক্ষায় এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে গিয়ে প্রসব করানোর প্রবণতা বাড়ার কারণে।  সরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান সেকশনের হার কম হলেও বেসরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে উল্লেখযোগ্য হারে হচ্ছে সিজারিয়ান প্রসব। তবে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও সিজারিয়ান প্রসব করা হলে মা ও শিশু উভয়ই পড়তে পারে ঝুঁকির মুখে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেডিকেল হিস্ট্রি অনুযায়ী স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব হয় না, সে ক্ষেত্রে সিজারিয়ান প্রসব তখন বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়ায়। যেমনটি ঘটেছিল দুই সন্তানের জননী সানজিদা মাহমুদ চৈতির ক্ষেত্রে। চৈতি বার্তা২৪.কমকে জানান, তার প্রথম সন্তানের প্রসব স্বাভাবিকভাবে হওয়ার কথা থাকলেও, শিশু গর্ভেই মলত্যাগ করে ফেলে এমনকি শিশু অক্সিজেনও নিতে পারছিল না। এবং চৈতি নিজেও দুর্বল হয়ে পড়েন। যে কারণে আর কোনও উপায় না পেয়ে মা ও শিশুকে বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত ডাক্তারকে সিজারিয়ান সেকশনে যেতে হয়েছে।

চৈতি বলেন, আমিও খুব চেষ্টা করছিলাম স্বাভাবিক প্রসবের জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারিনি। তবে এটাও ঠিক, ডাক্তার যদি সে সময়ে সিজারিয়ান সেকশনে না যেতেন তাহলে হয়তো আমি আজকে বেঁচে থাকতাম না।

সিজারিয়ান প্রসব করাবেন বলে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাশফিয়া। কেন তিনি সিজার করাবেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, 'আমি ছোটবেলা থেকেই সামান্য ব্যথাও সহ্য করতে পারি না। ভয় হচ্ছে কীভাবে কী হবে। সিজারে কষ্ট কম হবে শুনেছি তাই সিজারই করব।'

সিজারিয়ান প্রসব নিয়ে বার্তা২৪.কমের কথা হয় গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সালিমা আখতার জাহানের সাথে। তিনি বলেন, আমি দেশে-বিদেশে অসংখ্য ডেলিভারি কেস হ্যান্ডেল করেছি এবং এখনও করছি। আমি সবসময়ই চেষ্টা করি স্বাভাবিক প্রসব করানোর জন্য। তবে সিজারিয়ান সেকশনের ইন্ডিকেশন যখন আসে তখন আর কিছু করার থাকে না, সিজারিয়ান সেকশনে যেতে হয়। মায়ের গর্ভের জায়গা অনুযায়ী বাচ্চা ঠিক আছে কিনা, বাচ্চার ওজন ঠিক আছে কিনা, বাচ্চার আকার ঠিক আছে কিনা, গর্ভের ভেতরে বাচ্চার পজিশন ঠিক আছে কিনা-এই সব যদি ঠিক থাকে তাহলে স্বাভাবিক প্রসবই হবে। যদি এগুলো ঠিক না থাকে সেক্ষেত্রে আমাদের সিজারিয়ান সেকশনে যেতে হয় এবং পৃথিবীর সব দেশেই একই নিয়মে সিজারিয়ান সেকশনে যান ডাক্তারেরা।

তিনি আরও বলেন, পূর্বে আমাদের দাদি-নানিদের সময়ে তারা অনেক পরিশ্রম করতেন, তাদের ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি হত। যে কারণে তাদের স্বাভাবিক প্রসবই হত। কিন্তু বর্তমানে তা হয় না। যে কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সিজারিয়ান সেকশনে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায়ই থাকে না।

অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান সেকশনে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হলেও, সিজারিয়ান সেকশন একবারে বাদ দিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। বর্তমানে এমন অনেক দেখা যায়, গর্ভবতীর ৫ ঘণ্টা ধরে প্রসব ব্যথা হচ্ছে কিন্তু প্রসবের রাস্তা ছোট বা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কোনভাবেই বাচ্চা প্রসব হচ্ছে না- এমন অবস্থায় সিজারিয়ান প্রসবই করাতে হয়। এমন আরও অসংখ্য কারণ রয়েছে। সুতরাং, সিজারিয়ান সেকশন বাদ দেওয়ার কোনও রাস্তা নাই। যার মেডিকেল হিস্ট্রি স্বাভাবিক থাকবে তার স্বাভাবিক প্রসব হবে এবং যার স্বাস্থ্যগত  ঝুঁকি থাকবে তার সিজারিয়ান প্রসব হবে। এভাবেই বলছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. সানজিদা তাবাসসুম।

;

পহেলা বৈশাখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণী, গ্রেফতার ৫



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকার কেরানীগঞ্জে বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকারের অভিযোগ করেছেন এক তরুণী (১৯)। তার করা মামলায় এরই মধ্যে অভিযুক্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে অপরাধের কথা স্বীকার করেছে আসামিরা।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. রাহাত (১৮), মো. সোহাগ আলম (২০), শহিদুল ইসলাম (২১), মিলন (২৩) ও মো. মাসুম (২৫)

১৪ এপ্রিলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে দুই সহকর্মীর সঙ্গে ঘাটারচর সংলগ্ন মধু সিটিতে ঘুরতে গিয়েছিলেন তরুণী।  এরপরই রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় আবাসন প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তাকর্মী মাসুম। পরে তার সঙ্গে যোগ দেয় আরও কয়েকজন।

হাউজিংয়ের ভেতরে ছবি তোলার সময় ৫-৭ জন মিলে তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তারা ওই তরুণী ও তার সহকর্মীদের কাছ থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এরপর তাদের টানাহেঁচড়া করে হাউজিংয়ের আরও ভিতরে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীর দুই সহকর্মীকে বেদম মারধর করে আটকে রাখে আসামিরা।

এরপর আসামিরা ওই তরুণীকে জোরপূর্বক হাউজিংয়ের উত্তর-দক্ষিণমুখী রাস্তার পূর্ব-পশ্চিম রোডের খালের উত্তর পাশে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে ঘটনা কাউকে জানালে ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে চলে যায়।

এ ঘটনায় পরদিন সোমবার তরুণী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি মোস্তফা কামাল জানান, ঘটনাটি জানার পরপরই আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের চৌকস একটি টিম তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। পরে ঘটনার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণে জড়িত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

ওসি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার অপরাধী। তারা প্রতিনিয়ত চুরি ছিনতাইসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াত।

ভুক্তভোগী বলেন, তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করা জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়। আমি রাজি না হওয়ায় তারা ব্লেড বের করে মুখের সামনে এসে আমাকে ভয় দেখিয়েছে। তখন আমি বাধা দিয়েছি। তারা তখন আমকে বলে আমি যদি রাজি না হই তাহলে আমার সহকর্মীদের মেরে ফেলে দেয়া হবে।  ওই তরুণী জানান, অনেক অনুরোধের পরও মন গলেনি ধর্ষকদের।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবাইকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলা হয় এবং ভিডিও করা হয়। তারপর আমাদের ভয় দেখানো হয়। যদি পুলিশ বা এলাকার কারও কাছে বিষয়টি জানাই তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছেড়ে দেয়া হবে। বাধা দিতে এলে সহকর্মী সিজানকে তারা প্রচুর মারধর করে। আমি এর সঠিক বিচার চাই। আমি চাই না আমার মত আর কোন মেয়ে এমন ভোগান্তিতে পড়ুক।  আমি তাদের শাস্তি চাই।’

কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাব উদ্দিন কবির বলেন, ‘এই ঘটনার সাথে পাঁচজন সরাসরি জড়িত। কিন্তু এদের যারা সহযোগী বা যারা ওখানে আড্ডা দেয় তাদেরকে আমরা শনাক্ত করেছি।  তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম বলা যাবে না। ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। ছাড় দেয়া হবে না কাউকেই।’

এদিকে মঙ্গলবার মামলা হলে ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আসামিরা। এমন নির্জন স্থানে এটিই প্রথম নয়, এর আগেও একই ধরনের ঘটনা ঘটানোর কথা স্বীকার করেছে আসামিরা। 

 

;

নড়াইলে জমি নিয়ে বিরোধে ৩ জনকে কুপিয়ে জখম 



ডিসট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নড়াইল
নড়াইলে জমি নিয়ে বিরোধে ৩ জনকে কুপিয়ে জখম 

নড়াইলে জমি নিয়ে বিরোধে ৩ জনকে কুপিয়ে জখম 

  • Font increase
  • Font Decrease

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া ইউনিয়নের চরবকজুড়ি গ্রামের এরশাদ মোল্যার ও একই গ্রামের মো. মহিউদ্দিন মোল্যার মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে নাজমা বেগম, এরশাদ মোল্যা, হারুন মোল্যাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এরশাদ মোল্যার বাড়িতে এ ঘটনায় । ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এজাহার ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চরবকজুড়ি গ্রামের হুমায়ুন মোল্যার পরিবারের সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন একই গ্রামের মো. মহিউদ্দিন মোল্যার পরিবারের মধ্যে ঝামেলা চলছিলো। এরই জের ধরে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় মহিউদ্দিন মোল্যা, আফজাল মোল্যা, উজ্জল মোল্যা, খোকা মোল্যা, লিঠু মোল্যা, মনসুর মোল্যা, জাহিদ মোল্যা, উজ্জ্বল মোল্যা, মুকিত মোল্যা, রঞ্জু মোল্যা, সাইদ মোল্যাসহ মোট ১৪/১৫ জন মিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নাজমা বেগম, এরশাদ মোল্যা, হারুন মোল্যাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।

এ সময় স্থানীয় লোকজন আহতদেরকে দ্রুত লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য গুরুতর আহত নাজমা বেগমকে নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠায়। এ ছাড়া আহত বাকি ২ জন এরশাদ মোল্যা ও হারুন মোল্যা লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ সময় আহত এরশাদ মোল্যা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আহত ভাই-বোনের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ফার্মেসি থেকে ঔষধ কেনার জন্য আসলে পুনরায় দুর্বৃত্তরা এরশাদ মোল্যাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। এ সময় নিজেকে রক্ষা করার জন্য এরশাদ মোল্যা দৌড়ে লোহাগড়া থানায় আশ্রয় নেন। পরবর্তীতে পুলিশি হেফাজতে তাকে চিকিৎসার জন্য লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আহতদের বোন লোহাগড়া উপজেলার লংকারচর গ্রামের বাবুল হোসেনের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বাদী হয়ে উল্লিখিত ১১ জনকে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ কে আসামি করে লোহাগড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে আহত মহিউদ্দিন মোল্যা বলেন, এ ঘটনায় আমার কোন ধরনের সম্পৃক্ততা নেই, এরশাদ মোল্যার পরিবারের সঙ্গে আফজাল মোল্যার মারামারি হচ্ছিলো। তখন আমি মারামারি ঠেকাতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে মারপিট করে আমার বাম হাত ভেঙে দেয়। আমি এখন লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছি।

এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার পরিদর্শক ( তদন্ত ) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মারামারির খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ১১ জনসহ অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। প্রতিপক্ষের কেউ থানায় এখনো কোন অভিযোগ করেনি, তবে অভিযোগ পেলে সেটিও তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

;

কোস্টগার্ডের কাছে বিজিপির ১৩ সদস্যের আত্মসমর্পণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ১৩ সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তারা সবাই বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদী দিয়ে পালিয়ে আসেন ১৩ বিজিপি সদস্য। পরে টেকনাফ স্টেশনের কোস্টগার্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করলে তাদের বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের (১১ বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে মিয়ানমারের ৪৬ জন বিজিপি সদস্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এ নিয়ে এখন মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির ২৭৪ জন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে ৩৩০ জন বিজিপি সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার নৌ-সীমান্ত দিয়ে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর নতুন করে আরও ২৭৪ জন বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

;