‘রয়েল বেঙ্গল টাইগারের’ অপেক্ষায় সিলেট
আগামী ১৬ ডিসেম্বর সিলেট টিলাগড় ইকোপার্কের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে যুক্ত হবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’। প্রাথমিকভাবে দেখা মিলবে অজগর, জেব্রা, হরিণসহ ৯ প্রজাতির ৫৮টি প্রাণীর। আগামী সপ্তাহে আসবে আরও দুটি হরিণ। পর্যটন নগরী সিলেটে সদ্য দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র ও টিলাগড় ইকোপার্ক সম্পর্কে এমন তথ্য তুলে ধরলেন সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম।
উদ্বোধনের প্রথম দিনেই সিলেটে সাড়া ফেলে দেয় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র ও টিলাগড় ইকোপার্ক। দর্শনার্থীদের পদভারে মুখর হয়ে উঠে পার্কটি। পর্যটন শিল্পে নতুন সংযোজিত এ বিনোদন কেন্দ্র সিলেটবাসীর মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি করেছে। দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিরাপত্তা রক্ষীদের। সিলেটে প্রথমবারের মতো নতুন প্রজন্মকে বন্যপ্রাণীর সঙ্গে পরিচয়ের সুযোগ করে দেয়ায় উৎফুল্ল সাধারণ লোকজন।
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, ২০১২ সালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ আন্তমন্ত্রণালয় সভায় সিলেটে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম চিড়িয়াখানা নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। নগরীর টিলাগড়ে অবস্থিত ইকোপার্কে চিড়িয়াখানা নির্মাণে একই বছর ৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে তিন বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি বনবিভাগ। নির্ধারিত সময়ে বরাদ্দের প্রায় ১০ কোটি টাকার মধ্যে ছয় কোটি টাকা ব্যয় করে বাকি টাকা ফিরিয়ে নেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। পরে ফের বরাদ্দ বাড়িয়ে ২০১৬ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রটি সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দপ্তরকে হস্তান্তর করা হয়।
গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে গত ৩০ অক্টোবর সিলেট বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে দুটি জেব্রাসহ ৯ প্রজাতির প্রাণী নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ২টি চিত্রা হরিণ, ১২টি ময়ূর, একটি গোল্ডেন ফিজেন্ট পাখি, সিলভার ফিজেন্ট পাখি তিনটি, ম্যাকাও পাখি তিনটি, আফ্রিকান গ্রেপেরট চারটি, সান কানিউরি চারটি, ছোট লাভ বার্ড ৩০টি ও একটি অজগর।
মোট ১১টি শেডে ৫৮টি প্রাণী নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও আগামী সপ্তাহে আরও দুটি হরিণ আনা হবে বলে জানালেন সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম। তিনি আরও জানান, গত শুক্রবার (২ নভেম্বর) জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় সিলেটের প্রথম ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র’। নামমাত্র প্রবেশ মূল্যে মানুষ এখানে ঘুরতে পারবেন। শেডে থাকা ও বিভিন্ন সময় উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণীর জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং হাসপাতালও নির্মাণ করা হয়েছে।