প্রশ্ন ফাঁসের ৫২ মামলা, গ্রেফতার ১৫৩



সেন্ট্রাল ডেস্ক ২

  • Font increase
  • Font Decrease
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানিয়েছেন, চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় সারা দেশে ৫২টি মামলা হয়েছে এবং তাতে ১৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার এফডিসি মিলনায়তনে নবম জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ‘বিতর্ক বিকাশ’-এর গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, “আমি শিক্ষক, অভিভাবকসহ সবার সহযোগিতা চাইছি, আপনারা আমাদের সহযোগিতা করেন। এইসব কাজে (পরীক্ষা) যারা বাধার সৃষ্টি করে তাদের চিহ্নিত করে আইনের হাতে সোপর্দ করেন।” তবে শিক্ষামন্ত্রী স্বীকার করেন যে, ইতোমধ্যে ৫২টি মামলা করে ১৫৩ জনকে গ্রেপ্তর করা হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও সমস্যার মূলে যেতে পারেনি। তিনি বলেন, “সেটা আমাদের হাতে না, কাজটা করতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। তারাও আমাদের সাথে আছে। সব মিলিয়ে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।” প্রশ্ন ফাঁস রোধে বিভিন্ন প্রস্তাব পাওয়ার কথা জানিয়ে নাহিদ বলেন, প্রতি দিনই নতুন কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা তারা করছেন। তারপরও কোনো না কোনো জায়গা থেকে প্রশ্ন বেরিয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি। (আগামী এইচএসসি পরীক্ষায়) অতি অল্প সময়ে বড় পরিবর্তনে যাব না, সেখানেও কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছি যেগুলো আগে নিইনি। এতে আশা করছি বেশি কার্যকর হবে। এর পরের পরীক্ষায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনব। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু এসএসসি ও সমমানের বেশিরভাগ বিষয়ের প্রশ্নই এবার পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ফাঁস হয়েছে, সে প্রশ্ন দ্রুতই ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে। শিক্ষামন্ত্রী পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসকারীকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিলেও লাভ হয়নি।   শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রশ্ন ফাঁসে ব্যবহৃত ৩০০ মোবাইল ফোন নম্বর চিহ্নিত করে সেগুলো বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সেসব ফোন নম্বরের মালিকদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। এসএসসিতে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে করণীয় নির্ধারণে গত ৪ ফেব্রুয়ারি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরকে প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়। আলমগীর ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, চলতি এসএসসির অন্তত একটি বিষয়ের পুরো প্রশ্ন এবং কয়েটির আংশিক প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে কমিটি। এখন প্রশ্ন ফাঁস ‘একটি বড় বিষয়’ হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, “ক্লাসরুমের শিক্ষা খুবই জরুরি। তবে চারপাশের জগৎ সম্পর্কে যদি ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তুলতে না পারি, তাহলে পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে উঠতে পারবে না। শারীরিক ও মানসিক দক্ষতার জন্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডসহ নানান কিছু প্রয়োজন। নতুন প্রজন্মকে আধুনিক, উন্নতমানের বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে গড়ে তুলতে হলে প্রয়োজন যুগের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বিশ্বমানের শিক্ষা, জ্ঞান, প্রযুক্তি ও দক্ষতা। এসবের পাশাপাশি ভালো মানুষ তৈরি করতে চাই।” দেড় লাখ মানুষ প্রশ্নপত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মন্ত্রী, সচিব বা বোর্ড চেয়ারম্যানের প্রশ্ন দেখার সুযোগ নেই। কিন্তু ওই দেড় লাখ মানুষের প্রশ্ন দেখার সুযোগ আছে। এদের একজনও যদি তার মূল্যবোধকে ‘বিক্রি করে দেন’, তাহলেই বিরাট সর্বনাশ হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি বিরাট সম্পদ এবং আমরা বাধ্যতামূলকভাবে তা ছেলেমেয়েদের শিখাচ্ছি। সেই প্রযুক্তি যেমন সুবিধা দিচ্ছে তেমনি অসুবিধার সৃষ্টি করছে। সেই সুযোগ নিয়ে যা না (প্রশ্ন ফাঁস যতটুকু হয়) তার চেয়ে বেশি প্রচার হয়ে যাচ্ছে।’ নাহিদ বলেন, “ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার হলে ৩০ মিনিট আগে ঢুকিয়ে ফেলছি। প্রশ্নের খাম খোলার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে ৩০ মিনিট আগে। তার পরেও কেউ না কেউ একটা স্টেপ নিয়ে প্রচার করে দিচ্ছে। “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন তখন তারা বলেছিলেন ২০ মিনিট আগে প্রশ্ন ফাঁস হয়। আমরা ৩০ মিনিট আগে প্রশ্নের খাম খোলার সুযোগ দিয়েছি, তখন ছেলেমেয়েরা হলের ভেতরে, সেই ২০ মিনিট আগে (প্রশ্ন ফাঁস) হয়, হয়ত তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না কিন্তু এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার নয়।” মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন অনুষ্ঠানে বলেন, সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও কোনো রকমের ক্রটি-বিচ্যুতি ছাড়াই প্রতিনিয়ত কিছু মানুষ বিভিন্ন মিডিয়ার অমানবিক নিষ্ঠুরভাবে আমাদের আক্রমণ করে চলেছেন। “বিভিন্ন মিডিয়ার আমাদের অত্যাচার করছেন; যারা সমালোচনা করছেন, দোষারোপ করা ছাড়া একজনের কাছে একটি পরামর্শও পাইনি।” সোহরাব বলেন, বর্তমান পদ্ধতিতে প্রশ্ন ফাঁস হবে না- এমন শতভাগ নিশ্চিয়তা কেউ দিতে পারবে না। এখন এমন একটি পথে যেতে হবে, যেখানে প্রশ্ন ফাঁস করা সম্ভব নয়। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে কিছু সংস্কারের প্রয়োজন আছে। পরীক্ষা নিয়ে ‘প্রত্যেকে উদ্বিগ্ন’ মন্তব্য করে শিক্ষা সচিব বলেন, “অনেক প্রস্তাব পাওয়া গেছে, পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। মন্ত্রী, সচিব প্রশ্ন ফাঁস করছেন বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন, এগুলো আমাদের জন্য অমানবিক নির্যাতন।” এবারের বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনালে বরিশালের বাবুগঞ্জের রাশেদ খান মেনন মডেল উচ্চ বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে; রানারআপ হয়েছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের ইসহাকপুর পাবলিক হাই স্কুল।    
   

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মানবাধিকার সম্পর্কিত একটি নতুন শাখা চালু করার পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালং এবং ভাসানচর পরিদর্শনের জন্য বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়।

কমিটির সভাপতি এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শাহরিয়ার আলম, নাহিম রাজ্জাক, নিজাম উদ্দিন জলিল, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবুর রহমান, সাইমুম সারওয়ার, জারা জাবীন মাহবুব অংশ নেন।

 

;

ঢাকাসহ ৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাসহ দেশের আট জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এ অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

;

ইসলামি সংগীত শিল্পী সালমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় নিহত তিনজনের একজন সালমান আজাদী। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক। তার মৃত্যুতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সালমান আজাদী।

তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার হাপানিয়া এলাকার মৃত কোরবান আলীর ছেলে। নিহত সালমান স্ত্রী ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে নগরীর মাসকান্দা এলাকায় থাকতেন।

জানা গেছে, ইসলামি সংঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ময়মনসিংহে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সালমান আজাদী। ইসলামি সঙ্গীতের প্রসারে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন সালমান ইসলামি সঙ্গীত একাডেমি। প্রায় দুই বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে শিশুদের ইসলামি গান শেখাতেন। এছাড়াও ত্রিশালে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ইসলামি সঙ্গীতের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।

উদীয়মান এ ইসলাম সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে শোকাভিভূত পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, ক্যাম্পাসের সহপাঠী-শিক্ষার্থী, ইসলামি সংস্কৃতি প্রেমিসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শতশত মানুষের ফেসবুক স্ট্যাটাসে যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়েছে সানমানের ফেসবুক টাইমলাইন।

আব্দুর রহিম ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, কিছু মৃত্যুর সংবাদ মানুষকে ভীষণ বেদনা দেয়, ভীষণ কষ্ট দেয়। আর এই মৃত্যু যদি অকালে হয় বা আকস্মিক হয় তার শোক কাটিয়ে উঠা মোটেও সহজ না। সালমান আজাদী ইসলামিক শিল্প একাডেমির শিক্ষক ও স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি বাচ্চাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। বাচ্চাদের সুস্থ ধারার ইসলামিক সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যাপারে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল।

হানজালা রমজান মুন্না নামে আরেকজন লিখেছেন, প্রিয় হাসিমাখা মুখ ও সুন্দর করে কথা উপস্থাপন ছিল যার নৈমিত্তিক অভ্যাস। ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ায় পেছনে ময়মনসিংহ শহরে যাদের অবদান, তাদেরই একজন ছিলেন। মনের মধ্যে ছিল ইসলামের জন্য তীব্র ভালবাসা। ভাইয়ের ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের উঁচু মাক্বাম দান করুন।

স্বামীর শোকে বাকরুদ্ধ স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, সালমান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ক্লাস করতেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ত্রিশাল যাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে সালমান আজাদীর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এক শোকবার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৭-'১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে ২০২১-'২২ সেশনে অধ্যয়নরত মো. সালমান আজাদী (২৫) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় ত্রিশালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়-পরিবারের পক্ষে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে সালমানের বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য প্রার্থনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, বিনা ময়নাতদন্তের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার ত্রিশাল বাজারের সাইফুল কমিশনারের বাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত অন্য দুইজন হলেন, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামের এনামুল হকের মেয়ে রুবাইরা তাজনিম (২) ও চিকনা মনোহর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৪)।

;

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীরাঙ্গনাদের সম্মাননা দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের বহু যুবক ও ছাত্র জনতার আত্মহুতির অবদান। এই যুদ্ধে নারীদের অবদানও কোন অংশে কম নয়। এ যুদ্ধে অসংখ্য নারী সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ইজ্জতও দিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বেদনা দত্ত। বেদনা দত্তের মতো বীরাঙ্গনাদের স্মরণীয় করে রাখতে বীরাঙ্গনা স্মৃতিসৌধ বা রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বড়ি-বাড়ির বেদনা দত্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্বেই স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ তিন শিশুকে নিয়ে অনেক দুঃখ কষ্টে দিন পার করছিলেন। ঠিক সেই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়ানোসহ তাদের নানাভাবে সহয়তা করতেন বেদনা দত্ত। আর এমন খবর পেয়ে রাজাকার সদস্যরা বেদনাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়। বাড়ির পাশে রেল ব্রিজের নিচে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ৪ দিনে নির্যাতন শেষে মৃত ভেবে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয় বেদনাকে।

পরে সেখান থেকে দুইদিন পর প্রাণ ফিরে পেলেও ইজ্জত আর সন্তানদের জীবন রক্ষায় এলাকা ছেড়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে আসলেও জীবন চলে অনাহারে অর্ধাহারে। এভাবেই পার করতে হয়েছে জীবনের প্রায় অর্ধশতাব্দি। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসলে তার কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তাকে বীরাঙ্গনা হিসেবে নথিভুক্ত করেন এবং ভাতার আওতায় আনেন। সেই সাথে মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে তার জন্য তৈরি করা হয় বীর নিবাস। এখন এলাকাবাসীর দাবি বেদনা দত্তের অবর্তমানে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। অথবা তার নামে স্থানীয় কোন রাস্তা বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযুদ্ধাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় জিনারদী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান উদ্দিন পাঠান বলেন, আমরা জানতামই না আমাদের এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছে। সরকার যখন বেদনা দত্তকে একটি বীর নিবাস তৈরি করে দেয় তখনই জানতে পারি এই এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মম নির্যাতনের শিকার এই নারী হয়তো একদিন থাকবেনা। কিন্তু তাকে যেনো পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখে এবং স্মরণ করে সেজন্য তার নামে একটি সড়কের নামকরণ বা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাই।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেদনা দত্তের মতো আরও যারা বীরাঙ্গনা রয়েছেন তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। নরসিংদীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে যা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

;