এক গলিতে ১৩ স্কুল, নিচ্ছে ফরম পূরণের গলাকাটা ফি



তাসকিন আল আনাস, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম 
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

পুরান ঢাকার ইসলাম বাগ, ঘিঞ্জি এলাকা। সরু গলিগুলো বিদ্যুতের তারে প্যাঁচানো। শুনলে অবাক হলেও, এই এলাকার একটি গলিতেই ১৩ টি স্কুল। এই স্কুলগুলোতে এসএসসি ফরম পূরণে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ফি। প্রতিটা স্কুলেই নেয়া হচ্ছে সরকার নির্ধারিত ফি এর তুলনায় প্রায় সাড়ে ছয় গুণ বেশি টাকা। আর অভিযোগের আঙ্গুল এই এলাকাটির প্রায় সব স্কুলের দিকেই।

সোমবার (১২ নভেম্বর) অভিযোগের সূত্র ধরে বার্তা২৪ সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে এমন চিত্র দেখতে দেখা।

ইসলামবাগ মডেল স্কুলের এক শিক্ষার্থীর কাছে অতিরিক্ত ফি দাবি করা হয়। এমনকি বাড়তি টাকা না দিতে পারলে ফরম পূরণ করতে দেয়া হচ্ছে না বলেও জানান ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক। এমতবস্থায় নিরুপায় অভিভাবক নিজ সন্তানের ভবিষ্যতে নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েন।

এই ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদন তৈরিতে অভিযুক্ত স্কুলে  গিয়ে দেখা যায়, নতুন করে সংস্কার কাজ চলছে স্কুলের।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/13/1542079592554.jpg

পরীক্ষা ফি এর ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মাহমুদ ফিরোজের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে অন্য শিক্ষকরা জানান, তিনি এখন স্কুলে নেই তার নিজের অফিস, পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আছেন। কখন আসলে ওনাকে (প্রধান শিক্ষক) পাব –জানতে চাইলে তারা জানান, তাহলে বিকাল ৫টার পর আসতে হবে।

তবে পরীক্ষার ফি বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলে অবস্থানরত অন্য শিক্ষকরা বিষয়টি এড়িয়ে যান। তারা এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

পরে প্রধান শিক্ষক মাহমুদ ফিরোজের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়।  তিনি বলেন ‘ আজকেই টাকা জমা দিতে হবে। কত টাকা জমা দিতে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন ওইখানে লেখা আছে দেখে নেন।

পরে স্কুলের নথি থেকে দেখা যায় সর্বমোট জমা দিতে হবে ১৩ হাজার ৮০০ টাকা, যেখানে ফরম পূরণের জন্যই নেয়া হচ্ছে প্রায় ১১ হাজার টাকা ।

সরকার নির্ধারিত ফি’র তুলনায় অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এইটা সরকারি স্কুল না, আমি যার আন্ডারে পরীক্ষা দেওয়াই তাকে আমার দিতে হয় সাড়ে আট হাজার টাকা। বাকি টাকা কি আমি পকেট থেকে দিবো? আর পরীক্ষা দিতে হলে স্কুল নির্ধারিত ফি ১১ হাজার টাকাই দিতে হবে সাথে কোচিং, মডেল টেস্ট ফি বাবদ দিতে হবে আরো প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা।

শুধু ইসলামবাগ মডেল স্কুল নয়, একই এলাকার ইসলাম বাগ আইডিয়াল স্কুল, চাইল হ্যাভেন প্রি ক্যাডেট স্কুলেরও একই অবস্থা। প্রত্যেকেরই নোটিশ বোর্ডে এসএসসি এর ফরম পূরণের তালিকায় লেখা ১১ হাজার টাকা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/13/1542079634888.jpg

অভিযুক্ত স্কুলগুলো যে স্কুলের অধীনে পরীক্ষা দিবে অতিরিক্ত ফরম ফি নেয়ার ব্যাপারে সেই ইসলামবাগ আশরাফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, আমরা কখনই অতিরিক্ত ফি নেই না। এমনকি সরকার নির্ধারিত ফি এর বাইরে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়ন ও আবারো পরীক্ষা নিলেও আমরা এক্সট্রা টাকা নেইনা। তাই অতিরিক্ত ফরম পূরণ ফির টাকার সাথে আমাদের কোন প্রকার লেনদেনই নাই। এ সময় তিনি প্রতিবেদককে নিজেদের টাকা নেয়ার স্লিপও দেখান ।  যাতে ১৮০০ টাকাই উল্লেখ আছে।

এবার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফরম পূরণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীপ্রতি সর্বোচ্চ ফি নির্ধারণ করেছে এক হাজার ৮০০ টাকা। গত ৮ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার স্বাক্ষরিত এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সব বিভাগের জন্যই বিলম্ব ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। ঢাকা বোর্ডের জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী, বিজ্ঞান বিভাগ চতুর্থ বিষয়সহ ফরম পূরণের ফি এক হাজার ৮০০ টাকা। এর মধ্যে বোর্ড ফি এক হাজার ৩৮৫ এবং কেন্দ্র ফি ৪১৫ টাকা। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ চতুর্থ বিষয়সহ ফরম পূরণের ফি এক হাজার ৬৮০ টাকা। এর মধ্যে বোর্ড ফি এক হাজার ২৯৫ টাকা ও কেন্দ্র ফি ৩৮৫ টাকা। অন্যদিকে মানবিক বিভাগ চতুর্থ বিষয়সহ ফরম পূরণের ফি এক হাজার ৬৮০ টাকা। এর মধ্যে বোর্ড ফি এক হাজার ২৯৫ টাকা ও কেন্দ্র ফি ৩৮৫ টাকা। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অনলাইনে ফরম পূরণের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত। তবে বিলম্ব ফি দিয়ে ১৪ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে ফরম পূরণ করা যাবে। অার এ নির্দেশনা না মানা হলে উক্ত স্কুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/13/1542077627491.jpg

এদিকে এসবের মাঝেই চলছে দুদকের অভিযান। রোববার ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের  ভারপ্রাপ্ত প্রধান সমন্বয়ক ও মহাপরিচালক (প্রতিরোধ ) সারোয়ার মাহমুদ এর  নির্দেশে যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল  স্কুল অ্যান্ড কলেজে অভিযান চালায় দুদক। অভিযানকালে বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ফরম পূরণে সরকার নির্ধারিত ফি নেওয়া হলেও একই সাথে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কোচিং, মডেল টেস্ট এবং র‍্যাগ-ডে উপলক্ষে অর্থ নেওয়া হচ্ছে।

এসময় দুদক  টিমের সদস্যরা বলেন কোচিং ফি, মডেল টেস্ট কিংবা র‍্যাগ-ডের নামে বাধ্যতামূলকভাবে অর্থ নেওয়া সরকারি বিধি-বিধান পরিপন্থী। কলেজটির অধ্যক্ষ দুদক টিমের সাথে একমত পোষণ করে তাৎক্ষণিকভাবে একটি নোটিশ ইস্যু করে অঙ্গীকার করেন যে, “ এস.এস.সি পরীক্ষা-২০১৯ এর পরীক্ষার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের ব্যাপারে কোনো অভিভাবক আপত্তি  দিলে তার অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়া হবে।”

অভিযান প্রসঙ্গে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) সারোয়ার মাহমুদ  মন্তব্য করেন, “ ফরম পূরণে সরকার নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া সম্পূর্ণ অনৈতিক। ফরম পূরণের সঙ্গে বিভিন্ন  অজুহাতে অতিরিক্ত ফি নেওয়া সমর্থনযোগ্য নয়। সরকারি বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে অর্থ গ্রহণ বন্ধে কমিশন কর্তৃক এ জাতীয় অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।’

   

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মানবাধিকার সম্পর্কিত একটি নতুন শাখা চালু করার পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালং এবং ভাসানচর পরিদর্শনের জন্য বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়।

কমিটির সভাপতি এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শাহরিয়ার আলম, নাহিম রাজ্জাক, নিজাম উদ্দিন জলিল, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবুর রহমান, সাইমুম সারওয়ার, জারা জাবীন মাহবুব অংশ নেন।

 

;

ঢাকাসহ ৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাসহ দেশের আট জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এ অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

;

ইসলামি সংগীত শিল্পী সালমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় নিহত তিনজনের একজন সালমান আজাদী। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক। তার মৃত্যুতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সালমান আজাদী।

তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার হাপানিয়া এলাকার মৃত কোরবান আলীর ছেলে। নিহত সালমান স্ত্রী ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে নগরীর মাসকান্দা এলাকায় থাকতেন।

জানা গেছে, ইসলামি সংঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ময়মনসিংহে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সালমান আজাদী। ইসলামি সঙ্গীতের প্রসারে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন সালমান ইসলামি সঙ্গীত একাডেমি। প্রায় দুই বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে শিশুদের ইসলামি গান শেখাতেন। এছাড়াও ত্রিশালে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ইসলামি সঙ্গীতের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।

উদীয়মান এ ইসলাম সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে শোকাভিভূত পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, ক্যাম্পাসের সহপাঠী-শিক্ষার্থী, ইসলামি সংস্কৃতি প্রেমিসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শতশত মানুষের ফেসবুক স্ট্যাটাসে যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়েছে সানমানের ফেসবুক টাইমলাইন।

আব্দুর রহিম ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, কিছু মৃত্যুর সংবাদ মানুষকে ভীষণ বেদনা দেয়, ভীষণ কষ্ট দেয়। আর এই মৃত্যু যদি অকালে হয় বা আকস্মিক হয় তার শোক কাটিয়ে উঠা মোটেও সহজ না। সালমান আজাদী ইসলামিক শিল্প একাডেমির শিক্ষক ও স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি বাচ্চাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। বাচ্চাদের সুস্থ ধারার ইসলামিক সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যাপারে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল।

হানজালা রমজান মুন্না নামে আরেকজন লিখেছেন, প্রিয় হাসিমাখা মুখ ও সুন্দর করে কথা উপস্থাপন ছিল যার নৈমিত্তিক অভ্যাস। ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ায় পেছনে ময়মনসিংহ শহরে যাদের অবদান, তাদেরই একজন ছিলেন। মনের মধ্যে ছিল ইসলামের জন্য তীব্র ভালবাসা। ভাইয়ের ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের উঁচু মাক্বাম দান করুন।

স্বামীর শোকে বাকরুদ্ধ স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, সালমান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ক্লাস করতেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ত্রিশাল যাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে সালমান আজাদীর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এক শোকবার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৭-'১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে ২০২১-'২২ সেশনে অধ্যয়নরত মো. সালমান আজাদী (২৫) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় ত্রিশালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়-পরিবারের পক্ষে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে সালমানের বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য প্রার্থনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, বিনা ময়নাতদন্তের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার ত্রিশাল বাজারের সাইফুল কমিশনারের বাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত অন্য দুইজন হলেন, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামের এনামুল হকের মেয়ে রুবাইরা তাজনিম (২) ও চিকনা মনোহর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৪)।

;

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীরাঙ্গনাদের সম্মাননা দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের বহু যুবক ও ছাত্র জনতার আত্মহুতির অবদান। এই যুদ্ধে নারীদের অবদানও কোন অংশে কম নয়। এ যুদ্ধে অসংখ্য নারী সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ইজ্জতও দিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বেদনা দত্ত। বেদনা দত্তের মতো বীরাঙ্গনাদের স্মরণীয় করে রাখতে বীরাঙ্গনা স্মৃতিসৌধ বা রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বড়ি-বাড়ির বেদনা দত্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্বেই স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ তিন শিশুকে নিয়ে অনেক দুঃখ কষ্টে দিন পার করছিলেন। ঠিক সেই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়ানোসহ তাদের নানাভাবে সহয়তা করতেন বেদনা দত্ত। আর এমন খবর পেয়ে রাজাকার সদস্যরা বেদনাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়। বাড়ির পাশে রেল ব্রিজের নিচে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ৪ দিনে নির্যাতন শেষে মৃত ভেবে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয় বেদনাকে।

পরে সেখান থেকে দুইদিন পর প্রাণ ফিরে পেলেও ইজ্জত আর সন্তানদের জীবন রক্ষায় এলাকা ছেড়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে আসলেও জীবন চলে অনাহারে অর্ধাহারে। এভাবেই পার করতে হয়েছে জীবনের প্রায় অর্ধশতাব্দি। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসলে তার কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তাকে বীরাঙ্গনা হিসেবে নথিভুক্ত করেন এবং ভাতার আওতায় আনেন। সেই সাথে মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে তার জন্য তৈরি করা হয় বীর নিবাস। এখন এলাকাবাসীর দাবি বেদনা দত্তের অবর্তমানে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। অথবা তার নামে স্থানীয় কোন রাস্তা বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযুদ্ধাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় জিনারদী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান উদ্দিন পাঠান বলেন, আমরা জানতামই না আমাদের এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছে। সরকার যখন বেদনা দত্তকে একটি বীর নিবাস তৈরি করে দেয় তখনই জানতে পারি এই এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মম নির্যাতনের শিকার এই নারী হয়তো একদিন থাকবেনা। কিন্তু তাকে যেনো পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখে এবং স্মরণ করে সেজন্য তার নামে একটি সড়কের নামকরণ বা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাই।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেদনা দত্তের মতো আরও যারা বীরাঙ্গনা রয়েছেন তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। নরসিংদীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে যা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

;