নির্বাচনী জোটের প্রতীকের অপেক্ষা
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী জোটগুলোর মধ্যে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তাদের নিজস্ব দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবে তা অনেকটাই স্পষ্ট। প্রধান এই দুই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচন করবে আরও অনেক নিবন্ধিত দল।
ইতোমধ্যে তারা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) বিষয়টি অবহিত করেছে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে বিষয়টি পরিষ্কার হলে আসন ভিত্তিক প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করবে নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটি।
জোটগত নির্বাচনের বিষয়টি পরিষ্কার করে এরই মধ্যে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট তাদের অন্যতম শরিক বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ইসিকে জানিয়েছে। অন্যদিকে ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন জোট যুক্তফ্রন্ট কুলা ও ১৪ দলের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার বিষয়টি কমিশনকে জানিয়েছে।
এ বিষয়ে বিকল্পধারা বাংলাদেশের এক নেতা বার্তা২৪.কমকে বলেন, `কোন প্রতীকে নির্বাচন করব তা আজ আমরা পরিষ্কার করেছি। ইতোমধ্যে চিঠি দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি অবহিত করেছি। তবে ১৪ দলের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা হলে নৌকা প্রতীকে অধিকাংশ আসনে নির্বাচন করব আমরা। এ বিষয়টি এখনো আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে আমরা নৌকার প্রতীক নিয়েই নির্বাচন করছি সেটা ধরে নিতে পারেন।‘
এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটে কোন কোন দল থাকছে তা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তবে রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে এ নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে দলটির প্রতিনিধিরা তথ্য প্রকাশে ‘অথরিটি’ নেই বলে জানিয়েছেন।
তবে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, `জোটগত নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের চিঠিতে জাতীয় পার্টি ও বিকল্প ধারার নাম নেই।‘
ইসি সূত্রে জানা গেছে, সরকারি দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের বাইরে থাকা এই দুটি নির্বাচনী জোট বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে। নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ৩০০ আসনে নির্বাচন করার বিষয়টি জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দল সিইসির দফতরে যান। ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা ও গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবব্রত চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি তাদের প্রতীক হিসেবে `বিএনপির প্রতীক‘ ব্যবহারের সিদ্ধান্তের কথা সিইসিকে অবহিত করেন। পরে বিএনপির পক্ষ থেকে এক চিঠির মাধ্যমে জানানো হয় তাদের জোটে ১১টি দল ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবে।
দলগুলো হচ্ছে- বিএনপি, গণফোরাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), খেলাফত মজলিস, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।
আর বিকল্পধারার মাহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান স্বাক্ষরিত নির্বাচন কমিশনকে দেয়া চিঠিতে বলা হয়, ১৪ দলের সঙ্গে মাহাজোট সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা এখনো চলছে। মাহাজোটে অংশগ্রহণ করলে যুক্তফ্রন্ট ও বিকল্পধারার কিছু প্রার্থী ক্ষেত্র বিশেষ নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবে।
উল্লেখ্য, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ধারা-২০-এর (১)-এর (এ) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক একাধিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল মিলে নির্বাচনী জোট গঠন করলে এ জোটের যেকোনো একটি দলের প্রতীক জোটভুক্ত প্রার্থীদের বরাদ্দ করা যাবে। এ ধরনের প্রতীক পেতে হলে জোটকে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার তিনদিনের মধ্যে ইসি বরাবর আবেদন করতে হবে।