হাসিখুশি ‘রুমা আপা’র মলিন চেহারা



মুজাহিদুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আদালতে নেওয়ার পথে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রুমা, ছবি: সংগৃহীত

আদালতে নেওয়ার পথে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রুমা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আরিফা সুলতানা রুমা। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক। ত্যাগী এই তরুণী জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জ্বীবিত হয়ে ২০০০ সাল থেকে অবদান রেখে চলেছেন বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে। সম্প্রতি পল্টন থানায় নাশকতা মামলায় গোয়েন্দা পুলিশের অধিনে ৫ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন ৩৯ বছর বয়সী আলোচিত নেত্রী।

রাজপথের আন্দোলনে তার সরব উপস্থিতি সম্পর্কে দলের নেতাকর্মীরা সবাই অবগত। এক নামে সবাই চেনে তাকে। তিনি সবার পরিচিত ‘রুমা আপা’। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে অমায়িক ব্যবহারই যেন তার অলঙ্কার।

সদালাপী, প্রাণবন্ত, হাসিমুখে কথা বলা সেই রুমা আপার মুখটি খুব মলিন দেখা গেল। খাওয়া-দাওয়া নেই, নেই ঘুম, ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত। ১৬ নভেম্বর ডিবি কার্যালয় থেকে মহানগর হাকিম আদালতে নেওয়ার পথে এভাবেই দেখা মিলল তার।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/18/1542549077595.jpg

ধীর পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন এজলাসের পথে। সেখানে মলিন মুখে পুলিশ পরিবেষ্টিত অবস্থায় উপস্থিত নেতকার্মীদের দেখে এক হাতে দেখালেন- ‘ভি-চিহ্ন’। কিছুটা উজ্জ্বীবিত হওয়ার চেষ্টা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পাবনা-৩ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন ফরম তুলেছেন ছাত্রদলের এই নেত্রী। পাবনা-৩ (ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর ও চাটমোহর) নির্বাচনী আসন থেকে তিনিই প্রথম নারী সংসদ সদস্য মনোনয়ন প্রত্যাশী।

শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) মহানগর হাকিম আদালতে নেওয়া হয় রুমাকে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যাালয়ের সামনে নাশকতা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। সিএমএম আদালত এলাকা হয়ে বাসায় ফেরার পথে তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/18/1542549096297.jpg

উদীয়মান এই তরুণ নেত্রীর গ্রামের বাড়ি পাবনার চাটমোহর উপজেলায় আফ্রাতপাড়া মহল্লায়। ১৯৭৯ সালে জন্মগ্রহণ করা এই নেত্রীর বাবা আক্কাস আলী একজন শিক্ষক। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ।

পাবনায় গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পড়ালেখার হাতেখড়ি। এরপর চাটমোহল বালিকা বিদ্যালয়, চাটমোহল ডিগ্রী কলেজ, পরবর্তীতে ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে মনোবিজ্ঞানে মাস্টার্স শেষ করেন তিনি। সবশেষ ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ ডিগ্রি নিয়ে আইন বিভাগে অধ্যয়নরত।

ইডেনে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। দীক্ষা নেন জাতীয়তাবাদের। ২০০২ ও ২০০৪ সালে তিনি পরপর দু’বার ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক নির্বাচিত হন।

কলেজ ছাত্রদলের কমিটিতে স্থান পাওয়ার পর থেকে তার দলীয় কর্মকাণ্ড নজরে আসে কেন্দ্রীয় নেতাদের। তার মেধা ও যোগ্যতায় ২০০৯ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা করে নেন আরিফা সুলতানা। এরপর ২০১২ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদ লাভ করেন। ২০১৫ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।

দলীয় মনোনয়ন ফরম তোলার পর বার্তা২৪.কমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেন দেশ ও দেশের মানুষকে নিয়ে তার হৃদযের স্বপ্নগুলো।

রুমা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। বিশেষ করে আমার পাবনার অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করতে চাই। সবার ভালোবাসা নিয়ে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে চাই।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/18/1542549118648.jpg

দল আপনাকে মনোনীত করবে এমন প্রত্যাশা কেন করছেন? এ প্রশ্নের জবাবে রুমা বলেছিলেন, ‘রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে আমার যে অবদান তা দল মূল্যায়ন করবে বলে আশাবাদী। তরুণ নেতৃত্ব হিসেবে, এমনকি নারী নেতৃত্ব হিসেবে দল মূল্যায়ন করবে বলেও আমার বিশ্বাস। কারণ তরুণরাই পারে ভালো কিছু করতে, ভালো কিছু তৈরি করতে। দেশের উন্নয়নের জন্য তরুণদের ভুমিকা, বিশেষ করে ছাত্রদল থেকে যারা আসে, তাদের যে অভিজ্ঞতা, দেশের জন্য যে মায়া ও দেশপ্রেম রয়েছে তা অন্য নেতৃত্ব দিতে পারে না। এজন্য হলেও দল তরুণদের মূল্যায়ন করবে বলে আমি আশাবাদী।’
তবে দল মনোনয়ন যাকেই দিক না কেন দলের হয়ে সমানভাবে কাজ করে যেতে চান বলেও জানিয়েছিলেন অরিফা সুলতানা রুমা।

আরিফা সুলতানা রুমাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।

   

ফরিদপুরে ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফরিদপুরের মধুখালীর বালিয়াকান্দি পঞ্চপল্লীর কালি মন্দিরে আগুনকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে ফরিদপুর সদরসহ মধুখালী উপজেলার বালিয়াকান্দি পঞ্চপল্লীর নিকটে এবং বাঘাটে বাজার এলাকায় যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে টহল পরিচালনা করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।

তিনি জানান, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটসহ যৌথ বাহিনীর সঙ্গে বিজিবির টহলের পাশাপাশি গ্রাম পুলিশ অবস্থান করছে।

এর আগে সকালে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এর ফলে ওই এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। পরে দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

জানা যায়, পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার প্রতিবাদে মধুখালী রেলগেটে মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়। স্থানীয় সর্বসাধারণের ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচি পালনে সেখানে সমবেত হয় পাঁচ শতাধিক জনতা। আনুমানিক আধা ঘণ্টা স্থায়ী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে বেলা ১১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা মধুখালীর ঈদগাঁ ময়দানে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। পরে মিছিলটি মহাসড়কে উঠে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ধরে কামারখালী সেতুর দিকে এগোতে থাকে। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে বিক্ষোভকারীরা খণ্ড খণ্ড হয়ে মিছিল করতে থাকে। একাধিক ভাগে বিভক্ত বিক্ষোভকারী মালেকা চক্ষু হাসপাতালের সামনে, নওয়াপাড়ার মোড়, মাঝিবাড়ি ও বাগাটের ঘোষঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়।

বাগাটের ঘোষঘাটে বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি এনে অবরোধ করে এবং সড়কের মাঝে গাছের গুঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। নওয়াপাড়ার মোড়ে একটি ইটভর্তি ট্রাক সড়কের মাঝখানে আড়াআড়িভাবে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে। এতে জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং একপর্যায়ে পুলিশের দিকে ইট ছুড়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই জায়গায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিক্ষোভ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাদের ওপর পুলিশের গুলি ও হামলার প্রতিবাদ জানান। জেলা প্রশাসক এ ঘটনার তদন্ত হবে বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা জেলা প্রশাসকের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিক্ষোভকারীরা জানায়, পুলিশের হামলায় তাদের চারজন আহত হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে এবং বাকি একজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ এমদাদ হুসাইন বলেন, কোথাও বুঝিয়ে এবং কোথাও শক্তি প্রয়োগ করে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা পর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহত বা জানমালের ক্ষতিসাধনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

;

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: ১১ বছরেও শোক কাটেনি স্বজনদের



রাজু আহম্মেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: ১১ বছরেও শোক কাটেনি স্বজনদের

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: ১১ বছরেও শোক কাটেনি স্বজনদের

  • Font increase
  • Font Decrease

 

যশোর জেলার ঝিকরগাছা এলাকার রাহেনা খাতুন। তার মেয়ে মুক্তা আক্তার ২০১০ সালে বাবা মায়ের অভাবের সংসারের হাল ধরতে চাকরি নিয়েছিলেন রানা প্লাজার আট তলার গার্মেন্টসে। চাকরিতে যোগদানের পর মায়ের সংসারের সব খরচ চালাতেন তিনি। দুঃখ দুর্দশার জীবন থেকে পরিবারে কিছুটা স্বস্তির দেখা মিলছিলো মুক্তার আয়ের টাকায়। তবে সে সুখ টিকেনি। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে নিহত হন মুক্তা। নিঃস্ব হয়ে পড়ে মুক্তার মা রাহেনা খাতুন।

মেয়ে হারানো ১১ বছরেও শোক কাটেনি অসহায় এই মায়ের। বুকভরা আর্তনাদ নিয়ে সাভার এসেছেন ষাটোর্ধ্ব রাহেনা খাতুন। মেয়ে হারানোর বেদনায় কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন তিনি।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে কথা হয় মুক্তার মা রাহেনা খাতুনের সাথে। মেয়ের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, অভাবের সংসারে হাল ধরবে। তাই এসেছিল ঢাকায়। ১৮ বছর বয়স তখন মুক্তার। আমাকে বিকাশে টাকা পাঠাতো। গাড়িতে টাকা পাঠাতো। যখন চাইতাম ৫০০, ৮০০ টাকা দিত। সেই মেয়ে আমার ডাকে না। কল দেয় না। জোর করে আমার মেয়েকে মেরে ফেলছে মালিক। মেয়ের ছবি খুলতে পারি না।  বুক ফেটে যায়। মেয়ের অস্তিত্ব পাব সে আশায় আসি প্রতি বছর মেয়েকে তো পাই না।


এদিকে একি ট্র্যাজেডিতে বড় ছেলে হারিয়ে শূন্যতায় ধুকে মরছেন জামালপুর মেস্টা ইউনিয়নের শিমল তলি এলাকার খুরশিদা বেগম। বাবার মৃত্যুর পর মায়ের দুঃখ সইতে না পেরে খুরশদার বড় ছেলে আল আমিন শান্ত কাজের জন্য এসেছিল ঢাকায়। কোথাও কোনো কাজ না পেয়ে আল আমিন কাজ নিয়েছিলো রানা প্লাজার গার্মেন্টসে। তবে ছেলের ইনকামের টাকার সৌভাগ্যই কাল হয়েছিলো খুরশিদার জীবনে। মায়ের কষ্ট মুছতে এসে পৃথিবী থেকে নিজেই হারিয়ে গেছেন মা পাগল ছেলে।

খুরশিদা বেগম বলেন, আজও আমার চোখে আমার ছেলে ভাসে। পন্স স্যান্ডেল পরে হেঁটে আসে। আম্মু আম্মু বলে ডাকে। আমার ছেলে আমাকে কল দিত বলত মা খেয়ে নাও। আমি খাব না তুমি না খেলে। তুমি তো আমার সব আম্মু। তুমি নিজের খেয়াল রাখবা আম্মু। এখন আর আমার ছেলে ডাকে না।

খুরশিদা আরও বলেন, আমার পাগল ছেলে মায়ের ঋণ শোধ করতে চাইছিলো। মাকে ভালো রাখবে তাই ঢাকা আসছিলো। আমিও ছেলের কামাই খেতে চাইছিলাম। সে আমার প্রতি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেই চলে গেলো।


রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে খুরশিদা ও রাহেনা খাতুনের সন্তান ও প্রিয়জন হারানোর মতো এমন করুণ গল্প আছে ১১৭৫টি পরিবারের। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভার বাস স্ট্যান্ডের পাশেই নির্মিত রানা প্লাজা নামের বহুতল ভবনটি ধসে পড়ে। সে সময় ভবনটির নিজ তলায় বিপনীবিতান ও ৮ম তলা পর্যন্ত ছিল পোষাক কারখানা। পোষাক কারখানায় প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত ছিল। তাদের মধ্যে ১১৭৫ নিহত হন। এখনো ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে আতঙ্ক নিয়ে বেঁচে আছে প্রায় ২ হাজারের বেশি মানুষ।

নিহতের স্বজন ও আহতদের অভিযোগ রানা প্লাজার ট্র্যাজেডির এত বছরেও পূরণ হয়নি ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি। আশ্বাসের বিশ্বাসে ১১ বছর কেটে গেলেও শাস্তি হয় নি রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে দোষী ব্যক্তিদের। বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এই দুর্ঘটনায় আদায় হয়নি শ্রমিকের ন্যায্য দাবিও। ফলে হতাশা ও ক্ষোভ নিয়েই বছরের পর পর স্বজন হারার ব্যথা নিয়ে চলছে পরিবারগুলো।

এদিকে শ্রমিক নেতারা বলছেন, সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই এখনও শ্রমিকরা ন্যায্য পাওনা বুঝে পায়নি। বিশ্ব যেখানে সাক্ষী। সেখানে শ্রমিকের সাক্ষা গ্রহণের নামে না আ অজুহাতে কার্যকর হচ্ছে দোষীদের বিচার। ফলে ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ ও দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার দাবি তাদের।

;

যশোরে প্রেমিকাকে শ্বাসরোধে হত্যা, প্রেমিক আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

যশোরে প্রেমিকাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেও শেষ রক্ষা হয়নি প্রেমিকের। অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

এদিকে, বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে যশোর সদর উপজেলার বুকভরা বাওড়ের পাশ থেকে প্রেমিকা মিতুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সকালে যশোর সদর উপজেলার বুকভরা বাওড়ের পাশে শাড়িপরা এক নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এসময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পড়ে ছিল। তারা খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে ডিবি’র (ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ) এসআই (উপপরিদর্শক) খান মাইদুল ইসলাম রাজীব জানান, নিহত মিতুর বাড়ি সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায়। এক সময় তিনি মুসলমান ছিলেন। তখন তার নাম ছিল খাদিজা। পরে ধর্মান্তরিত হয়ে তিনি হিন্দুধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি তার এলাকার এক যুবকের সঙ্গে যশোরে ঘুরতে আসেন। একপর্যায়ে ওই যুবক তাকে ওই শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দাদের একটি দল ওই যুবককে আটক করে। ওই যুবকের নাম ও ঠিকানা চানতে চাইলে মাইদুল বলেন, এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে প্রেসব্রিফিং করে হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এদিকে, হালসা গ্রামের একটি সূত্র জানায়, আটক প্রেমিকের নাম মৃন্ময়। তিনিও পাটকেলঘাটার বাসিন্দা। বুধবার সকাল ১০টায় হালসা গ্রাম থেকে ডিবির একটি দল মৃন্ময়কে আটক করে।

 

;

নওগাঁয় ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় মাদ্রাসা শিক্ষকের জেল-জরিমানা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
নওগাঁয় ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় মাদ্রাসা শিক্ষকের জেল-জরিমানা

নওগাঁয় ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় মাদ্রাসা শিক্ষকের জেল-জরিমানা

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ জেলার বদলগাছী থানার উত্তর পাকুরীয়া গ্রামের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় মাদ্রাসা শিক্ষককে দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। এ রায় প্রদান করেছেন নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার। জরিমানার অর্থ ধর্ষণ চেষ্টার শিকার ছাত্রীকে প্রদানের নির্দেশ দেন বিচারক। বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৯ মে সকাল ছয়টার সময় নয় বছরের ছাত্রী একই গ্রামের আরবি শিক্ষক আবুল হাসান (২৫) এর বাড়িতে আরবি পড়তে যায়। সে সময় অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরা না আসায় ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ছাত্রীটির মা বদলগাছী থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আদালত আট জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বুধবার রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন। আসামিকে দশ বছর সশ্রম কারাদনণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় পড়ে শুনানো হয় এবং আসামিকে সাজা পরোয়ানা মূলে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ কৌশলী এ্যাডভোকেট আজিজুল হক ও আসামি পক্ষে এ্যাডভোকেট মামুনূর রশিদ মামলা পরিচালনা করেন। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আসামি পক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।

;