রাজশাহীতে নিউমোনিয়ার প্রকোপ: ১৭ শিশুর মৃত্যু, ভর্তি ৭৭৮
প্রকৃতিতে শীত সবে নামতে শুরু করেছে। আর তাতেই রাজশাহী অঞ্চলে দেখা দিয়েছে নিউমোনিয়ার প্রকোপ। চার দিনে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর এক সপ্তাহে ৭৭৮ শিশু ঠাণ্ডাজনিত অসুখে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে।
শীতের শুরুতে ঋতু পরিবর্তনের কারণে শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। ১২ নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর দুপুর পর্যন্ত ৭৭৮ জন শিশু শুধুমাত্র রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে। শেষ চার দিনে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ১৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালগুলোতেও নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুরা চিকিৎসা নিচ্ছে।
রামেক হাসপাতাল তথ্যকেন্দ্রের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ১২ নভেম্বর নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জন শিশু ভর্তি হয় হাসপাতালে। এরপর ১৩ নভেম্বর ১০৯ জন, ১৪ নভেম্বর ১১৩ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। ১৫ ও ১৬ নভেম্বর ভর্তি হয়েছে আরো ১৭৭ শিশু। এছাড়া ১৭ নভেম্বর ১৩৭ জন এবং ১৮ নভেম্বর ৯৫ জন নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছে। সর্বশেষ ১৯ নভেম্বর বেলা ১টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে আরো ৩৮ জন। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডগুলোতে এখন রোগীর উপচে পড়া ভিড়। বাড়তি রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা।
রাজশাহী মহানগরীর উপশহর এলাকার আমজাদ হোসেন। তার এক বছর বয়সের শিশু নাফিসা। ১৩ নভেম্বর জ্বর ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় নাফিসার। ওই দিনই স্বজনরা তাকে রামেক হাসপাতালে নেন। পরীক্ষা নীরিক্ষার পর চিকিৎসক জানান, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে নাফিসা। অবশেষে তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। সেই থেকে নাফিসা হাসপাতালেই ভর্তি আছে।
সাবরিনা আক্তার নামে আরেক নারী জানান, তার ছয় মাস বয়সের শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। টানা ৬ দিন ধরে তিনিও শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে পড়ে আছেন।
রামেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ছানাউল হক বলেন, গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শীতকালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে। কিন্তু এবার শীত আসার আগেই নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুরা হাসপাতালে আসছে। শীতকালে শিশুকে প্রয়োজনীয় উষ্ণতায় রাখলে নিউমোনিয়া থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে জানান তিনি। ঋতু পরিবর্তনকালে শিশুদের প্রতি আরো বেশি যত্নবান হতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।