দু’বছরেও ফোটেনি কুমিরের ডিম, হুমকির মুখে করমজল প্রজনন কেন্দ্র



আবু হোসাইন সুমন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সুন্দরবনের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র করমজলে গত দুই বছরে কুমিরের একটি ডিমও ফোটানো সম্ভব হয়নি। বন বিভাগ সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, মূলত কেন্দ্রটিতে কুমির বিশেষজ্ঞ না থাকায় এমনটি ঘটছে।

জানা গেছে, করমজল কেন্দ্রে লোনা পানির কুমির জুলিয়েট ও পিলপিল গত দুই বছরে মোট ৯১টি ডিম দিয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই কোনো না কোনো সমস্যার কারণে ডিমও ফোটানো সম্ভব হয়নি। ফলে কেন্দ্রের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে, বিলুপ্ত হতে চলেছে লোনা পানির কুমির। তবে যখন কেন্দ্রেটিতে বিশেষজ্ঞ ছিল (২০০৫-২০১৬ সাল পর্যন্ত) তখন জুলিয়েট ও পিলপিলের দেয়া ৭২৩টি ডিমের মধ্যে ৪৬৫টি বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হয়েছিল। যদিও সেটা উদ্দেশ্য পূরণে বলার মতো কোনো সাফল্য ছিল না। আর ২০১৬ সালে জুলিয়েট ও পিলপিলের ৯৮টি ডিম থেকে ৪৭টি বাচ্চা হয়। সে সময় ৫১টি ডিম নষ্ট হয়ে যায়। গত বছরে জুলিয়েট ৪৩টি ও পিলপিল ৪৮টি ডিম দেয়। কিন্তু একটি ডিমও ফোটেনি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/24/1543076390241.jpg

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিলুপ্ত প্রায় লোনা পানির কুমিরের প্রজনন বাড়াতে ২০০২ সালে করমজলে ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ একর জমিতে কেন্দ্রটি গড়ে তোলে বন বিভাগ। এটি সরকারিভাবে দেশের একমাত্র কুমির ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র। কেন্দ্রটি রক্ষণাবেক্ষণ ও কুমিরসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী লালন-পালনে প্রাণী বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন নির্মল কুমার হাওলাদার ও আব্দুল রব। এক পর্যায়ে প্রশিক্ষণের জন্য তাদের এক বছরের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হয়। সেখান থেকে ফিরে আব্দুল রব কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।

সাগর ও সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে জেলেদের জালে আটকে পড়া পাঁচটি কুমির দিয়ে তিনি কেন্দ্রের প্রজনন কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু ২০১৫ সালে তার অবসরে চলে যাওয়ার পর কেন্দ্রটিতে আর কোনো বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেয়া হয়নি। বর্তমানে কেন্দ্রটিতে লোনা পানির দুটি স্ত্রী কুমির (জুলিয়েট ও পিলপিল) এবং একটি পুরুষ কুমির (রোমিও) রয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/24/1543076411546.jpg

প্রজনন কেন্দ্রের অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা বার্তা২৪.কম’কে জানান, কুমিরের ডিম ইনকিউবেটরে দেয়ার পর থেকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। কোনো সমস্যা দেখা দিলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নিতে হয়। সেটি না করায় গত দু’বছর ধরে পিলপিল ও জুলিয়েটের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটছে না। বনবিভাগ এ বিষয়ে নজর না দেয়ায় বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রটি হুমকির মুখে পড়েছে।

করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, যারা করমজল প্রজনন কেন্দ্রে বর্তমানে কর্মরত আছেন তাদের কারও প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা নেই। ফলে ধারণা নির্ভর হয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তবে আব্দুর রবের সহকারী জাকিরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে গত দুই বছরে ডিম ফোটানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছি।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় (বাগেরহাট) বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘করমজল কেন্দ্রে কুমিরের ডিম নষ্ট হওয়ার বিষয়টি বন বিভাগ গুরুত্বের সাথে দেখছে। ইতোমধ্যেই একজন কুমির বিশেষজ্ঞের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিতে বন বিভাগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

 

   

রিকশাচালকদের মাঝে স্যালাইন পানি বিতরণ করছে ফেনী পৌর মেয়র



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশের মতো ফেনীতে বইছে তীব্র তাপদাহ। গরমে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষের জনজীবন। এরমধ্যে দিনমজুর, শ্রমজীবী ও রিকশাচালকদের ভোগান্তি চরমে। ফেনীতে তীব্র তাপদাহ থেকে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে ইতোমধ্যে শহরের ৪টি পয়েন্টে সুপেয় ঠান্ডা পানির ফিল্টার স্থাপন করেছে ফেনী পৌরসভা।

পাশাপাশি ২য় দিনের মতো রিকশাচালকদের মাঝে স্যালাইন, ঠান্ডা পানি ও কোমলজাতীয় পানীয় এবং শরবত বিতরণ করেছে ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ফেনী পৌরসভার উদ্যোগে দুপুরে শহরের জিরো পয়েন্ট দোয়েল চত্বরে ২য় দিনে এ কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি৷

জব্বার মিয়া নামে একজন রিকশা চালক বলেন, আমাদের মেয়র সবসময় আমাদের কথা চিন্তা করে। এ গরমে গাড়ি চালানো খুব কষ্টকর। এরমধ্যে মেয়র স্যালাইন পানি হাতে আমাদের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন, একটু ঠান্ডা খেতে পেরেছি।

রবিউল হক নামে একজন ভ্যানচালক বলেন, এ গরমে এমনিতেই আমাদের আয় রোজগার কম। তাও পরিবারের চিন্তা করে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। এরমধ্যে রাস্তায় মেয়র মহোদয় কোক পানি ও সেলাইন দিয়েছে। এটি পেয়ে খুব ভালো লাগছে।

মেয়র স্বপন মিয়াজী বলেন, সারাদেশের ন্যায় ফেনীতে তীব্র গরমে কাবু সব পেশার মানুষ। বিশেষ করে রিকশাচালক ও পথচারীরা কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। তাদের কথা চিন্তা করে শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ ৪টি স্থানে সুপেয় বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি ও শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রিকশাচালকরা রোদের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। চালকদের দোকান থেকে ঠান্ডা পানি কিনে খাওয়ার সামর্থ্য থাকে না। তাদেরকে ঠান্ডা পানি, স্যালাইন ও কোক দেয়া হয়েছে। যতদিন তাপদাহ থাকবে ততদিন আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

;

দাবদাহে পথচারীদের তৃষ্ণা নিবারণে জেলা প্রশাসনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চলমান তাপদাহে নিম্ন আয়ের মানুষ ও পথচারীদের তৃষ্ণা নিবারণ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং হিটস্ট্রোকে আক্রান্তদের প্রাথমিক চিকিৎসা স্বাস্থ্য সেবা দিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম।

বর্তমান তাপদাহ পরিস্থিতিতে নরসিংদীর জেলখানা মোড় পৌরসভা মোড়সহ শহরের ৯টি ব্যস্ততম সডকের পাশে বিনামূল্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঠান্ডা সুপেয় পানি ও স্যালাইন বিতরণ বুথ খুলেছে জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে জেলখানা মোড়ে নরসিংদী পৌরসভা, স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনস্বাস্থ্য প্রোকৌশল অধিদপ্তরের সহায়তায় ও জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত এই বুথের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ডক্টর বদিউল আলম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নরসিংদী পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন বাচ্চু, জনস্বাস্থ্য প্রোকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী পরিচালক রেজওয়ান হোসেন, জেলা হাসপাতালের ত্বত্তাবধায়ক ডা. এ এন এম মো. মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোস্তফা মনোয়ারসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।

জেলা প্রশাসক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক চলমান দাবদাহে পথচারী ও নিম্ন আয়ের মানুষদের গরম থেকে রক্ষা করতেই এই প্রয়াস নেয়া হয়েছে। যতদিন দাবদাহ অব্যাহত থাকবে ততদিন জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। এছাড়া জেলার প্রতিটি উপজেলায় এই কার্ক্রম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে তীব্র গরমে একটু প্রশান্তি দিতে জেলা প্রশাসনের এমন আয়োজনে খুশি পথচারী ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

;

ময়মনসিংহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ নিহত ২



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহে ত্রিশাল ও ফুলপুর উপজেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন মো: নজরুল ইসলাম দীপক নামে আরও একজন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং ময়মনসিংহ-শেরপুর মহাসড়কের পৃথক পৃথক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ত্রিশাল পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আজহারুল ইসলামের বড় ছেলে মো. শামীম পারভেজ (৩০। তিনি উপজেলা কৃষকলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল। তবে বর্তমানে তিনি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন। অপরদিকে ফুলপুর উপজেলার ইমাদপুর গ্রামের মৃত ইব্রাহীম শেখের ছেলে মো. সুরুজ আলী (৭০) ট্রাকের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন।

ত্রিশাল থানার উপপরিদর্শক (এস.আই) মো: আশরাফুল ইসলাম দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ময়মনসিংহের বাইপাস এলাকায় নিজের ফিসারির পাঙ্গাস মাছ বিক্রি করে প্রাইভেটকারযোগে ময়মনসিংহ থেকে ত্রিশালের নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন যুবলীগ নেতা শামীম ও নজরুল ইসলাম দীপক। এ সময় তাদের বহনকারী প্রাইভেটকারটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলার নুরুর দোকান নামকস্থানে আসতেই হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খাদে পড়ে গিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে ধাক্কা লাগে। এতে প্রাইভেটকারটিতে আগুন ধরে গেলে যুবলীগ নেতা শামীম পারভেজ (৩৫) ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় তার সাথে থাকা মো. নজরুল ইসলাম দীপক নামে আরও একজন গুরুতর আহত হন। গুরুতর আহত নজরুল ইসলাম দীপক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের পরিবার বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহের আবেদন করলে মরদেহটি হস্তান্তর করা হয়।

অপরদিকে ময়মনসিংহের ফুলপুরে ফজরের নামাজ পড়তে ঘর থেকে বের হয়ে ট্রাক চাপায় মো. সুরুজ আলী (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুবুর রহমান।

তিনি জানান, নিহত সুরুজ আলী ফজরের নামাজ পড়তে বের হয়ে সড়কে আসলে ময়মনসিংহ-শেরপুর মহাসড়কের ইমাদপুর নামকস্থানে ময়মনসিংহ থেকে আসা একটি বেপরোয়া গতির ট্রাক হঠাৎ তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যায়।

এ ঘটনায় নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

;

রাঙামাটিতে হঠাৎ ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে অতিষ্ঠ গ্রাহক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ভুতুড়ে বিলে জর্জরিত রাঙামাটির ইসলামপুরবাসী। এক মাসের বিল ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৭০ হাজার টাকার বেশি এসেছে কারো কারো। কাপ্তাই হ্রদের ওপারে বসবাস করা হতদরিদ্র খেটে খাওয়া কয়েকশ পরিবারের বিদ্যুৎ বিলে এমন তুঘলকি কাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন গ্রাহকেরা।

রাঙামাটি শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামপুরে প্রায় দু’শতাধিক অসহায় দিনমজুর পরিবারের বসবাস, যাদের শতকরা ৯৯ ভাগই দিন এনে দিন খেয়ে সংসার চালাতে হয়।

এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে বাড়তি ভুতুড়ে বিল তাদের নাস্তানাবুদ করে ফেলেছে। যেখানে তাদের মাসের বিদ্যুৎ বিল আসে ৫শ থেকে ৭শ টাকা, সেখানে ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৭০ হাজার টাকার বিল করেছে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি মাসের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছেন তারা। তাদের কোনো বকেয়া বিল নেই। প্রতি মাসে সাধারণত তাদের বিদ্যুৎ বিল আসে ২শ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা। কিন্তু হঠাৎ করে এমন ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে তাদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। তাদের প্রশ্ন, নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের পরেও কেন এমন বিদ্যুৎ বিল করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ! এমন বিদ্যুৎ বিলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অধিকাংশ গ্রাহকেরই দুই থেকে পাঁচ গুণ বেশি বিল করা হয়েছে। বিল কপিতে ব্যবহৃত ইউনিটের কলাম শূন্য থাকলেও পরিশোধের কলামে বিরাট অংকের টাকা বসিয়ে বিল সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিকার চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন বলেও অনেক গ্রাহক সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মান্নান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি দিনমজুরের কাজ করি। এর আগে প্রতিমাসে আমার বাসায় একটি মিটারে ৫ থেকে ৭শ টাকা বিল আসতো। কিন্তু এখন আমাকে ১১ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দিয়েছে। এখন পরিবার নিয়ে খেয়েপড়ে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় এতগুলো টাকার বিল আমার জন্য চরম কষ্টকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে’।

অপর এক বাসিন্দা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমি মানুষের বাসায় কাজ করে সংসার চালাই। আমাকে বিল দিয়েছে সাড়ে ২৪ হাজার টাকা। অথচ আমার বিল হতো ৮শ থেকে এক হাজার টাকা। এই বিল কীভাবে দেবো আমি’!

শওকত আলী নামের একজন বলেন, আমার বিল হতো ১ হাজার ৫শ টাকা। কিন্তু আমাকে বিল দিয়েছে ৫৭ হাজার টাকা। এই টাকা পরিশোধ করা কোনোমতেই সম্ভব নয়। আমি এমনিতেই অসুস্থ মানুষ। এই সময়ে এতগুলো টাকার বিল দিয়ে আমার ওপর জুলুম করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এভাবে অনেক গ্রাহককে ভুতুড়ে বিল দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। নানা ঝক্কি-ঝামেলার ভয়ে অনেকেই ভুতুড়ে বিল পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন’!

এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মচারী জানিয়েছেন, মিটার রিডাররা গ্রাহকের মিটার না দেখে বিল করায় এবং ‘সিস্টেম লস’ সমন্বয় করতে বাড়তি বিল করছেন। গ্রাহকেরা অভিযোগ করলে অনেক ক্ষেত্রে বিল কমিয়ে দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাহককে আবার বাড়তি বিল পরিশোধ করতে হয়। এতে করে সাধারণ গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, নতুন প্রিপেইড মিটার লাগানোর কারণে পুরনো মিটারের যে রেটিং বকেয়া রয়েছে, তা একসঙ্গে বিল আকার তাদের দেওয়া হয়েছে।

রেটিং বকেয়া থাকার কারণ জানতে চাইলে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জালাল উদ্দিন বলেন, ‘হয়ত বিদ্যুৎ বিল করার সময় বিলে কম রেটিং তোলা হয়েছে, যার কারণে দীর্ঘদিনের রেটিং জমা হয়ে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে যারা এই পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল একসঙ্গে পরিশোধ করতে পারবেন না, তাদের কয়েক কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ দেওয়া হবে’।

;