চল্লিশ বছর ধরে দই বিক্রি করে সংসার চালান সঞ্জিত
কাঁধে বাঁশের ফলা, দুই পাশে ঝুপড়ি দুটি। গ্রামের মেঠো পথ ধরে হেঁটে চলেছেন এক বৃদ্ধ। ওই দই লাগবো নি দই বলে হাঁকডাক দিয়ে চলেছেন তিনি। ছোট ছেলেমেয়েরা দই ওয়ালা এসেছে বলে পেছনে ছুটতে থাকে। এভাবেই চল্লিশ বছর ধরে এই পেশা দিয়ে সংসার চালাচ্ছেন সঞ্জিত ঘোষ (৬০)।
তিনি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ফেরি করে দই বিক্রি করেন। চল্লিশ বছর ধরে এই পেশা নিয়ে আছেন তিনি৷ গ্রামের মানুষের কাছে দই সঞ্জিত হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
সঞ্জিতের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কটিয়াদী পৌর এলাকার পশ্চিমপাড়া এলাকায় তাদের বাড়ি। বংশ পরম্পরায় এই পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বাবা-দাদারা। বয়স বাড়লেও কাজের প্রতি মনোযোগী তিনি। শরীরের ঘাম ঝাড়ানো পরিশ্রম তাদের প্রতিদিনের সঙ্গী। সকাল থেকে তিনশো থেকে চারশো দই নিয়ে বের হন। বিকেলের আগেই তা বিক্রি হয়ে যায়। মূল ক্রেতা হচ্ছে গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েরা। এছাড়াও সববয়সী মানুষ এই দই নিয়ে থাকেন।
সঞ্জিত ঘোষ আরও বলেন, এই দইয়ে কোনো ভেজাল নেই। আমি নিজের হাতে দই তৈরি করি৷ গরমে এই দই শরীরে জন্য খুবই উপকারী। হাজার টাকার মতো দই বিক্রি করি। এ টাকা দিয়েই সংসার চালাই। দই তৈরি আমাদের বংশের পেশা৷ প্রতি গ্লাস দই ২০ টাকা করে বিক্রি করি। কোনোরকম মান ঠিক রেখে ব্যবসা করে যাচ্ছি৷
খুলনায় চালের মিলে অভিযান, জরিমানা আদায়
ওজনে কারচুপি, উৎপাদন তারিখ ও মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ না থাকা এবং প্লাস্টিক বস্তা ব্যবহার করার অপরাধে খুলনার কাজী সোবহান অটো রাইস মিল-কে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে খুলনার রূপসা উপজেলার জাবুসা অটোরাইস মিলকে এ জরিমানা আরোপ করে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের খুলনা বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়। একই সাথে এ প্রতিষ্ঠানকে চালের বস্তার গায়ে মূল্য লিখতে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
জানা যায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের খুলনা বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয় বৃহস্পতিবার খুলনার রূপসা থানার জাবুসা এলাকায় তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে ওজনে কারচুপি, উৎপাদন তারিখ ও মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ না থাকা এবং প্লাস্টিক বস্তা ব্যবহার করার অপরাধে কাজী সোবহান অটো রাইস মিলকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। অভিযানকালে জাবুসা অটোরাইস মিলকে চালের বস্তায় ধানের জাত ও নির্ধারিত মূল্য উল্লেখ করার ব্যাপারে সতর্ক করা হয় ও পূর্বে উৎপাদনকৃত পণ্যে ধানের জাত ও মূল্য উল্লেখ করার জন্য সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়।
এসময় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী, চাল, ঔষধ, আলু, দেশি পেঁয়াজ ও ডিমের বাজার দর ও ক্রয় ভাউচার যাচাই করা হয় এবং সকল ব্যবসায়ীকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রির নির্দেশনা দেয়া হয়।
তদারকিকালে সরকার নির্ধারিত মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয় এবং কেউ সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি মূল্য নিলে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেওয় হয়।
খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ সেলিম এর নেতৃত্বে অভিযানে উপস্থিত ছিলেন- খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের অন্যান্য সদস্য ও পুলিশ সদস্যরা। অভিযান চলাকালে ব্যবসায়ীদেরকে সচেতন করার পাশাপাশি বাধ্যতামূলকভাবে মূল্য তালিকা দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন ও ক্রয়-বিক্রয় ভাউচার সংরক্ষণ এবং নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি করার নির্দেশনা দেয়া হয়।
উজিরপুরে অন্তঃসত্তা গৃহবধূ ও শাশুড়িকে গৃহবন্দি করে রাখার অভিযোগ
বরিশালের উজিরপুরে ছয় মাসের অন্তঃসত্তা এক গৃহবধূ ও তার শাশুড়িকে গত ১৬ দিন ধরে একটি ঘরের মধ্যে গৃহবন্দি করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই গৃহবধূর বাবা জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার ধামুরা বন্দর এলাকার।
আগৈলঝাড়া উপজেলা মোল্লাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হরিশচন্দ্র সরকার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার মেয়ে শিল্পী রানী ঢালী (২৭) ও তার স্বামী একই গ্রামের সুবল চন্দ্র ঢালী চার বছর ধরে উজিরপুরের ধামুরা বন্দরে মজিবুর রহমান হাওলাদারের ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করে আসছে। সেখানে বসবাস করার সুবাদে তার জামাতা অমৃত ফুড প্রোডাক্টসসহ বিভিন্ন কোম্পানির মালামাল সাব-এজেন্ট হিসেবে বিক্রি করেন।
তিনি অভিযোগে জানান, গত ২ এপ্রিল থেকে রহস্যজনকভাবে তার জামাতা সুবলচন্দ্র ঢালীর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। খবর পেয়ে তিনি (হরিশ) জামাইয়ের বাসায় যান।
এসময় তিনি দেখতে পান বাড়ির মালিক মজিবুর রহমান তার মেয়ে শিল্পী ও তার শাশুড়িকে ঘরের মধ্যে গৃহবন্দি করে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন। তারপর তিনি বিভিন্নজনের মাধ্যমে বাড়ির মালিক মজিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়া হয়।
উপায়ান্তর না পেয়ে হরিশচন্দ্র জাতীয় সেবা ৯৯৯ ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে পুলিশকে বিষয়টি জানান। এরপর ১৭ এপ্রিল পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও রহস্যজনক কারণে গৃহবন্দি মেয়ে শিল্পী রানী ও তার শাশুড়িকে উদ্ধার না করে চলে আসে তারা।
অসহায় হরিশচন্দ্র সরকার তার ছয় মাসের অন্তঃসত্তা মেয়ে শিল্পী রানী ঢালী ও তার শাশুড়ি শেফালী রানী সরকারকে গৃহবন্দি থেকে মুক্ত করতে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেন। অভিযোগ পেয়ে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার।
এ বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরিশালে মহাসড়কে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনের অভিযান
ঈদের যাত্রা বরিশাল জেলার মহাসড়কে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন নিশ্চিত করতে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে বরিশালের জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের নিরবচ্ছিন্ন ভাংগা-কুয়াকাটা মহাসড়কের বরিশাল জেলার গৌরনদী, উজিরপুর, বাবুগঞ্জ, বরিশাল সদর ও বাকেরগঞ্জ উপজেলায় অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণসহ যাত্রী ও সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোবাইল কোর্ট অভিযানের অংশ হিসেবে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ অভিযান পরিচালনা করেন।
এ সময় তারা স্পিডোমিটার দিয়ে গাড়ির গতিসীমা পরীক্ষা করেন। দূরপাল্লার গাড়িগুলোকে মহাসড়কে গতিসীমা মেনে চলতে সতর্ক করা হয়। এ সময় রুটপারমিট বিহীন গাড়ি, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় প্রভৃতি অপরাধে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর বিধান মোতাবেক ১৮ টি মামলায় ২৯ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। যাত্রী ও সড়ক নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসন বরিশালের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।