ভোটের চূড়ান্ত মহারণে সিলেট বিভাগের ১১৪ যোদ্ধা



নূর আহমদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ২০ দিন বাকি। এ নির্বাচনে ভোটের মহারণে সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনে লড়বেন ১১৪ প্রার্থী। মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের বাইরেও একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন এ বিভাগে।

সোমবার (১০ ডিসেম্বর) প্রতীক বরাদ্দের পরপরই শুরু হবে প্রচারণা। ১০ বছর পর সিলেটে ‘নৌকা’ ও ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের উম্মাদনায় মাতবে ভোটাররা।

সিলেট জেলার ছয়টি আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী যারা:

সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বিএনপির খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, জাতীয় পার্টির মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আলহাজ্ব মাওলানা নাসির উদ্দিন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির এনপিপির ইউসুফ আহমদ, বাংলাদেশের বিপ্লবি ওয়ার্কাস পার্টির উজ্জল রায়, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের প্রনব জ্যোতি পাল, ইসলামী ঐক্যজোট (আইওজে) মুহাম্মদ ফয়জুল হক, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মোঃ রেদওয়ানুল হক চৌধুরী।

সিলেট-২ আসনে জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরী, বিএনপির তাহসীনা রুশদীর লুনা, খেলাফত মজলিসের মুহাম্মদ মুনতাছির আলী, গণ ফোরামে মুকাব্বির খান, ইসলামী আন্দোলনের মো. আমির উদ্দিন, এনপিপির মনোয়ার হোসাইন ও বিএনএফ এর মোশাহিদ খান।

সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, বিএনপির আলহাজ্ব শফি আহমদ চৌধুরী, জাতীয় পার্টির উসমান আলী, খেলাফত মজলিসের মো. দিলওয়ার হোসাইন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাওলানা আতিকুর রহমান ও ইসলামী আন্দোলনের এম এ মতিন বাদশা।

সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদ, বিএনপির দিলদার হোসেন সেলিম, জাতীয় পার্টি আহমেদ তাজ উদ্দিন তাজ রহমান, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির মনোজ কুমান সেন ও ইসলামী আন্দোলনের জিল্লুর রহমান।

সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের হাফিজ আহমদ মজুমদার, জাতীয় পার্টির আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, গণফোরামের বাহার উদ্দিন আল রাজী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের শহীদ আহমদ চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলনের মো. নুরুল আমিন, ইসলামী ঐক্যজোটের এম এ মতিন চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়জুল মুনির চৌধুরী।

সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিএনপির ফয়সল আহমদ চৌধুরী, বিকল্পধারার শমসের মবিন চৌধুরী ও ইসলামী আন্দোলনের মো. আজমল হোসেন।

সুনামগঞ্জের পাঁচটি আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী যারা:

সুনামগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, বিএনপির নজির হোসেন, জাকের পার্টির আমান উল্লাহ আমান, ইসলামী আন্দোলনের ফখর উদ্দিন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের বদরুদ্দোজা সুজা।

সুনামগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের জয়া সেনগুপ্তা, বিএনপির নাছির চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নিরঞ্জন দাশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মাহমুদ হাসান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আব্দুল হাই এবং গণতন্ত্রী পার্টির গুলজার আহমদ। এই আসনে মোট প্রার্থী ৬ জন।

সুনামগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের এম এ মান্নান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের এডভোকেট শাহীনুর পাশা চৌধুরী, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির মোঃ মাহফুজুর রহমান খালেদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মোঃ মুহিবুল হক আজাদ, জাকের পার্টির মো. শাহজাহান চৌধুরী ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সৈয়দ শাহ মোবাশ্বির আলী।

সুনামগঞ্জ -৪ আসনে বিএনপির মো. ফজলুল হক আসপিয়া, জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মো. আজিজুল হক, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের আল হেলাল মো. ইকবাল মাহমুদ, ইসলাম আন্দোলন বাংলাদেশের তানভীর আহমদ তাসলিম, ম্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুজ্জামান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি এনপিপির মো. দিলোয়ার।

সুনামগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মুহিবুর রহমান মানিক, বিএনপির মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মো. আব্দুল মজিদ, গণ ফোরামের আইয়ুব করম আলী, খেলাফত মজলিসের মো. শফিক উদ্দিন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ন্যাপ এর মো. আব্দুল ওয়াদুদ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট বিএনএফ’র মো. আশরাফ হোসেন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. হোসাইন আল হারুন প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন।

হবিগঞ্জের চারটি আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী যারা:

হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে ড. রেজা কিবরিয়া, গণফোরাম (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট), শেখ সুজাত মিয়া (বিএনপি), গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ (আওয়ামী লীগ), আতিকুর রহমান আতিক (জাতীয় পার্টি), চৌধুরী ফয়ছল শোয়েব (বাসদ), জুবায়ের আহমদ (ইসলামিক ফ্রন্ট)।

হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে মো. আব্দুল মজিদ খান (আওয়ামী লীগ), ডা. আবু মনসুর সাখাওয়াত হাসান জীবন (বিএনপি), শংকর পাল (জাপা), মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ, খেলাফত মজলিশ (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট), এজে মাসউদ হাসান (ইসলামী আন্দোলন চরমোনাইপীর), আফসার আহমেদ রূপক (স্বতন্ত্র) ও পরেশ চন্দ্র দাশ (এনপিপি)।

হবিগঞ্জ-৩ (সদর-শায়েস্তাগঞ্জ-লাখাই) আসনে অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপি (আওয়ামী লীগ), আলহাজ্ব জি কে গউছ (বিএনপি), মো. আতিকুর রহমান আতিক (জাপা), পীযুষ চক্রবর্তী (সিপিবি), মহিব উদ্দিন আহমেদ সোহেল (ইসলামী আন্দোলন চরমোনাই),

হবিগঞ্জ-৪ আসনে (মাধবপুর-চুনারুঘাট) অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী এমপি (আওয়ামী লীগ), সৈয়দ মো. ফয়ছল (বিএনপি), আহমদ আব্দুল কাদের (খেলাফত মজলিশ (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) ও সোলায়মান খান রব্বানী (ইসলামিক ফ্রন্ট) এবং শেখ শামসুল আলম।

এছাড়া মৌলভীবাজারের চারটি আসনে চূড়ান্ত ভোট যুদ্ধে লড়বেন ১৯ জন প্রার্থী। ২৪ জন বৈধ প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। সর্বশেষ ১৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন।

   

ফরিদপুরে ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফরিদপুরের মধুখালীর বালিয়াকান্দি পঞ্চপল্লীর কালি মন্দিরে আগুনকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে ফরিদপুর সদরসহ মধুখালী উপজেলার বালিয়াকান্দি পঞ্চপল্লীর নিকটে এবং বাঘাটে বাজার এলাকায় যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে টহল পরিচালনা করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।

তিনি জানান, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটসহ যৌথ বাহিনীর সঙ্গে বিজিবির টহলের পাশাপাশি গ্রাম পুলিশ অবস্থান করছে।

এর আগে সকালে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এর ফলে ওই এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। পরে দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

জানা যায়, পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার প্রতিবাদে মধুখালী রেলগেটে মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়। স্থানীয় সর্বসাধারণের ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচি পালনে সেখানে সমবেত হয় পাঁচ শতাধিক জনতা। আনুমানিক আধা ঘণ্টা স্থায়ী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে বেলা ১১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা মধুখালীর ঈদগাঁ ময়দানে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। পরে মিছিলটি মহাসড়কে উঠে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ধরে কামারখালী সেতুর দিকে এগোতে থাকে। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে বিক্ষোভকারীরা খণ্ড খণ্ড হয়ে মিছিল করতে থাকে। একাধিক ভাগে বিভক্ত বিক্ষোভকারী মালেকা চক্ষু হাসপাতালের সামনে, নওয়াপাড়ার মোড়, মাঝিবাড়ি ও বাগাটের ঘোষঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়।

বাগাটের ঘোষঘাটে বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি এনে অবরোধ করে এবং সড়কের মাঝে গাছের গুঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। নওয়াপাড়ার মোড়ে একটি ইটভর্তি ট্রাক সড়কের মাঝখানে আড়াআড়িভাবে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে। এতে জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং একপর্যায়ে পুলিশের দিকে ইট ছুড়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই জায়গায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিক্ষোভ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাদের ওপর পুলিশের গুলি ও হামলার প্রতিবাদ জানান। জেলা প্রশাসক এ ঘটনার তদন্ত হবে বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা জেলা প্রশাসকের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিক্ষোভকারীরা জানায়, পুলিশের হামলায় তাদের চারজন আহত হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে এবং বাকি একজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ এমদাদ হুসাইন বলেন, কোথাও বুঝিয়ে এবং কোথাও শক্তি প্রয়োগ করে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা পর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহত বা জানমালের ক্ষতিসাধনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

;

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: ১১ বছরেও শোক কাটেনি স্বজনদের



রাজু আহম্মেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: ১১ বছরেও শোক কাটেনি স্বজনদের

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: ১১ বছরেও শোক কাটেনি স্বজনদের

  • Font increase
  • Font Decrease

 

যশোর জেলার ঝিকরগাছা এলাকার রাহেনা খাতুন। তার মেয়ে মুক্তা আক্তার ২০১০ সালে বাবা মায়ের অভাবের সংসারের হাল ধরতে চাকরি নিয়েছিলেন রানা প্লাজার আট তলার গার্মেন্টসে। চাকরিতে যোগদানের পর মায়ের সংসারের সব খরচ চালাতেন তিনি। দুঃখ দুর্দশার জীবন থেকে পরিবারে কিছুটা স্বস্তির দেখা মিলছিলো মুক্তার আয়ের টাকায়। তবে সে সুখ টিকেনি। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে নিহত হন মুক্তা। নিঃস্ব হয়ে পড়ে মুক্তার মা রাহেনা খাতুন।

মেয়ে হারানো ১১ বছরেও শোক কাটেনি অসহায় এই মায়ের। বুকভরা আর্তনাদ নিয়ে সাভার এসেছেন ষাটোর্ধ্ব রাহেনা খাতুন। মেয়ে হারানোর বেদনায় কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন তিনি।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে কথা হয় মুক্তার মা রাহেনা খাতুনের সাথে। মেয়ের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, অভাবের সংসারে হাল ধরবে। তাই এসেছিল ঢাকায়। ১৮ বছর বয়স তখন মুক্তার। আমাকে বিকাশে টাকা পাঠাতো। গাড়িতে টাকা পাঠাতো। যখন চাইতাম ৫০০, ৮০০ টাকা দিত। সেই মেয়ে আমার ডাকে না। কল দেয় না। জোর করে আমার মেয়েকে মেরে ফেলছে মালিক। মেয়ের ছবি খুলতে পারি না।  বুক ফেটে যায়। মেয়ের অস্তিত্ব পাব সে আশায় আসি প্রতি বছর মেয়েকে তো পাই না।


এদিকে একি ট্র্যাজেডিতে বড় ছেলে হারিয়ে শূন্যতায় ধুকে মরছেন জামালপুর মেস্টা ইউনিয়নের শিমল তলি এলাকার খুরশিদা বেগম। বাবার মৃত্যুর পর মায়ের দুঃখ সইতে না পেরে খুরশদার বড় ছেলে আল আমিন শান্ত কাজের জন্য এসেছিল ঢাকায়। কোথাও কোনো কাজ না পেয়ে আল আমিন কাজ নিয়েছিলো রানা প্লাজার গার্মেন্টসে। তবে ছেলের ইনকামের টাকার সৌভাগ্যই কাল হয়েছিলো খুরশিদার জীবনে। মায়ের কষ্ট মুছতে এসে পৃথিবী থেকে নিজেই হারিয়ে গেছেন মা পাগল ছেলে।

খুরশিদা বেগম বলেন, আজও আমার চোখে আমার ছেলে ভাসে। পন্স স্যান্ডেল পরে হেঁটে আসে। আম্মু আম্মু বলে ডাকে। আমার ছেলে আমাকে কল দিত বলত মা খেয়ে নাও। আমি খাব না তুমি না খেলে। তুমি তো আমার সব আম্মু। তুমি নিজের খেয়াল রাখবা আম্মু। এখন আর আমার ছেলে ডাকে না।

খুরশিদা আরও বলেন, আমার পাগল ছেলে মায়ের ঋণ শোধ করতে চাইছিলো। মাকে ভালো রাখবে তাই ঢাকা আসছিলো। আমিও ছেলের কামাই খেতে চাইছিলাম। সে আমার প্রতি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেই চলে গেলো।


রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে খুরশিদা ও রাহেনা খাতুনের সন্তান ও প্রিয়জন হারানোর মতো এমন করুণ গল্প আছে ১১৭৫টি পরিবারের। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভার বাস স্ট্যান্ডের পাশেই নির্মিত রানা প্লাজা নামের বহুতল ভবনটি ধসে পড়ে। সে সময় ভবনটির নিজ তলায় বিপনীবিতান ও ৮ম তলা পর্যন্ত ছিল পোষাক কারখানা। পোষাক কারখানায় প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত ছিল। তাদের মধ্যে ১১৭৫ নিহত হন। এখনো ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে আতঙ্ক নিয়ে বেঁচে আছে প্রায় ২ হাজারের বেশি মানুষ।

নিহতের স্বজন ও আহতদের অভিযোগ রানা প্লাজার ট্র্যাজেডির এত বছরেও পূরণ হয়নি ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি। আশ্বাসের বিশ্বাসে ১১ বছর কেটে গেলেও শাস্তি হয় নি রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে দোষী ব্যক্তিদের। বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এই দুর্ঘটনায় আদায় হয়নি শ্রমিকের ন্যায্য দাবিও। ফলে হতাশা ও ক্ষোভ নিয়েই বছরের পর পর স্বজন হারার ব্যথা নিয়ে চলছে পরিবারগুলো।

এদিকে শ্রমিক নেতারা বলছেন, সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই এখনও শ্রমিকরা ন্যায্য পাওনা বুঝে পায়নি। বিশ্ব যেখানে সাক্ষী। সেখানে শ্রমিকের সাক্ষা গ্রহণের নামে না আ অজুহাতে কার্যকর হচ্ছে দোষীদের বিচার। ফলে ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ ও দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার দাবি তাদের।

;

যশোরে প্রেমিকাকে শ্বাসরোধে হত্যা, প্রেমিক আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

যশোরে প্রেমিকাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেও শেষ রক্ষা হয়নি প্রেমিকের। অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

এদিকে, বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে যশোর সদর উপজেলার বুকভরা বাওড়ের পাশ থেকে প্রেমিকা মিতুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সকালে যশোর সদর উপজেলার বুকভরা বাওড়ের পাশে শাড়িপরা এক নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এসময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পড়ে ছিল। তারা খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে ডিবি’র (ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ) এসআই (উপপরিদর্শক) খান মাইদুল ইসলাম রাজীব জানান, নিহত মিতুর বাড়ি সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায়। এক সময় তিনি মুসলমান ছিলেন। তখন তার নাম ছিল খাদিজা। পরে ধর্মান্তরিত হয়ে তিনি হিন্দুধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি তার এলাকার এক যুবকের সঙ্গে যশোরে ঘুরতে আসেন। একপর্যায়ে ওই যুবক তাকে ওই শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দাদের একটি দল ওই যুবককে আটক করে। ওই যুবকের নাম ও ঠিকানা চানতে চাইলে মাইদুল বলেন, এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে প্রেসব্রিফিং করে হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এদিকে, হালসা গ্রামের একটি সূত্র জানায়, আটক প্রেমিকের নাম মৃন্ময়। তিনিও পাটকেলঘাটার বাসিন্দা। বুধবার সকাল ১০টায় হালসা গ্রাম থেকে ডিবির একটি দল মৃন্ময়কে আটক করে।

 

;

নওগাঁয় ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় মাদ্রাসা শিক্ষকের জেল-জরিমানা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
নওগাঁয় ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় মাদ্রাসা শিক্ষকের জেল-জরিমানা

নওগাঁয় ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় মাদ্রাসা শিক্ষকের জেল-জরিমানা

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ জেলার বদলগাছী থানার উত্তর পাকুরীয়া গ্রামের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় মাদ্রাসা শিক্ষককে দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। এ রায় প্রদান করেছেন নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার। জরিমানার অর্থ ধর্ষণ চেষ্টার শিকার ছাত্রীকে প্রদানের নির্দেশ দেন বিচারক। বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৯ মে সকাল ছয়টার সময় নয় বছরের ছাত্রী একই গ্রামের আরবি শিক্ষক আবুল হাসান (২৫) এর বাড়িতে আরবি পড়তে যায়। সে সময় অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরা না আসায় ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ছাত্রীটির মা বদলগাছী থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আদালত আট জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বুধবার রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন। আসামিকে দশ বছর সশ্রম কারাদনণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় পড়ে শুনানো হয় এবং আসামিকে সাজা পরোয়ানা মূলে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ কৌশলী এ্যাডভোকেট আজিজুল হক ও আসামি পক্ষে এ্যাডভোকেট মামুনূর রশিদ মামলা পরিচালনা করেন। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আসামি পক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।

;